×

জাতীয়

ফাঁসির সেলে ১০ মাসের শিশু, তদন্তের নির্দেশ হাইকোর্টের

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৭ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৭:৫৬ পিএম

ফাঁসির সেলে ১০ মাসের শিশু, তদন্তের নির্দেশ হাইকোর্টের

ছবি: সংগৃহীত

হবিগঞ্জে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের একটি মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত মায়ের সঙ্গে ১০ মাসের শিশু মাহিদা থাকার ঘটনা তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। শিশুটি ফাঁসির সেলে কেমন অবস্থায় আছে, শিশুকে কি সুবিধা দেয়া হয়েছে, এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন আগামী ১৮ জানুয়ারির মধ্যে দাখিল করতে বলা হয়েছে। আইজি প্রিজন্স ও হবিগঞ্জের সিনিয়র জেল সুপারকে এ আদেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে।

রবিবার (১৭ ডিসেম্বর) বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট তানভীর আহমেদ।

এদিকে গত ৩০ নভেম্বর একটি জাতীয় দৈনিকে ‘ফাঁসির সেলে কেমন আছে ১০ মাসের মাহিদা’শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনটি সংযুক্ত করে হাইকোর্টে রিট করা হয়। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, হবিগঞ্জে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের একটি মামলায় মায়ের মৃত্যুদণ্ডের রায় হওয়ায় মায়ের সঙ্গেই ফাঁসির সেলে বন্দি আছে ১০ মাসের শিশু মাহিদা।

এক লাখ টাকা যৌতুকের জন্য নির্যাতন করে হত্যার অভিযোগে নিহত গৃহবধূ আয়েশা আক্তারের বাবা আব্দুস সাত্তার বাদী হয়ে ২০১৬ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর হবিগঞ্জের চুনারুঘাট থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।

মামলায় আসামিরা হলেন চুনারুঘাট থানার সাদেকপুর গ্রামের নিহত আয়েশা আক্তারের স্বামী রাসেল মিয়া, রাসেল মিয়ার মা তাহেরা খাতুন, ভাই কাউছার মিয়া, বোন রুজি আক্তার ও হুছনা আক্তার। মামলায় পাঁচ আসামির সবাইকে দোষী সাব্যস্ত করে গত ২৬ অক্টোবর মৃত্যুদণ্ডের রায় দেয় হবিগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২। আসামি কাউছার মিয়া পলাতক। অন্য আসামিরা রায় ঘোষণার সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

রায় ঘোষণার দিন মা হুছনা আক্তারের সঙ্গেই আদালতে এসেছিল ১০ মাসের শিশু মাহিদা। রায় ঘোষণার পর মায়ের সঙ্গে মাহিদার জায়গা হয় হবিগঞ্জ কারাগারের ফাঁসির সেলে। হত্যাকাণ্ডের সময় হুছনা কলেজে লেখাপড়া করত। প্রায় দুই বছর আগে একই গ্রামের মিজানুর রহমানের সঙ্গে তার বিয়ে হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, চঞ্চল ও পুরো বাড়ি মাতিয়ে রাখা শিশু মাহিদা দিন দিন নুইয়ে যাচ্ছে। মাহিদার স্বজনরা জানিয়েছেন প্রায় একমাসের ব্যবধানে মাহিদার ওজন কমেছে প্রায় ২ কেজি। সদ্য দাঁত উঠতে শুরু করা মাহিদাকে কোনো ফলমূল পিষিয়ে খাওয়ানোর কোনো সুযোগ নেই। অন্য কোনো খাবারেরও সুযোগ নেই। একটি নির্জন কক্ষে দিনে রাতে সমানতালে আক্রমণ করে থাকে মশা। মশারি বা কয়েল ব্যবহারেরও কোনো অনুমতি নেই কারাগারে। ফাঁসির সেলের অবস্থান অনুযায়ী তাতে কোনোভাবেই একজন শিশু পরিপূর্ণভাবে বেড়ে উঠবে না, তার মানসিক বিকাশ নষ্ট হয়ে যাবে, কনফিডেন্স নষ্ট হয়ে যাবে, দীর্ঘদিন ফাঁসির সেলে থাকার কারণে যেকোনো শিশু মানসিকভাবে বিকারগ্রস্ত হয়ে যেতে পারে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App