×

জাতীয়

তফসিল ঘোষণার বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি বিএনপির (ভিডিও)

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৪ নভেম্বর ২০২৩, ০৭:২৬ পিএম

তফসিল ঘোষণার বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি বিএনপির (ভিডিও)

ছবি: সংগৃহীত

তফসিল ঘোষণার বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি বিএনপির (ভিডিও)

ছবি: সংগৃহীত

‘একতরফা নির্বাচন' এর তফসিল ঘোষণার বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছে বিএনপি। দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী আহমেদ বলেছেন, এরা (সরকার) জনগণের দাবি উপেক্ষা করে এক তরফা নির্বাচন করার জন্য উন্মাদ, উদ্ভ্রান্ত হয়ে গেছে। শেখ হাসিনা তার আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশনকে দিয়ে অবৈধভাবে তফসিল দেয়ার পায়তারা শুরু করেছে। আমরা কঠোর ভাষায় হুঁশিয়ার করে দিতে চাই, এই তফসিল নাটক বন্ধ করুন। আগে পদত্যাগ করুন, কেয়ারটেকার সরকারের হাতে ক্ষমতা দিন, এই দলদাস নির্বাচন কমিশন বাতিল করুন। মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) বিকালে এক ভার্চুয়াল সংবাদ ব্রিফিয়ে রুহুল কবির রিজভী এই হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন। রিজভী বলেন, আওয়ামী লীগ কখনোই সোশ্যাল হারমোনি বা ডেমোক্রেসিতে বিশ্বাসী নয়। প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে ঘৃণার প্রচার ও প্রসারে সংস্কৃতি তৈরি করে। এজন্যই কুৎসিতভাষায় আক্রমণ, কু-বাক্য ব্যবহার, টিপ্পুনি কাটাসহ নানামাত্রার জুলুম ও নিষ্ঠুরতা নামিয়ে আনা হয় বিরোধী দলের ওপর। কিন্তু এই জবরদস্তি দু:শাসন যেকোনো মুহূর্তে উল্টে যেতে পারে সেটি আওয়ামী লীগ কখনই চিন্তা করে না। বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, সারা জাতির কাছে, দল ও সমমনা জোটের নেতা-কর্মীদের কাছে আমি আহ্বান জানাচ্ছি যে, বুধবার ভোর ৬টা থেকে যে অবরোধ শুরু হবে সেটি সার্বিকভাবে সাফল্যমণ্ডিত করার জন্য, শান্তিপূর্ণভাবে এ কর্মসূচি পালনের জন্য সকলে প্রস্তুতি গ্রহণ করবেন এবং সফল করবেন। দলের সংগ্রামী ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে আমি সকলকে আহ্বান জানাচ্ছি, আগামী দুইদিন ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ কর্মসূচি আপনারা সফল করবেন। এই অবরোধ গণতন্ত্রের পক্ষে, বাক স্বাধীনতা ফিরিয়ে আনার পক্ষে। এই অবরোধ স্বচ্ছ ভোটে, অবাধ, স্বচ্ছ, বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের পক্ষে যেটি আজকে দীর্ঘদিন ধরে ছিনিয়ে নেয়া হয়েছে জনগণের কাছ থেকে। জনগণের মালিকানা জনগণের কাছে ফিরিয়ে দেয়ার লক্ষ্যেই এই অবরোধ কর্মসূচি, এটি গণতান্ত্রিক সংগ্রামের একটি অংশ। সকলে এই অবরোধ কর্মসূচি সাফল্যমণ্ডিত করে তুলুন। অগ্নি সন্ত্রাস-নাশকতা ওরাই করছে রিজভী বলেন, গত কয়েকদিন ধরে লাগাতার এই সহিংস হুংকারে দেশের গণতন্ত্রকামী প্রতিটি মানুষ চরম আতংকে পতিত হয়েছে। ইতিহাস এই সাক্ষ্য দেয় যে, আগুন সন্ত্রাস, ধ্বংসযজ্ঞ, গুম-খুন-ভাংচুর-সহিংসতার আতুরঘর আওয়ামী লীগ। আওয়ামী দুঃশাসনে পিষ্ট প্রতিবাদী মানুষকে নিশ্চিহ্ন এবং শান্তিপূর্ণ আন্দোলন প্রশ্নবিদ্ধ করতে বরাবরই দলীয় ও রাষ্ট্রশক্তিকে দিয়ে সন্ত্রাস নাশকতার চালিয়ে আসছে। অগ্নিসন্ত্রাস শব্দটিকে ব্যবহার করে বিএনপির ওপর চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে। অপরাধ করে তারা, আর চাপিয়ে দেয় বিএনপির লোকজনের ওপর। এই পলিসিটা তারা অনেকদিন ধরে নিয়েছে, অনেক দিন ধরে এই পলিসিটা তাদের রাজনৈতিক এজেন্ডার অনুষঙ্গ হিসেবে আমরা দেখতে পাই। কেবল বাংলাদেশ নয়, এখন গোটা পৃথিবীবাসী জানেন যে, আগুন দিয়ে গাড়ি পোড়ানো, সহিংসতা, গান পাউডার দিয়ে, লগি-বৈঠা দিয়ে মানুষ হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী আওয়ামী লীগ। এবারো একদফার সংগ্রাম বানচাল করতে পুলিশের প্রটেকশনে আগুন সন্ত্রাসে আওয়ামী ক্যাডারদের অংশগ্রহণ দৃশ্যমান। যেমনটা তারা ২০১৩, ১৪ ও ১৫ সালে করেছে, বিভিন্ন সময় যেমন করেছে, বিভিন্ন সময়ে যেমন করেছে। উদারহরণ তুলে ধরে তিনি বলেন, বিএনপির নেতাকর্মীরা গুলি খাচ্ছে, রিমান্ডে অমানবিক নির্যাতন ভোগ করছে। গত ২৯ জুলাই রাজধানীর মাতুয়াইলে জনগণের অবস্থান কর্মসূচি চলাকালে আওয়ামী আগুন সন্ত্রাসীরা মুখোশ পরে বাসের ড্রাইভারের সামনেই আগুন দিয়েছে। ড্রাইভারও বলেছেন দশ হাত দূরে পুলিশ ছিল, তাকে (ড্রাইভারকে) বলছে তাড়াতাড়ি নেমে যা, নাহলে তোকেসহ আগুন লাগিয়ে দিব। গত ২ নভেম্বর অবরোধ চলাকালে ফেনীর লালপুলে মহাসড়কে চিনিভর্তি ট্রাকে আগুন দেয়ার ঘটনায় গ্রেফতারকৃত সদর উপজেলাধীন ধলিয়া ইউনিয়ন যুবলীগের সহ-সভাপতি নুর উদ্দিন টিপুকে গ্রেপ্তারে প্রমাণিত হয় অতীতের মতো আওয়ামী লীগ আগুন সন্ত্রাস নাশকতা করে বিএনপির ওপর দায় চাপাচ্ছে। প্রায় প্রতিটি আগুন সন্ত্রাসের ঘটনায় আওয়ামী লীগ ও রাষ্ট্রশক্তির সংশ্লিষ্টতার সুস্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে। কোনটা প্রকাশ হচ্ছে কোনটা ঢাকা দিচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। আজকে নয়, ১৯৭২ সালের পর থেকে তারা এদেশের সন্ত্রাসের মধ্য দিয়ে যারা ভিন্নমত অবলম্বন করছে, যারা দেশপ্রেমিক, যারা আওয়ামী লীগের দুঃশাসন-দুর্নীতির বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছিলেন তাদেরও এভাবে নিশ্চিহ্ন করার চেষ্টা হয়েছে। তখনও আগুন লাগানো হয়েছে ঘরে, বসতবাড়িতে, কল-কারখানায়। একের পর এক পাটকল আগুনে ভস্মীভূত হয়েছে। তখনও বিরোধী দলকে নির্মূল করার চেষ্টা করা হয়েছে। শেষে একচ্ছত্র ক্ষমতা হাতে নিতে বাকশাল প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। সেসব ঘটনা জনগণ ভুলে যায়নি। গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে ৪২০ জনের অধিক নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার এবং বিভিন্ন মামলায় ১৩ হাজার ৫০ জনের অধিক নেতা-কর্মীকে আসামি করা হয়েছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App