×

জাতীয়

ঠাকুরগাঁও হানাদারমুক্ত দিবস আজ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৩ ডিসেম্বর ২০২৩, ১০:৪০ এএম

ঠাকুরগাঁও হানাদারমুক্ত দিবস আজ

ছবি: ইন্টারনেট

আজ ৩ ডিসেম্বর, ঠাকুরগাঁও মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের আজকের দিনে ঠাকুরগাঁওয়ের বীর মুক্তিযোদ্ধারা মরণপণ লড়াই ও প্রতিরোধের মাধ্যমে পরাজিত করে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে। মুক্তিযোদ্ধা ও সর্বস্থরের জনগণ এ দিন ভোরে ঠাকুরগাঁও শহরে প্রবেশ করে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উড়ায়। প্রতিবারের ন্যায় এবারও ৩ ডিসেম্বর ঠাকুরগাঁওয়ে পাকিস্তানি হানাদারমুক্ত দিবস পালনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। ঠাকুরগাঁওয়ের জেলা প্রশাসক মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, ৩ ডিসেম্বর ঠাকুরগাঁও পাকিস্তান হানাদার মুক্ত দিবস। এটি ঠাকুরগাঁওয়ের ঐতিহ্য ও গৌরবের একটি দিন। আমরা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দিবসটি উদযাপনের ব্যবস্থা করেছি। নতুন প্রজন্মের কাছে আমরা মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস তুলে ধরতে চাই। যেন তরুণরা ঠাকুরগাঁওসহ সারা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস সম্পর্কে জানতে পারে। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতের আধারে ঠাকুরগাঁয়েও নিরস্ত্র বাঙালিদের ওপর পাকিস্তানি সেনারাস অতর্কিত আক্রমণ চালায় । নির্বিচারে হত্যা, ধর্ষণ, লুণ্ঠন চালায় হানাদাররা। ১৫ এপ্রিল ঠাকুরগাঁও দখল করে নেয় পাকিস্তানি বাহিনী। এসময় রাজাকার ও আলবদর বাহিনীর সহায়তায় সদর উপজেলার জাটিভাঙ্গা ও রানীশংকৈলে নির্বিচারে মানুষ হত্যা করে। ১৭ এপ্রিল জগন্নাথপুর, গড়েয়া শুখাপনপুকুরী এলাকার ভারতের উদ্দেশ্যে যাত্রাকালে শরণার্থীদের আটক করে একটি দীঘির পাশ দাড় করিয়ে নির্বিচারে গুলি করে। পরবর্ততে এটি খুনির দীঘি নামে পরিচিতি পায়। ২৯ নভেম্বর মিত্র বাহিনীর সাহায্যে মুক্তিযোদ্ধারা পঞ্চগড় থানা দখল করলে পাকিস্তানি সেনারা পিছু হটতে বাধ্য হয়। এসময় তারা ঠাকুরগাঁও থানার ভুল্লীতে ঘাঁটি করে। সেখানে মুক্তিযোদ্ধা ও মিত্র বাহিনী যেন না যেতে পারে সেজন্য বোমা মেরে ভুল্লী ব্রিজটি উড়িয়ে দিয়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয় পাক সেনারা। অদম্য মুক্তিযোদ্ধারা তবুও দমে যায়নি, ১ ডিসেম্বর রাতে ব্রিজ পার হয়ে ওপারে পৌঁছে যায় । সেখানে রাতভর সম্মুখযুদ্ধ চলে পাকিস্তানি সেনাদের বিরুদ্ধে । ২ ডিসেম্বর রাতে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রাণপণ লড়াইয়ের পর শত্রুবাহিনী পিছু হটতে শুরু করে, ৩ ডিসেম্বর হানাদার মুক্ত হয় ঠাকুরগাঁও। সেদিন ভোরে মুক্তিযোদ্ধারা শহরে ঢুকে ফাঁকা গুলি ছোড়ে এবং ‘জয় বাংলা’ শ্লোগানে শহর প্রকম্পিত হয়ে ওঠে। পরে ঠাকুরগাঁও থানায় উত্তোলন করা হয় স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা। তৎকালীন ঠাকুরগাঁও জেলা মুক্তিযোদ্ধা ইউনিট কমান্ডার; বীর মুক্তিযোদ্ধা বদরুদ্দোজা (বদর) বলেন, ১৯৭১ সালের ডিসেম্বরে আমরা পাকিস্তানি বাহিনীর ওপর তীব্র আক্রমণ শুরু করি। প্রচণ্ড আক্রমণের মুখে পলিয়ে যায় পাক সেনারা। ৩ ডিসেম্বর ভোরে মুক্তিযোদ্ধারা শহরে ঢুকে পড়ে এবং ফাকা গুলি ছুড়ে বিজয়ের উল্লাস করে। শত শত মানুষের ‘জয় বাংলা’ ধ্বনিতে পুরো ঠাকুরগাঁও প্রকম্পিত হয়। আমরা সেদিন মানুষের যে ভালোবাসা পেয়েছিলাম সেটি কোনদিনও ভুলতে পারবো না।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App