×

জাতীয়

সরকার পোশাক শিল্প ধ্বংসের নীল-নকশা বাস্তবায়ন করছেন

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১২ নভেম্বর ২০২৩, ০৭:৫২ পিএম

সরকার পোশাক শিল্প ধ্বংসের নীল-নকশা বাস্তবায়ন করছেন

ছবি: ভোরের কাগজ

দেশের তৈরি পোশাক ব্যবসা অন্য দেশের হাতে তুলে দেয়ার চক্রান্ত হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী আহমেদ। তিনি বলেছেন, সরকার অত্যন্ত সুকৌশলে দেশের সবচেয়ে বেশি বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের বড় খাত পোশাক শিল্প ধ্বংসের নীল-নকশা বাস্তবায়ন করছেন।

রবিবার (১২ নভেম্বর) বিকালে এক ভার্চুয়াল সংবাদ ব্রিফিঙে রিজভী আহমেদ এই অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, গোটা অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে। জনগণ বিশ্বাস করে এখন রেডিমেড গার্মেন্টস ব্যবসায় এখন অন্য দেশের হাতে তুলে দিয়ে অবৈধ ক্ষমতার থাকার গ্যারেন্টি চায় অবৈধ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এ সময় গত অবরোধ চলাকালে গত ২৪ ঘণ্টার সারাদেশে ৩৬৫ জনের অধিক নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং বিভিন্ন মামলায় ১ হাজার ৪৮৫ জনের অধিক নেতা-কর্মী।

তিনি অভিযোগ করেন, বিরোধী দলের রাজনৈতিক নেতা-কর্মী শুধু নয়, পেশাজীবী, শ্রমজীবী, কর্মজীবী এমনকি গার্মেন্টস শ্রমিকরা পর্যন্ত এই ফ্যাসিস্টদের কাছে নিরাপদ নয়। বেতন-ভাতা বৃদ্ধির ন্যায্য দাবিতে আন্দোলনরত গার্মেন্টস শ্রমিকদের ওপর পুলিশ লেলিয়ে দিয়ে আজ পর্যন্ত ৪ জন শ্রমিকদের হত্যা করা হয়েছে। পুলিশ লেলিয়ে দিয়ে গাজীপুরে গার্মেন্টস কর্মী আঞ্জুয়ারা মো. জামালউদ্দিনকে হত্যা করা হলো? আঞ্জুয়ারা রাষ্ট্র ক্ষমতার ভাগ চায়নি, সে শুধুমাত্র স্বামী সন্তান নিয়ে একটু সুখে শান্তিতে বেঁচে থাকার দাবি করেছিলো এজন্য তাকে জীবন দিতে হয়েছে।

‘আবারো গুম করা শুরু হয়েছে’

নব্য নাৎসি কায়দায় সরকার অতীতের মতো আবার নতুন করে গুমের উৎসব শুরু করেছে মন্তব্য করে বিএনপির এই নেতা বলেন, প্রতিটি শহর-বন্দর জনপদে এখন সাদা পোশাকধারীদের হাঁড় হিমকরা আতঙ্ক। চারিদিকে ভয়ার্ত পরিবেশ যেন হানাদার বাহিনী আক্রমণ করেছে বাংলাদেশের বুকে। শেখ হাসিনার গুম বাহিনী ভয় দেখিয়ে মায়েরা তাদের বাচ্চাদের এখন ঘুম পাড়াচ্ছে। অবস্থাদৃষ্টে দেশের যে পরিবেশ সেখানে এই কথাগুলো মনে পড়ে। তিনি বলেন, চারিদিকে শুধু জমাট বাঁধা কান্নার পাহাড়। প্রতিদিনই সেই কান্নার পাহাড় আরো উঁচু হচ্ছে। ১৫ বছর ধরে সেই কান্নার পাহাড় থেকে চুইয়ে নামছে আর্তনাদ। আর গল গল করে উঠছে ক্রসফায়ারে লোকদের আর গুম হওয়া মানুষের অভিশাপ। রাতে-দিনে তারা(সাদা পোশাকধারীরা) কালোকাঁচ ঢাকা মাইক্রোবাসে নাৎসি বাহিনীর মতো ঘুরে বেড়াচ্ছে। ছোঁ মেরে তুলে নিচ্ছে গনতন্ত্রকামীদের। তাদের হাতে সাধারণ মানুষও রেহায় পাচ্ছে না। র‍্যাব-পুলিশের নামধারীরা আওয়ামী পুলিশ লীগ আন্দোলনরত বিরোধীদলীয় নেতা-কর্মীদের না পেলে তাদের পিতা-মাতা, পুত্র-সন্তান, ভাই-বোন এবং আত্মীয় স্বজনদেরও ধরে নিয়ে অদৃশ্য করে রাখছে, তুলে নিয়ে গিয়ে অস্বীকার করা হচ্ছে।

বিনা গ্রেফতারি পরোয়ানায় তুলে নিয়ে যাওয়ার ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, কোথাও কোথাও জঙ্গি-সন্ত্রাসীদের মতো জিম্মি করে মুক্তিপণ আদায় করছে এই নামধারী আওয়ামী পুলিশ লীগ। কোথাও কোথাও বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীদের না পেয়ে বাথরুম থেকে পানি এনে বাসার সব বিছানায় ঢেলে দিয়েছে তারা। সারা দেশে দলদাস পুলিশ বাহিনী বিনা মামলায় বিনা ওয়ারেন্টে বা গায়েবী মামলায় পাইকারী হারে হাজার হাজার বিএনপি নেতা কর্মী গ্রেফতার করে নির্যাতন করছে।

তুলে নিয়ে গিয়ে বন্দী অবস্থায় অনেককে কোমর থেকে পায়ের তালু অবধি হাতুড়িপেটা করে অচল করে দেয়া হচ্ছে,গুলি করে পঙ্গু করে দেয়া হচ্ছে যা চরম মানবতাবিরোধী, যা বাংলাদেশ স্বাক্ষরকৃত জাতিসংঘের কমিটি অ্যাগেইনস্ট টর্চার (নির্যাতন বিরোধী কমিটি-ক্যাট) এবং নিপীড়ন বিরোধী আন্তর্জাতিক কনসোর্টিয়াম ইউনাইটেড অ্যাগেইনস্ট টর্চার (ইউএটি) অনুযায়ী একটি গণবিরোধী ভয়াবহ অপরাধ। যা আন্তর্জাতিক আদালতে বিচার এবং কঠিন শাস্তিযোগ্য অপরাধ। আন্তর্জাতিকভাবে ধিকৃত এই ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচারী শেখ হাসিনাকে অবৈধভাবে ক্ষমতায় রাখতে যারা গনতন্ত্রকামীদের গুম-খুন-গ্রেফতার-মিথ্যা মামলায় জড়িত করছে তাদেরকে সাবধান এবং হুঁশিয়ার করে দিচ্ছি।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উদ্দেশ্যে রিজভী বলেন, আপনারা ভোটের অধিকার আদায়ে জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলনের প্রতিপক্ষ হবেন না।গণতন্ত্রকামী মানুষের জোয়ার ঠেকাতে পারবে না। যে সব সাবেক ছাত্রলীগ নেতা এখন পুলিশ কর্মকর্তা হয়ে গনতন্ত্রকামীদের হুমকি দিচ্ছেন, সবাইকে গ্রেফতার করা হবে বলে ভয় দেখাচ্ছেন তারা গণবিরোধী অবস্থান থেকে সরে আসুন। অন্যথায় পুলিশের মর্যাদাপূর্ণ ইউনিফর্ম খুলে আওয়ামীলীগে যোগ দিয়ে রাজপথে নামুন। দুঃশাসনে পিষ্ট প্রতিবাদী মানুষকে নিশ্চিহ্ন করতে দলীয় ও অবৈধ রাষ্ট্রশক্তির হয়ে বেপরোয়া আচরণ করবেন না। আপনারা কে কি করছেন বাংলাদেশের জনগণ সব হিসাব রাখছে।গণঅভ্যূত্থানে আপনাদেরও পরিণতি কি হবে তা জনগণ নির্ধারণ করে রাখছে।”

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App