আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে একতরফা তফসিল ঘোষণার প্রতিবাদে ডাকা রবিবার (১৯ নভেম্বর) থেকে ৪৮ ঘণ্টার হরতালে সকলকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে রাজপথ নামার আহ্বান জানিয়েছে বিএনপি। দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী আহমেদ বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে এই হরতালকে বাস্তবায়ন করতে জন্য সর্বমহলে, সর্বদিক থেকে আপামর জনসাধারণ প্রত্যেককে আহ্বান জানাচ্ছি। দলের নেতা-কর্মী ও যুগপৎ আন্দোলনে থাকা জোট ও দলের প্রতিও উদার্ত আহ্বান জানাচ্ছি। সকলে সাহসের ওপর ভর করে বুক চিটিয়ে রাজপথে উপস্থিত হবেন।

শনিবার (১৮ নভেম্বর) সন্ধ্যায় এক ভার্চুয়াল সংবাদ ব্রিফিঙে তিনি এই আহ্বান জানান। এসময় রিজভী বলেন, অবৈধ আওয়ামী সরকারের পদত্যাগসহ নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তি ও উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে প্রেরণ, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ হাজার হাজার নেতা-কর্মীর মুক্তিসহ চলমান আন্দোলনের একদফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে এবং নির্বাচন কমিশনের একতরফা তফসিল ঘোষণার প্রতিবাদে আগামীকাল রবিবার ভোর ৬টা থেকে শুরু হচ্ছে ৪৮ ঘণ্টার দেশব্যাপী হরতাল যেটি মঙ্গলবার ভোট ৬টায় শেষ হবে। এটি হবে শান্তিপূর্ণ হরতাল।

বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, ৪৮ ঘণ্টার এই হরতাল হচ্ছে অধিকার আদায়ের হরতাল, এই হরতাল হচ্ছে অন্যায়ের বিরুদ্ধে হরতাল, এই হরতাল হচ্ছে গণতন্ত্রকামী মানুষকে অন্যায়ভাবে জুলুম-নিপীড়ন-নির্যাতন করে ফরমায়েসী রায়ে শাস্তি যে ভয়ংকর এবং পৈশাচিক নির্যাতন করা হচ্ছে তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদের হরতাল। এই হরতাল অবাধ, সুষ্ঠু, গ্রহনযোগ্য নির্বাচনের দাবিতে এই হরতাল। এই দাবি জনগণের দাবি, সারাদেশের মানুষ বহুদিন ধরে অধিকার থেকে বঞ্চিত, তাদের মালিকানা বঞ্চিত। জনগণের মালিকানা জনগণকে ফেরত দিতেই এই দূর্বার আন্দোলন।

‘তফসিল স্থগিত করুন’

রিজভী বলেন, দেশের কারাগারগুলোতে ধারণক্ষমতার কয়েকগুণ বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের উপচে পড়েছে মহাবিপর্য্য় সৃষ্টি হয়েছে। অনেককে আটকে রেখে মুক্তিপণ নিচ্ছে পুলিশ, নেতা-কর্মীদের না পেয়ে তার স্বজন-আত্মীয়দের আটক করে মারধর করছে পুলিশ। তাদের গ্রেফতার বাণিজ্যের লাইসেন্স দিয়েছে শেখ হাসিনা। কার্যত দেশে আইনের শাসনের মূলোৎপাটন করা হয়েছে। গায়েবী মামলা ও গ্রেফতার আতঙ্কে বিএনপির নেতা-কর্মীরা দুঃসহ জীবন অতিবাহিত করছে। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিকে পরিণত করা হয়েছে, তাদের স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে দেয়া হচ্ছে না।

তবে এতো সব করে এবার আর পার পাওয়া যাবে না। জনগণ রাজপথে নেমেছে অধিকার আদায়ের দূর্বার আন্দোলনে। নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন না দিলে সরকারের পতন হবে।আপনারা যে তফসিল ঘোষণা করেছেন তা অবিলম্বে প্রত্যাহার করুন, নির্বাচন স্থগিত করে আগে পদত্যাগ করুন। অন্যথায় এই ফরমায়েশি এক তরফা নির্বাচন জনগণ সর্বশক্তি দিয়ে প্রতিহত করবে।

গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে ৩০২ জন নেতা-কর্মীকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। ২৮ অক্টোবর থেকে এই পর্যন্ত বিভিন্ন মামলায় পুলিশ ১৩ হাজার ২১০ জনের অধিক নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করেছে।