×

জাতীয়

নির্বাচনের তফসিল বাতিল দাবির প্রতিবাদ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৫ নভেম্বর ২০২৩, ০৪:৪২ পিএম

নির্বাচনের তফসিল বাতিল দাবির প্রতিবাদ

ফাইল ছবি

আসন্ন সংসদ নির্বাচনের তফসিল বাতিলে ১৪১ জন অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তার বিবৃতির তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা ও বিশিষ্টজন। গত শুক্রবার (২৪ নভেম্বর) এক বিবৃতিতে তারা এ প্রতিবাদ জানান।

‘আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল বাতিলের জন্য মহল বিশেষের বিবৃতির প্রতিবাদ’ শিরোনামে অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা ও বিশিষ্টজনের দেয়া প্রতিবাদ লিপিতে বলা হয়েছে, জাতীয় নির্বাচনের তফসিল বাতিলের দাবীতে ১৪১ জন অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তার বিবৃতিটি আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। বিবৃতির বিষয়টি বস্তুনিষ্ঠ নয় এবং এই বিবৃতিতে যেসব তথ্য-উপাত্তের উল্লেখ করা হয়েছে তা উদ্দেশ্য প্রণোদিত, অসত্য ও বিভ্রান্তিকর।

বিবৃতিতে বলা হয়,সম্প্রতি বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে। কমিশন এই তফসিল ঘোষণার পূর্বে কমিশনের সব স্টেকহোল্ডারের সঙ্গে বহুবার আলোচনা করেছে এবং নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোকে কমিশনের সঙ্গে মতবিনিময়ের জন্য একাধিকবার আমন্ত্রণ জানিয়েছে। কমিশনের এই আহবানে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করলেও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) ও সমমনা দলগুলো কমিশনের সঙ্গে আলোচনা করেনি। এমনকি তাদেরকে কমিশন থেকে পৃথকভাবে আমন্ত্রণ জানানো হলেও তারা সে আলোচনায় সাড়া দেয়নি, যা রাজনৈতিক শিষ্টাচার বহির্ভূত।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সরকারের পদত্যাগের আন্দোলনের নামে অগ্নিসংযোগ, সন্ত্রাস, প্রধান বিচারপতিসহ অন্যান্য বিচারকদের বাস ভবনে হামলা, কর্তব্যরত পুলিশকে নির্মমভাবে হত্যা, সাংবাদিকদের ওপর হামলা, হাসপাতালসহ অন্যান্য স্থাপনায় হামলা করা হয়েছে। এই একই মহল নির্বাচন প্রতিহত করার জন্য ২০১৪ সালেও একইভাবে যানবাহনে অগ্নিসংযোগ, সড়কপথে বৃক্ষকর্তন, নির্বাচন অফিসসমূহে অগ্নিসংযোগ, ভোটারদের নির্মমভাবে প্রহার-এমনকি কর্তব্যরত প্রিজাইডিং অফিসারকে ব্যালট বাক্সের উপরে কুপিয়ে হত্যা করার মতো নৃশংস ও বর্বরোচিত ভূমিকা গ্রহণ করেছিল। এখনও সেই একই মহল নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর তাকে এক তরফা নির্বাচন তফসিল বলে আখ্যায়িত করে তা বাতিলের দাবি করছে। ঘোষিত তফসিল কমিশনের সঙ্গে নিবন্ধিত সব রাজনৈতিক দলের জন্য প্রযোজ্য এবং উম্মুক্ত। তাহলে কীভাবে এই তফসিল একতরফা হয় এবং কীভাবে অবসরপ্রাপ্ত কিছু সরকারি কর্মকর্তা কমিশনের সংবিধান সম্মত তফসিলকে এক তরফা তফসিল হিসেবে আখ্যায়িত করে তা বাতিলের জন্য সুপারিশ করেন তা সর্বসাধারণের কাছে বোধগম্য নয়। এই প্রয়াস বাংলাদেশকে একটি সাংবিধানিক শূন্যতার দিকে ঠেলে দেয়ার নামান্তর।

বিবৃতিতে তত্ত্ববধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনরায় প্রবর্তনের বিষয়ে ‘ডকট্রিন অব নেসেসিটি’র কথা উল্লেখ করা হয়েছে। কোনও দলের একক রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত ও দাবিকে ‘ডকট্রিন অব নেসেসিট‘ বলে চালিয়ে দেয়া ‘একতরফ‘ বিষয়। তাছাড়া বাংলাদেশে এমন কোনও পরিস্থিতির উদ্ভব হয়নি, যাতে এর প্রয়োজন রয়েছে। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ধারণাকে ২০০১ সালে ষড়যন্ত্র করে প্রাথমিকভাবে বিতর্কিত করেছে এবং ২০০৬ সালে বিবিধ পদক্ষেপের মাধ্যমে এক এগারোর সৃষ্টি করে তিন মাসের তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে দুই বছরের দীর্ঘ একটি অবস্থায় নিয়ে যাওয়ার মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছিল। বাংলাদেশের জনগণ এই তিক্ত অভিজ্ঞতার কারণেই ২০০৮ সালের নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত নবম জাতীয় সংসদে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালতের রায় বাস্তবায়নের নিমিত্তে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা থেকে বাংলাদেশকে মুক্ত করে।

বিবৃতিদারা বলেন, বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন কর্তৃক নির্বাচনের বিধিসম্মত তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে- যেখানে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে নিবন্ধিত সব দলের অংশগ্রহণের উম্মুক্ত সুযোগ বিদ্যমান, তাকে ‘একতরফা তফসিল’ বলার কোনও অবকাশ আছে বলে আমরা মনে করি না।

বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন, আতিউর রহমান, হাসান মাহমুদ খন্দকার;, কাজী রিয়াজুল হক, সেওরেন্দ্র নাথ চক্রবর্তী, মোল্লা ওয়াহেদুজ্জামান, কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী, শহীদুল হক, খন্দকার শওকত হোসেন, আব্দুল মান্নান চৌধুরী, শ্যামল কান্তি ঘোষ, ডা. এবিএম আবদুল্লাহ,মুন্সী ফয়েজ আহমেদ, আবুল কালাম আজাদ, ইকবাল মাহমুদ, মোহাম্মদ সাদিক প্রমুখ।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App