কে এই চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দী
কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ৩১ অক্টোবর ২০২৩, ০৫:৪৯ পিএম
চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশের পর সাবেক সেনা কর্মকর্তা চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দীকে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) রাজধানী থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কথিত উপদেষ্টা মিয়ান আরাফিকে বিএনপির কার্যালয়ে সঙ্গে করে নিয়ে যান সাবেক এই সেনা কর্মকর্তা।
এর আগে এদিন বিকেলে গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে এ প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাকে ছাড়া হবে না। হচ্ছেও না। তার খোঁজ করা হচ্ছে। তাকে ধরা হবে। জিজ্ঞেস করা হবে কেন প্রতারণা করলো। আমি নির্দেশ দিয়েছি। উনি সাজায় গোছায়ে নিয়ে আসছে। তাকে ধরা হবে। ব্যবস্থা নেব। বলে দিয়েছি। প্রধানমন্ত্রীর এমন পরপরই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
জানা যায়, চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দীর বাড়ি চট্টগ্রাম জেলার সন্দ্বীপ থানায়। চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দী বীর বিক্রম, এসবিপি, এনডিসি, পিএসসি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা এবং জাতীয় প্রতিরক্ষা কলেজের সাবেক কমান্ড্যান্ট ছিলেন। তিনি পূর্বে আর্মি ট্রেনিং অ্যান্ড ডক্ট্রাইন কমান্ড (এআরটিডিওসি) এর জিওসি হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। একটি পদাতিক ইউনিট, রাইফেলস ব্যাটালিয়ন ও পদাতিক ব্রিগেড কমান্ড করেন। দায়িত্ব পালন করেছেন পদাতিক ডিভিশনসহ সেনাসদরের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদে। তিনি বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমির ব্যাটালিয়ন কমান্ডার, বাংলাদেশ রাইফেলসের পরিচালক অপারেশন ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পরিচালক সামরিক গোয়েন্দা পরিদপ্তর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
এছাড়াও বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব পিস সাপোর্ট অপারেশন্স ট্টেনিং এবং ননকমিশন অফিসার্স একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও প্রথম প্রধান প্রশিক্ষক ছিলেন তিনি।
২০১৯ সালে চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দীকে সেনানিবাসে ‘অবাঞ্ছিত’ ঘোষণা করা হয়। তার বিভিন্ন আচরণ সেনাবাহিনীর জন্য ‘বিব্রতকর’ বলেও পরের বছর এক বিজ্ঞপ্তি দেয় আইএসপিআর।
উল্লেখ্য, তিনি লে. জেনারেল পদে পদোন্নতি পাওয়ার পর এনডিসির কমান্ড্যান্ট থাকাবস্থায় একাধিক নারীর সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। তিনি এনডিসিতে পরিচালিত বিভিন্ন কোর্সের সঙ্গে বিদেশে ভ্রমণকালেও অনেক মেয়েকে নিয়ে চলাফেরা করেন এবং বিভিন্ন মাধ্যমে তার এই অশোভনীয় আচরণ এবং মেলামেশার ছবি কর্তৃপক্ষের গোচরীভূত হলে কর্তৃপক্ষ বিব্রত হয় এবং তাকে বিভিন্নভাবে উপদেশ দেয়া হয়।
তিনি এলপিআরে থাকাকালীন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ব্যতিরেকে ১৬ আগস্ট ২০১৮ তারিখে প্রথম স্ত্রীকে তালাক প্রদান করেন এবং সেনা আইন বহির্ভূতভাবে মেসকিট (সামরিক পোশাক) পরে ২১ নভেম্বর ২০১৮ তারিখে কর্তৃপক্ষের অনুমতি ব্যতিত দ্বিতীয় স্ত্রীকে বিয়ে করেন। কিন্তু তিনি বিয়ের আগে মিডিয়া ব্যক্তিত্ব এক নারীকে নিয়ে ৩ নভেম্বর ২০১৮ থেকে একই বাসায় অনৈতিকভাবে অবস্থান করেন।
এমনকি তিনি বিয়ের পূর্বে ওই মিডিয়া ব্যক্তিত্বকে সঙ্গে নিয়ে পহেলা বৈশাখ উদযাপন, সাজেক রিসোর্ট, খাগড়াছড়িতে অবকাশ যাপন, বিভিন্ন সময় ভারত, থাইল্যান্ড, আইসল্যান্ড, নরওয়ে ও সুইজারল্যান্ডে ভ্রমণ ও অবস্থান করেন, যার সচিত্র আলামত সামরিক ও অসামরিক পরিমণ্ডলে এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে সমালোচিত হয়। এছাড়া তিনি যাকে বিয়ে করেন তিনি একজন বিতর্কিত নারী হিসেবেও পরিচিত।