×

জাতীয়

পদ্মাসেতু দুর্নীতির নামে মিথ্যাচারকারীরা এখনো সক্রিয়

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৯ ডিসেম্বর ২০২৩, ০১:১৬ পিএম

পদ্মাসেতু দুর্নীতির নামে মিথ্যাচারকারীরা এখনো সক্রিয়

রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন বলেছেন, দুদকের প্রতি দেশের মানুষের আস্থা আছে। পদ্মাসেতু দুর্নীতির নামে মিথ্যাচার করেছিলো একটি পক্ষ, সেসময় দুদকের কেউ কেউ দেশকে হেয় করার চেষ্টা করেছিলেন,তারা এখনো দুদকে সক্রিয় আছে।

শনিবার (৯ ডিসেম্বর) আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবসের দুদক আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।

দুর্নীতিবিরোধী দিবসে সকাল ১১টায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালা অডিটরিয়ামে দুর্নীতি দমন ও প্রতিরোধে করণীয় শীর্ষক আলোচনা সভাটি অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান। সভাপতিত্ব করছেন দুদক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মইনউদ্দিন আব্দুল্লাহ। উপস্থিত ছিলেন দুদকের দুই কমিশনারসহ সংস্থাটির সব পর্যায়ের কর্মকর্তাবৃন্দ।

দুর্নীতি শুধু বাংলাদেশের নয়, এটি একটি বৈশ্বিক সমস্যা উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, জাতিসংঘ কর্তৃক ঘোষিত দুর্নীতি বিরোধী সনদ স্বাক্ষরকারী দেশ হিসেবে বাংলাদেশ সবসময়ই দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার। দিবসের এ বছরের প্রতিপাদ্য 'উন্নয়ন, শান্তি ও নিরাপত্তার লক্ষ্যে দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমরা ঐক্যবদ্ধ' অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক ও অর্থবহ হয়েছে বলে আমি মনে করি।

বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে দীর্ঘ নয় মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধ ও সংগ্রামের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জিত হয়। আমাদের সেই স্বাধীনতার লক্ষ্য ছিল রাজনৈতিক স্বাধীনতার পাশাপাশি অর্থনৈতিক মুক্তি। পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে সদ্য স্বাধীন দেশে ফিরে জাতির পিতা যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের অর্থনীতি ও অবকাঠামো পুনর্গঠনের মাধ্যমে অর্থনৈতিক মুক্তির সংগ্রাম শুরু করেছিলেন। ক্ষুধা, দুর্নীতিমুক্ত এবং সুখী-সমৃদ্ধ একটি বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন বঙ্গবন্ধু। দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার, জালিয়াতি, কালোবাজারি ও অর্থপাচারের বিরুদ্ধে জাতির পিতা সবসময় অত্যন্ত সোচ্চার ছিলেন। ১৯৭৫ সালে স্বাধীনতা দিবসের ভাষণে বঙ্গবন্ধু ঘোষণা করেছিলেন- “৭১-এ আমি ঘোষণা করেছিলাম পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে প্রত্যেক ঘরে ঘরে দূর্গ গড়ে তুলতে হবে। আজ ৭৫ সনে আমি আহ্বান জানাই দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রত্যেক ঘরে ঘরে দূর্গ গড়ে তুলতে হবে”। কিন্তু স্বাধীনতা বিরোধী ঘাতক চক্রের হাতে ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট জাতির পিতাসহ তার পরিবারের আপনজনদের নৃশংস হত্যাকান্ডের ফলে আবার রুদ্ধ হয় উন্নয়নের সে অগ্রযাত্রা।

বাংলাদেশের উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির যে পথ বঙ্গবন্ধু দেখিয়ে গেছেন নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে আবারো সেই পথ ধরে এগিয়ে চলছে দেশ। স্বাস্থ্য, শিক্ষা, নারীর ক্ষমতায়নসহ আর্থ-সামাজিক প্রতিটি সূচকে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। বেড়েছে মাথাপিছু আয় ও গড় আয়ুষ্কাল। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে সামিল হয়েছে। নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মাসেতু নির্মিত হয়েছে। নির্মিত হয়েছে মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে। বাস্তবায়িত হয়েছে পায়রা গভীর সমুদ্র বন্দর, কর্ণফুলী বহুমুখী টানেল ও রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মতো মেগা প্রকল্প।

মহাকাশে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপণের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ আজ অভিজাত স্যাটেলাইট ক্লাবের গর্বিত সদস্য। টেকসই উন্নয়নের এ অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকলে ২০৪১ সালের মধ্যেই বাংলাদেশ বিশ্বের বুকে একটি উন্নত, স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে। তবে, দুর্নীতি সেই কাঙ্খিত উন্নয়নের সবচেয়ে বড় বাধা। দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরকারের ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করা গেলে উন্নয়নের অগ্রযাত্রা আরো গতি পাবে।

মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত আমাদের রাষ্ট্রের অন্যতম লক্ষ্য হলো মানবিক, বৈষম্যহীন, দারিদ্রমু্ক্ত, ন্যায়ভিত্তিক ও দুর্নীতিমুক্ত সমাজ বিনির্মাণ। আমাদের পবিত্র সংবিধানও দুর্নীতিকে বারিত করেছে। সংবিধানের ২০(২) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, “রাষ্ট্র এমন অবস্থা সৃষ্টির চেষ্টা করিবেন, যেখানে সাধারণ নীতি হিসাবে কোন ব্যক্তি অনুপার্জিত আয় ভোগ করিতে সমর্থ হইবেন না …”। সংবিধানের এ মর্মকে ধারণ করেই দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ প্রনয়ণ করা হয়েছে এবং প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে স্বাধীন দুর্নীতি দমন কমিশন।

বঙ্গবন্ধু আমৃত্যু দুর্নীতির বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে গেছেন। ১৯৫৬ সালের কোয়ালিশন সরকারে দুর্নীতির বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর দৃঢ় ও আপসহীন অবস্থানের জন্যই তাকে দুর্নীতি দমন বিষয়ক মন্ত্রী করা হয়েছিল। তিনি কখনো দুর্নীতির সাথে আপস করেননি। বঙ্গবন্ধু তার ভাষণে বারবার দুর্নীতির বিরুদ্ধে বলিষ্ঠ অবস্থান ব্যক্ত করেছেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App