×

জাতীয়

জামায়াতসহ গণহত্যাকারীদের রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৫ নভেম্বর ২০২৩, ১০:৪২ পিএম

জামায়াতসহ গণহত্যাকারীদের রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে

ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি আয়োজিত আলোচনা সভায় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীসহ অন্যরা। ছবি: ভোরের কাগজ

১৯৭২ সালের সংবিধানে ধর্ম নিরপেক্ষতার যে নিশ্চয়তা দেয়া হয়েছে, পৃথিবীর অন্যান্য দেশের সংবিধানে এত স্পষ্টভাবে তা দেয়া হয়নি। এখানেই বাংলাদেশের সংবিধান একক ও অনন্য। এই সংবিধান অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ বিনির্মাণের সংবিধান। যেকোনো মূল্যে এ সংবিধানকে সমুন্নত রাখতে হবে। তাই ১৯৭২ সালের মূল সংবিধানের আলোকে জামায়াতে ইসলামীসহ একাত্তরের গণহত্যাকারী এবং তাদের সহযোগীদের ধর্মের নামে সন্ত্রাসের রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে। রবিবার (৫ অক্টোবর) সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে ‘১৯৭২-এর সংবিধান : বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক দর্শনের দর্পণ’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন বিশিষ্টজনেরা। পাশাপাশি ৭২-এর সংবিধানের মূল চেতনা পুনঃপ্রতিষ্ঠার দাবিও জানান তারা। সংবিধান দিবস উপলক্ষে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি এই আলোচনা সভার আয়োজন করে। সংগঠনের সভাপতি শাহরিয়ার কবিরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। সভায় আরো বক্তব্য রাখেন বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি মো. মোমতাজ উদ্দিন ফকির, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মো. মোখলেসুর রহমান বাদল, পোল্যান্ডের নেভার এগেইনের সভাপতি রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ড. রাফাল প্যানকোভস্কি এবং নেভার এগেইনের সদস্য মানবাধিকার নেতা নাটালিয়া সিনায়েভা প্যানকোভস্কা। সভা সঞ্চালনা করেন আইনজীবী আজহার উদ্দিন ভূঁইয়া। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফুটিয়ে সমতার ভিত্তিতে অর্থনৈতিক মুক্তি আনয়নে বঙ্গবন্ধু বদ্ধপরিকর ছিলেন। শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত বাংলাদেশের সংবিধান বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক চেতনার প্রতিফলন। সংবিধান বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক দর্শনেরই দর্পণ। বাঙালি ও বাংলার আপামর মানুষের জন্য যা কল্যাণকর তা বাস্তবায়ন করতে বঙ্গবন্ধু আজন্ম লড়াই সংগ্রাম করেছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, শোষণ ও বৈষম্যহীন সোনার বাংলা গড়াই ছিল বঙ্গবন্ধুর রাজনীতির মূল দর্শন। বাঙালির অধিকার প্রতিষ্ঠাকে লালন করেই টুঙ্গিপাড়ার খোকা বঙ্গবন্ধুতে পরিণত হয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধু মনে করতেন ভবিষ্যৎ প্রজন্ম গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, জাতীয়তাবাদ ও ধর্মনিরপেক্ষতার ভিত্তিতে শোষণমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে পারলেই তার লড়াই সংগ্রাম সার্থক হবে। বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বলেন, এরশাদ প্রণীত রাষ্ট্রধর্ম তত্ত্ব এখনো বলবৎ রয়েছে, যা সংবিধানের ধর্মনিরপেক্ষ আদর্শের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ড. রাফাল প্যানকোভস্কি বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ৭২-এর সংবিধান প্রণয়নের সময় সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতাকে সন্নিবেশিত করেছিলেন। যেখানে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সব মানুষের সমান অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে, যা এই সংবিধানকে পৃথিবীর উৎকৃষ্ট সংবিধানগুলোর মধ্যে পরিগণিত করেছে। মানবাধিকার নেতা নাটালিয়া সিনায়েভা প্যানকোভস্কা বলেন, বাংলাদেশের সংবিধান একক ও অনন্য। আমরা চাই বাংলাদেশের সংবিধানের ধারা অব্যাহত থাকুক। অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন বলেন, বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ে তুলতে চাইলে আমাদেরকে ৭২-এর সংবিধানে ফিরে যেতে হবে। মোমতাজ উদ্দিন ফকির বলেন, সাংবিধানিক ধারা বজায় রাখতে হলে ষড়যন্ত্রকারীদের বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে। মোখলেসুর রহমান বাদল বলেন, যেকোনো মূল্যে সংবিধানকে সমুন্নত রাখতে হবে। সভাপতির বক্তব্যে শাহরিয়ার কবির বলেন, বাংলাদেশসহ বিশ্বে ইসলামের নামে যে ভয়াবহ সন্ত্রাস ও হত্যাযজ্ঞ সংঘটিত হচ্ছে, তার আদর্শিক প্রণোদনা হচ্ছে জামায়াতে ইসলামীর ‘মওদুদিবাদ’, তথা ‘ধর্মের নামে রাজনীতি’। জামায়াত একাত্তরে যেভাবে গণহত্যা ও যুদ্ধাপরাধসহ মানবতাবিরোধী যাবতীয় অপরাধকে ইসলামের নামে বৈধতা দিয়েছিল, তারা এবং তাদের দেশি-বিদেশি সহযোগীরা এখন নির্বাচন বানচালের জন্যও তাই করছে। যে কারণে জামায়াত গং-এর সন্ত্রাসী রাজনীতি নিষিদ্ধকরণের কোনো বিকল্প নেই।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App