×

জাতীয়

তফসিল বাতিল না হলে গণজাগরণ গণঅভ্যুত্থানে পরিণত হবে

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৪ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৪:০৯ পিএম

তফসিল বাতিল না হলে গণজাগরণ গণঅভ্যুত্থানে পরিণত হবে

ছবি: ভোরের কাগজ

'একতরফা’ নির্বাচনের তফসিল বাতিল না হলে ‘গণজাগরণ গণঅভ্যুত্থানের পরিণত হবে’ বলে হুশিয়ারি দিয়েছে গণতন্ত্র মঞ্চ। বুধবার (৪ ডিসেম্বর) দুপুরে পল্টনে মোড়ে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক এই হুশিয়ারি দেন।

এক দফা তফসিল বাতিলসহ সরকারের পদত্যাগের দাবিতে অষ্টম দফার ধারাবাহিক অবরোধ কর্মসূচি উপলক্ষে বেলা সাড়ে ১১টায় বিজয় নগর-তোপখানা সড়কে মিছিল শেষে পল্টনে মোড়ে এই সংক্ষিপ্ত সমাবেশ হয়্।

তিনি বলেন, সরকারকে বলছি, এখনো সময় আছে এই নির্বাচনী খেলা বন্ধ করুন। ইতিহাস থেকে কেউ কখনো শিক্ষা নেয় না। যদি সোজা পথে না হাঁটেন, জনগণ জেগে উঠেছে... আপনারা ৭ জানুয়ারি পর্যন্ত যেতে পারবেন কি না সন্দেহ আছে। মানুষ রাজপথে দাঁড়াবে, জেগে উঠবে, প্রতিবাদ করবে। প্রতিরোধের টেউ প্রতিদিন এখন শক্তিশালী হবে, গণজাগরণ গণঅভ্যুত্থানের একটি রাস্তা তৈরি করবে। গণতন্ত্র মঞ্চ রাজপথে আছে, রাজপথে আপনাদের সাথে নিয়ে বিজয় অর্জন না হওয়া পর্যন্ত সেই লড়াইটা আমরা চালিয়ে যাবো।

সাইফুল হক বলেন, প্রধান নির্বাচন কমিশনারের অনতিবিলম্বে সরকারকে বলা দেশকে একটা বিপদের মধ্যে দিয়ে কোনোভাবে তারা যেতে পারেন না। আগামী নির্বাচনের পায়তারা গোটা দেশকে, ১৭ কোটি মানুষকে বিপদের মধ্যে ফেলে দেয়, নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব হবে পরিষ্কার করে বলা, এই নির্বাচনের দায় নির্বাচন কমিশনের পক্ষে নেয়া সম্ভব না।সরকারকে আজকেই এই কথাটা পরিষ্কার করে বলে দেয়া দরকার। তারা(ইসি) কি করতে পারে একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে? তারা যেটা করতে পারেনে এরকম একটা সংঘাত-সংঘর্ষের নির্বাচন ও দেশকে বিপদে এবং গৃহযুদ্ধের দিকে ঠেলে দেয়ার দায় না নিয়ে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে দায়িত্ব থেকে তারা(ইসি) সরে যেতে পারে।

আমরা পরিষ্কার করে বলতে চাই, প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ আপনারা হাতে আরো হয়ত একদিন-দুইদিন বা কয়েকদিন সময় আছে, নিজের বিবেকের কাছে প্রশ্ন করেন। দেশকে বিপদাপন্ন করে, সাধারণ জনগণ যেখানে এই নির্বাচনের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে। সকল বিরোধী দল যেখানে এই ভোট ভোট খেলা নির্বাচনের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে , আমরা ছোট কালে দেখেছি বাচ্চারা মিথ্যা মিথ্যা রান্না করে, মিথ্যা মিথ্যা ঘর বানায়, মিথ্যা মিথ্যা-ভাবে তারা বিভিন্ন রান্না-বান্না করে খাবার দেয়। এরকম একটা মিথ্যা মিথ্যা নির্বাচনের দায় আপনারা কেনো নেবেন। এরকম একটা মানুষের ভোটাধিকার নিয়ে এরকম জালিয়াতি কেনো আপনারা আশ্রয় নেবেন।

সেজন্য একটা কথা বলতে চাই, দায়িত্ব আপনারা এভাবে গ্রহণ করতে পারেন। সরকারের ওপর চাপটা তৈরি হতে পারে। আলাপ-আলোচনা করে তারা কখন কিভাবে পদত্যাগ করবেন, নির্বাচনকালীন অন্তর্বতীকালীন সরকার কিভাবে হতে পারে, নির্বাচন কমিশনের এই ভূমিকার মধ্য দিয়ে একটা রাস্তায় তৈরি হতে পারে।

সংক্ষিপ্ত সমাবেশে ‘চোর চোর ভোট চোর, শেখ হাসিনা ভোট চোর’, ‘বাকশালীদের গদিতে আগুন জ্বালাও এক সাথে’ ইত্যাদি শ্লোগান দেয় গণতন্ত্র মঞ্চের নেতা-কর্মীরা। বিএনপি, গণতন্ত্র মঞ্চসহ সমমনা জোটের ডাকা ২৪ ঘণ্টার অবরোধ শেষ হবে বৃহস্পতিবার ভোর ৬টায়। ওই সময় থেকে শুরু হবে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল।

‘একতরফা ভোট প্রতিরোধ করা হবে’

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, শেখ হাসিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতা বের করলেন… এতোই রাজনৈতিক প্রজ্ঞা নিজের দলের প্রার্থীদের বললেন, ডামি প্রার্থী দাঁড়াও, প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা হবে। আর সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী যারা হবে করা বহিষ্কার সবাই হবে না। স্বতন্ত্র করে দেয়ার ব্যাপারে নাকি তারা সাহায্য করবেন। এই হচ্ছে বাংলাদেশের প্রতিদ্বন্দ্বিতার খবর। প্রতিদ্বন্দ্বিতা খুঁজে পাওয়া গেছে, আওয়ামী লীগ ডামি প্রার্থী বানিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে।তামাশারও শেষ আছে। বাংলাদেশে আজকে মনে হয় তামাশার কোনো শেষ নাই। তামাশা, তার চাইতে আরও বড় তামাশা আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক দলটি বাংলাদেশে তামাশার দিক থেকে সবচেয়ে জিজ্ঞাসী, সবচাইতে বলিয়ান হয়ে দাঁড়িয়েছে।

আমরা জনগণকে বলতে চাই, ১৬‘শ কোটি টাকা খরচ করে বাংলাদেশের বর্তমান-ভবিষ্যতকে হুমকির মধ্যে ফেলে এই যে তামাশা করা হচ্ছে এটা কেবল প্রত্যাখান নয়, এইরকম নির্বাচনে কোনো ভোট না দিয়ে একে প্রতিরোধ করে বাংলাদেশকে আজকে বাঁচাতে হবে। এই নির্বাচনকে প্রতিরোধ করবো।

জোনায়েদ সাকির সভাপতিত্বে সমাবেশে নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্না, শহীদুল্লাহ কায়সার, ভাসানী অধিকার পরিষদের শেখ রফিকুল ইসলাম বাবুল, হাবিবুর রহমান রিজু, জেএসডির শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, সিরাজ মিয়া, নাগরিক ঐক্যের রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের ইমরান নূর প্রমুখ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

এছাড়া গণফোরাম-পিপলস পার্টি, গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য, জাতীয়তাবাদী সমমনা দল, ১২ দলীয় জোট, লেবার পার্টি, গণঅধিকার পরিষদ প্রমুখ রাজনৈতিক জোট দলের নেতা-কর্মীরা বিজয় নগর, তোপখানা রোড় ও নয়া পল্টনের সড়কে মিছিল করে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App