×

জাতীয়

রাজনৈতিক সংলাপের আহ্বান সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৪ নভেম্বর ২০২৩, ০৩:৩৮ পিএম

রাজনৈতিক সংলাপের আহ্বান সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের

‘একতরফা’ নির্বাচনের তফসিল বাতিল করে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপে বসতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ।

শুক্রবার (২৪ নভেম্বর) সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের উদ্যোগে এক পেশাজীবী সমাবেশে সংগঠনের নেতা রুহুল আমিন গাজী এই আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, ‘আমি পেশাজীবীদের পক্ষ থেকে সরকারকে বলতে চাই, সকল রাজবন্দিদের মুক্ত করে দিন, এই নাটক সাজা দেয়া বন্ধ করুন। একটা গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য সকল দলের সঙ্গে উন্মুক্ত আলোচনা করুন। এই সংলাপের মধ্য দিয়ে…তফসিল পেছান, এই তফসিলের দরকার নেই’।

‘‘আলোচনার মধ্য দিয়ে নির্বাচনের একটা উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করুন এবং নতুন তফসিলের মধ্য দিয়ে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করুন। পেশাজীবীদের ওপর হামলা বন্ধ করুন, বন্দি রাজনীতিবিদদের মুক্তি দিন।”

ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি রুহুল আমিন গাজী বলেন, ‘‘ সরকারকে বলতে চাই, আপনি যদি ভেবে থাকেন ২০১৪ অথবা ২০১৮ সালের মতো নির্বাচন করবেন, আপনি সরকার পরিচালনা করবেন সেকথা আপনি ভুলে যান। সেরকত নির্বাচন হবে..... সেরকম নির্বাচন মানুষ হতে দেবে না।”

‘‘ দেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক দল বিএনপি, জামায়তসহ সকল রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দকে অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে। এভাবে হঠাত সাজা দেয়া বন্ধ করতে হবে। আপনি সবাইকে জেলে পুরে নির্বাচন করবেন আর নির্বাচনী খেলা করবেন এটা চলতে পারে না।”

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক অধ্যাপক তাজমেরী এসএ ইসলাম বলেন, ‘‘আজকের এই পরিস্থিতিতে জনগণ হতাশ। তারা চায় ভোট দিতে, তাদের ভোটের অধিকার ফিরে পেতে চায়, তারা চায় গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা করতে, জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে।’’

‘‘ যেখানে সমস্ত রাজনীতিবিদরা বেরিয়ে আসবেন, মুক্ত হয়ে আসবেন, একটা প্রতিযোগিতামূলক ইক্লুসিভ ইলেকশন হবে…এরকম একটা পরিস্থিতি তৈরি করতে হবে। সেই পরিস্থিতি তৈরি করতে হলে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে তাহলেই জনগণের আকাঙ্খা পূরণ হবে, জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে। আজকে আমাদের দাঁড়ানোর উদ্দেশ্যে জনগণের যে আকাঙ্খা, জনগণের যে ইচ্ছা তা পূরণের জন্য আমরা জনগণের কাতারে জনগণের হয়ে এখানে কথা বলছি, জনগণের ইচ্ছা পুরণের জন্য আমরা দাঁড়িয়েছি।”

জিয়া পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দস বলেন, ‘‘ কিসের জন্য আজকে এই অবস্থা? আজকে কেনো ১৫ বছরের নির্বাচন নিয়ে যে জাতীয় সমস্যা এটা আজকে প্রতিটা মানুষ অনুভব করে। একপেশে নির্বাচন করে কোনো অবস্থাতেই সরকার পার পাবে না।”

‘‘ যেভাবে ২০০৬ সালে ২৮ অক্টোবরে মানুষকে লৈগি-বৈঠা দিয়ে হত্যা করেছিলো ঠিক ২০২৩ সালের ১৮ অক্টোবর নয়া পল্টনের বিএনপির শান্তিপূর্ণ একটি মহাসমাবেশে যেভাবে গোলমাল করেছে, পুলিশ ভাইকে হত্যা করেছে, বিএনপির বহু ভাইকে গ্রেপ্তার করেছে সর্বোপরি বিএনপির নয়া পল্টনের কেন্দ্রীয় অফিসসহ বিভাগ, জেলা, উপজেলা, থানা, মহল্লার অফিসে তালা মেরে রেখেছে …আর আপনি সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল সাহেব নির্বাচন করবেন? আর শেখ হাসিনার আপনি একতরফা নির্বাচন করে ক্ষমতায় আসবে … অসম্ভব। দেশের মানুষ কোনো অবস্থাতেই একতরফা নির্বাচনে যাবে না।”

জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের উদ্যোগে পেশাজীবীদের গ্রেপ্তার ও নির্যাতন বন্ধ, পেশাজীবীসহ সকল রাজবন্দির মুক্তি, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের এই পেশাজীবী সমাবেশ হয়। এতে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, আইনজীবী, কৃষিবিদ, সাংবাদিক, সাংস্কৃতিক কর্মীসহ বিভিন্ন পেশার লোকজন অংশ নেন।

সমাবেশে সংগঠনটির আহ্বায়ক অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার চিকিতসা কাজে সার্বক্ষনিক নিয়োজিত থাকায় আসতে পারেননি বলে সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সদস্য সচিব জানান। সমাবেশে শেষে পেশাজীবীরা প্রেসক্লাবের সামনের সড়কে মিছিল বের করে।

সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সাবেক আহ্বায়ক রুহুল আমিন গাজীর সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব সাংবাদিক কাদের গনি চৌধুরীর সঞ্চালনায় এই মানববন্ধনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, অধ্যাপক লুতফুর রহমান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শামসুল আলম, অধ্যাপক কামরুল আহসান, ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের রিয়াজুল ইসলাম রিজু, এগ্রিকালচারিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের রাশিদুল হাসান হারুন, জিকেএম মোস্তাফিজুর রহমান, অধ্যাপক গোলাম হাফিজ কেনেডি, ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশসের অধ্যাপক আবদুস সেলিম, ডা. শহীদ হাসান, ডা. জহিরুল ইসলাম শাকিল, ডা. সরকার মাহবুব আহমেদ শামীম, সাংবাদিক সৈয়দ আবদাল আহমেদ, শহীদুল ইসলাম, খুরশীদ আলম, অ্যাডভোকেট আবেদ রাজা, নার্সেস অ্যাসোসিয়েশনের জাহানারা বেগম, ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাখাওয়াত হোসেন, জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক জোটের রফিকুল ইসলাম প্রমূখ।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App