×

জাতীয়

'একতরফা' নির্বাচন বয়কটে জনগণকে রাস্তায় নামার আহ্বান পেশাজীবী পরিষদের

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৭ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৪:৫৪ পিএম

'একতরফা' নির্বাচন বয়কটে জনগণকে রাস্তায় নামার আহ্বান পেশাজীবী পরিষদের

ছবি: ভোরের কাগজ

'একতরফা' নির্বাচন বয়কটে জনগণকে রাস্তায় নামার আহ্বান জানিয়েছে সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ। বৃহস্পতিবার (৭ ডিসেম্বর) সকালের দিকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক মানবন্ধন কর্মসূচিতে সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের আহ্বায়ক অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন এই আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ আজকে প্রহসনের নির্বাচন চায় না, সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ প্রহসনের নির্বাচন বয়কট করেছে। আজকে একটি সরকারি ভবন থেকে নির্ধারিত হচ্ছে কে কয়টি আসন পাবে।হায়রে বাংলাদেশ ৫২ বছর আগে যুদ্ধ করা হয়েছিলো গণতন্ত্রের জন্য, মানবাধিকারের জন্য, আইনের শাসনের জন্য, সাম্যে জন্য আজকে তার কি দুরাবস্থা। আজকে জনগণের কোনো দাম নেই। দাম হচ্ছে কতিপয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, কতিপয় প্রতিষ্ঠান আর কতিপয় শাসক শ্রেণীর বাড়িঘর। তারা নির্ধারণ করবে কে এমপি হবে, কে কয়টা সিট পাবে।

জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়ে এই পেশাজীবী নেতা বলেন, বাংলাদেশের মানুষ আজকে আপনারা জেগে উঠুন। এটি শুধু বিএনপি নয়, এটি শুধু সমমনা জোট ও দলের নয়, এটি বাংলাদেশের সকল গণতন্ত্রকামী মানুষের আন্দোলন। জনগণের ভোটাধিকার উদ্ধারের এই আন্দোলনে পেশাজীবীরা একত্রিত হয়েছেন, আপনারা রাস্তায় নেমে আসুন। জনগণ যখন রাস্তায় নেমেছে, জনগণ যখন রক্ত দিতে শিখেছেন, জনগণের রক্ত বৃথা যায় না, অতীত তা বলে না। কাজেই জয় আমাদের সুনিশ্চিত।

জাহিদ বলেন, আগামী-দিনের কর্মসূচিতে আপনারা (পেশাজীবীরা) একইভাবে অংশগ্রহণ করবেন এবং এই সরকার ও রেজিমকে আমাদের বুঝিয়ে দিতে হবে জনগণের ক্ষমতা অসীম। আল্লাহ রাব্বুল আ‘লামীনের পরে জনগণ নির্ধারিত করবে এদেশে কে ক্ষমতাসীন হবে, কে ক্ষমতায় থাকবে, কে ক্ষমতায় থাকবে না।

সুবিচার ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা হবে বাংলাদেশ সামনের দিকে এগিয়ে যাবে, এই প্রত্যাশা করছি। সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের উদ্যোগে মানবাধিকার, ভোটাধিকার ও ন্যায় বিচারের দাবিতে এই মানববন্ধন হয়। এতে শিক্ষক-চিকিৎসক-আইনজীবী-কৃষিবিদসহ বিভিন্ন পেশাজীবীরা অংশ নেন।

সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের আহ্বায়ক বলেন, ‘‘আওয়ামী লীগ করেন তখন আপনি রাজাকারও না, আল-বদরও না… আপনার কোনো মামলা নাই। আর বিরোধী দলের কেউ করেন তাহলে আপনার বিরুদ্ধে মামলা-হামলা, গায়েবি মামলা এবং আপনার জামিন হবে না। তার উৎকৃষ্ট উদাহরণ কয়েকদিন আগে আপনারা দেখেছেন জনৈক আইনজীবী হাজতে যখন ছিলেন, রিমান্ড খেটেছেন, মামলা হয়েছে…. আর তাকে এখন নৌকায় তুলে দেয়া হয়েছে। এই তো বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থা, এই তো আইনের শাসন। আজকে আইনের শাসন ও সুবিচার প্রার্থীরা রাস্তায় পথে পথে ঘুরছে।

প্রধান বিচারপতিসহ সকল বিচারপতি এবং বিচারালয়ের কাছে আমাদের আকুল আবেদন, দেয়ালের লিখন পড়তে শিখুন এবং প্রকৃত নিয়মে সংবিধান মোতাবেক ন্যস্ত দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করুন। কোনো ভয়-ভীতি নয়, জনগণ আপনাদের পাশে আছে, জনগণ পাশে থাকবে, জনগণ ভবিষ্যতে মূল্যায়ন করবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আফম ইউসুফ হায়দার বলেন, ’১৪ ও ’১৮ সালের মতো এবারও একটা প্রহসনের নির্বাচনের পায়তারা করছেন। কিছু লোককে ভুলিয়ে বালিয়ে জনগণ দেখিয়ে আপনি নির্বাচনে আনতে চেয়েছে। আসলে নির্বাচন তো হচ্ছে নাম, ভোট তথা আসন ভাগাভাগির সমঝোতা হচ্ছে।এই নির্বাচন বাংলাদেশের মানুষ করতে দেবে না।

বাংলাদেশের অর্থনীতি বলেন, শিক্ষা ব্যবস্থা বলেন, আইন ব্যবস্থা বলেন, অত্যন্ত খারাপ অবস্থায় আছে। আমি অনুরোধ করব দেশকে আর ধবংসের দিতে নিয়ে যাবেন না। বাংলাদেশ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে উপস্থিত। এই দেশকে রক্ষা করুন। আপনি(শেখ হাসিনা) একজন প্রতিষ্ঠিত রাজনীতিবিদ, আপনি একটানা ১৫ বছর ক্ষমতায় আছেন…. জনগণের প্লাস বুঝেন… এই আন্দোলন বিএনপি তথা কোনো সমমনা দলের আন্দোলন নয়। এটি জনগণের আন্দোলন। জনগণ শুধু তাদের ভোট দেয়ার অধিকারটুকু শুধু চায় আর কিছু নেই।

সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের নেতা ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি রুহুল আমিন গাজীর সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব কাদের গণি চৌধুরীর সঞ্চালনায় এই মানববন্ধনে সাবেক এটর্নি জেনারেল এজে মোহাম্মদ আলী, ইউনাইটেড ল‘ইয়ার্স ফ্রন্টের অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, জিয়া পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুস, ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশনের অধ্যাপক এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক লুতফুর রহমান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শামসুল আলম সেলিম, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম সজল, অ্যাডভোকেট মহসিন মিয়া, অ্যাডভোকেট ওমর ফারুক ফারুকী, ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের অধ্যাপক হারুন আল রশিদ, ডা. জহিরুল ইসলাম শাকিল, ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের রিয়াজুল ইসলাম রিজু, এগ্রিকালচারিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের রাশেদুল হাসান হারুন, ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের এম আবদুল্লাহ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের শহীদুল ইসলাম, জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক জোটের রফিকুল ইসলাম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App