বিএনপির মহাসমাবেশের দিন প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলার ঘটনায় রমনা মডেল থানায় করা মামলায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদুকে ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। আজ সোমবার (৬ নভেম্বর) দুদুকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএসএম) আদালতে হাজির করা হয়। এরপর মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তাকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক রফিকুল ইসলাম। এসময় আসামিপক্ষের আইনজীবীরা রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিনের আবেদন করেন। এসময় শামসুজ্জামান দুদু আদালতের অনুমতি নিয়ে বলেন, প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা হলো আর তিনি কোনো বিবৃতি দিলেন না। এটা কোনো কথা হলো। প্রথমত আমি সুস্থ নই। আমি ছাত্রদলের সভাপতি ছিলাম। এখন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান। আমি ১০-১৫ দিন মাসে আদালতে আসি বিভিন্ন মামলার হাজিরার জন্য৷ আমার পরিবারে অনেক আইনজীবী। আমার জন্য লজ্জাজনক যে, প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলার মতো মামলায় আমাকে আসামি করা হলো। সমাবেশের দিন আমি মঞ্চে ছিলাম। কিন্তু বক্তব্য দিতে পারি নি। কোনো ভাইস চেয়ারম্যানই বক্তব্য দিতে পারিনি। তাহলে কিভাবে আমি নির্দেশ দিলাম বাসভবনে হামলার জন্য। আইনের শাসনের জন্য এতো বছর ধরে আমরা লড়ে যাচ্ছি। বয়সও হয়ে গেছে। এসময় আমাকে রিমান্ড দিবেন না। রাষ্ট্রপক্ষ থেকে রিমান্ডের জোর দাবি জানানো হয়। শুনানি শেষে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শফি উদ্দিনের আদালত ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। শুনানিতে বিএনপি আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার বলেন, আসামি দুদু একজন সম্মানিত রাজনীতিবিদ। তিনি সংসদ সদস্য ছিলেন। তিনি তো ঘটনার সময় ঘটনাস্থলে ছিলেন না। তিনি সমাবেশের মঞ্চে ছিলেন। তদন্ত কর্মকর্তা কি কোন প্রমাণ পেয়েছেন তিনি সেখানে ছিলেন। তিনি কোনো বক্তব্যও দেননি যে নেতাকর্মী উস্কানি পেয়ে প্রধান বিচারপতি দর বাসভবনে ভাঙচুর করেছেন। রাজনীতি করেন বলেই কি তাকে রিমান্ডে নিতে হবে। তার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কোন প্রমাণ নেই। আসামি দুদু একজন ডায়াবেটিসের রোগী। তাকে রিমান্ড বাতিল করেন জামিন মঞ্জুর করেন। এরআগে রবিবার (৫ নভেম্বর) দিনগত রাত ১২টার দিকে ঢাকায় বোনের বাসা থেকে দুদুকে আটক করে ডিবি পুলিশ। গত ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশ শুরুর আগে বিএনপির নেতাকর্মীরা গাছের ডাল ভেঙে ও লাঠি দিয়ে প্রধান বিচারপতির বাসভবনের নামফলক, গেটে হামলা চালায়। তারা ভেতরে ইটপাটকেল ছুড়তে থাকে। এ ঘটনায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসসহ ৫৯ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে রমনা থানায় মামলা করে পুলিশ। ফখরুল-আব্বাস ছাড়াও মামলার উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, আব্দুল আওয়াল মিন্টু, আহমেদ খান, অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন, নিতাই রায় চৌধুরী, শামসুজ্জামান দুদু, এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) আলতাফ হোসেন চৌধুরী, ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুস সালাম, ভিপি জয়নাল, মহানগর উত্তর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক ফরহাদ হালিম ডোনার ও সদস্য সচিব আমিনুল হক।