×

জাতীয়

সাংবাদিকদের উপর হামলা নিয়ে জাতিসংঘের বিবৃতি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৩ নভেম্বর ২০২৩, ০৩:২৮ পিএম

সাংবাদিকদের উপর হামলা নিয়ে জাতিসংঘের বিবৃতি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত

ছবি: ভোরের কাগজ

বিএনপির মহাসমাবেশে ৩২ জন সাংবাদিকের উপর হামলা নিয়ে জাতিসংঘের বিবৃতি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও দুরভিসন্ধিমূলক বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও ভোরের কাগজ সম্পাদক শ্যামল দত্ত।

তিনি বলেন, ২৮ আক্টোবর বিএনপির সমাবেশে সাংবাদিকদের উপর হামলা নজিরবিহীন। এই হামলা নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি চেষ্টা চলছে। সেই বিভ্রান্তি থেকে জাতিসংঘও রক্ষা পায়নি। সম্প্রতি জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন যে বিবৃতি দিয়েছেন তা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও দুরভিসন্ধিমূলক। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সরকারি দলের অনুসারী বলে ধারণা করা যায় এমন 'হেলমেট পরিহিত' বাহিনী সাংবাদিকদের উপর হামলা চালিয়েছে। এই বিবৃতির নিন্দা জানাই। কারণ প্রকাশ্য দিবালোকে আবরোধ কর্মসূচি থেকে হামলা চালানো হয়েছে। তা সবাই দেখেছে। এটি পরিকল্পিত হামলা ছিল। কিন্তু এখন বিএনপি ও তার মিত্ররা এটি নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরির চেষ্টা চালাচ্ছে। 'এজেক্ট প্রভোকিয়ান' নাম দিয়ে হামলার ঘটনাটি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে চাচ্ছে।

২৮ আক্টোবর রাজধানীর নয়া পল্টনে বিএনপির সমাবেশে সাংবাদিক নির্যাতনের প্রতিবাদে আয়োজিত মানববন্ধনে এ কথা বলেন তিনি। শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সচেতন নারী সাংবাদিক সমাজ এ মানববন্ধনের আয়োজন করে। এসময় বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাবেক তথ্য বিষয়ক উপদেষ্টা ও বাংলাদেশ অবজারভারের সম্পাদক ইকাবাল সেবহান চৌধুরী, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আকতার হোসেন। লাবন্য ভুইঁয়ার সঞ্চালনায় আরো বক্তব্য রাখেন সিনিয়র সাংবাদিক ঝর্ণা মনি রওশন জুনু, সেবিকা রানী, সুমি খান, শরীফা বুলবুল, সেবিকা প্রমুখ।

প্রটেস্ট জার্নালিস্ট, প্রেস ফ্রিডম, নো এটাক, সাংবাদিকদের উপর হামলা কেনো? স্টপ এটাক অন জার্নালিস্ট, সাংবাদিক নির্যাতনের বিচার চাই, পেশাদার সাংবাদিকদের ওপর হামলার বিচার চাই, সাংবাদিক নির্যাতন বন্ধ কর এমন সব পোস্টার নিয়ে মানববন্ধনে দাঁড়ান সচেতন নারী সাংবাদিক সমাজ। এসময় সংগঠনের বক্তরা ঘোষণা করেন, বিএনপি যদি এ হামলায় ক্ষমা না চায়, তাহলে তাদের কোন সংবাদ ছাপানো হবে না।

ঝর্না মনি বলেন, এ হামলা নিয়ে বিএনপি আজ পর্যন্ত কোন বার্তা দেয় নি। যারা হামলা করবে তাদের সংবাদ ছাপাবো না। সেইসঙ্গে আমরা রাষ্ট্রের কাছে নিরাপত্তা চাই।

হামলাকারীরা বিচারের কাঠগড়ায় না দাড়ানো পর্যন্ত প্রতিবাদ কর্মসূচি অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়ে শ্যামল দত্ত বলেন, গত ২৯ আক্টোবর মানবন্ধন থেকে বিচারের দাবিতে ৭২ ঘন্টা আল্টিমেটাম দিয়েছিলাম। গতকাল সেই আল্টিমেটাম শেষ হয়েছে। এখনো বিএনপি কিছু জানায়নি, ক্ষমা চাইনি। আবারো আন্দোলন চালিয়ে যাবে। প্রতিবাদ চালিয়ে যাবো।

বর্হিবিশ্বের বিবৃতির সমালোচনা করে তিনি বলেন, আমি তন্ন তন্ন করে খুঁজেছি, ৭ অক্টোবর থেকে আজ পর্যন্ত ৩৪ জন সাংবাদিক নিহত হয়েছে। জাতিসংঘের একটি বিবৃতি খুঁজে পায়নি। একটি বিবৃতিও দেয়নি জাতিসংঘ। ফিলিস্থিনি সাংবাদিক দের উপর হামলা নিয়ে কোন বিবৃতি নেই পশ্চিমা মানবাধিকার সংগঠনগুলোর। কিন্তু বাংলাদেশে কোন কিছু হলেই এমনকি হিরো আলমকে ধাক্কা দিলেই পশ্চিমা দেশগুলো বিবৃতি দেয়। কিন্তু আমাদের সাংবাদিকদের উপর হামলা প্রতিবাদে হিউমেন রাইট ওয়াচ, রিপোর্টার ফরেন্টিয়ারসকে খুঁজে পাচ্ছি না। বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবীরাও নিশ্চুপ। পশ্চিমা সাত দেশের এম্বাসেডর নিয়ে একটি জোট মিডিয়া ফ্রীডম কোয়ালিশন তারও চুপ। তাদেও কোন বিবৃতি নেই। আমাদের প্রতিবাদ আমাদেরকেই করতে হবে।

আবারো তিনটি দাবির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, টেলিভিশনের ফুটেজ দেখে সাংবাদিকদের উপর হামলাকারীদের চিহ্নিত করতে হবে। হামলার জন্য বিএনপিকে ক্ষমা চাইতে হবে। আহত সাংবাদিকদের পাশে থাকতে হবে।

ফরিদ ইয়াসমিন বলেন, সাংবাদিকদের হামলা রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভের উপর হামলা, গণতন্ত্রের উপর হামলা। সাংবাদিকদের উপর হামলা নিয়ে গুজব ছড়ানো হচ্ছে। সাংবাদিক কর্মীরা হামলাকারীদের ছেড়ে দিবে না। কারণ তারা কোন দলের হয়ে কাজ করছে না। তারা যেমন কলম ধরতে জানে প্রতিবাদও করতে জানে।

বিএনপির-জামায়াত যে সহিংসতা চালাচ্ছে তা বয়কট না করার আহ্বান জানিয়ে ইকবাল সোবহান চৌধুরী বলেন, ১৯৯২ সালেও বিএনপি জামাত প্রেস ক্লাবে ৫০ জন সাংবাদিককে আহত করে। আগামী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আবারো তারা তান্ডব চালাবে। তাদের বিবৃতি, কর্মসূচী বয়কট করা হবে। কিন্তু তাদের সহিংসতা জনগণের সামনে তুলে ধরতে হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App