চলমান সংঘাতময় পরিস্থিতিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে সরকারের পদত্যাগ, নির্বাচনকালীন নির্দলীয় নিরপেক্ষ তদারকি সরকারের অধীনেই জাতীয় সংসদ নির্বাচন দেয়া এবং এ সংঘাতময় পরিস্থিতি সৃষ্টিতে দেশী-বিদেশী অপশক্তি সম্পর্কে সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি-সিপিবি। আজ রবিবার (২৯ অক্টোবর) সিপিবি সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম ও সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স এক বিবৃতিতে এ আহ্বান জানিয়েছেন। ২৮ অক্টোবর শাপলা চত্ত্বরের কাছে জামায়াতে ইসলামির সমাবেশ নিয়ে প্রশ্ন তোলেছে রাজনৈতিক দলটি। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, জামায়াত বাঁধাহীনভাবে কিভাবে সমাবেশ করলো ? নেতারা বলেন, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন আসন্ন, নির্বাচনকালীন সরকারের রূপরেখা এখনই আলোচনা শুরু করা প্রয়োজন। জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে নির্দলীয় সরকারের অধীনেই সংসদ নির্বাচন হতে হবে। একই সাথে এই সংঘাত ’৭১-এর ঘাতক চক্র ও দেশি-বিদেশি অপশক্তির তৎপরতা সম্পর্কে দেশবাসীকে সজাগ থাকারও আহ্বান জানান তারা। সিপিবি নেতারা বলেন, বর্তমান সরকারের দুঃশাসনে জনগণ অতিষ্ঠ। এরা জনগণের ভোটাধিকার হরণ করে আবারো একটি প্রহসনের নির্বাচন সংগঠিত করতে চাইছে। এর বিরুদ্ধে আমরা দীর্ঘদিন ধরে-গোটা নির্বাচন ব্যবস্থার সংস্কার, দুঃশাসন হটানো ও ব্যবস্থা বদলের সংগ্রাম করে আসছি। সরকার জনগণের কথাকে উপেক্ষা করে সভা-সমাবেশের অধিকার নিয়ন্ত্রণ, হরণ, হামলা-মামলা দিয়ে দেশকে আরেক অরাজকতার দিকে ঠেলে দিচ্ছে। এ জন্য প্রয়োজন মতো নানা অপশক্তিকে ব্যবহার করছে। নেতারা বলেন, গত ২৮ অক্টোবর ’৭১-এর ঘাতক রাজনীতিক দল জামায়াত বাধাহীনভাবে সমাবেশ করলেও বিএনপির সমাবেশ ভণ্ডুল হয়েছে। পল্টনে ছাত্রদের মিছিলে হামলা করা হয়েছে। এটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। বিবৃতিতে নেতারা গত শনিবারের সমাবেশকে ঘিরে পুলিশ হত্যা, সাংবাদিকদের ওপর হামলা, প্রধান বিচারপতির বাসভবন, সরকারি-বেসরকারি স্থাপনায় হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে এর সাথে প্রকৃতভাবে জড়িতদের চিহ্নিত ও শাস্তির দাবি করেন। একই সাথে তারা বলেছেন, বাধাহীনভাবে সভা সমাবেশ, হরতাল, অবরোধ করার অধিকার দেশবাসীর সাংবিধানিক অধিকার- এই অধিকার হরণ করে অতীতে কেউ ক্ষমতায় থাকতে পারেনি, আগামীতেও পারবে না। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা সরকারি প্রশাসনের দায়িত্ব, কোনো দলের নয়। পাল্টাপাল্টি সমাবেশ, আইনশৃঙ্খলা রক্ষার নামে সরকারি দলের নেতাকর্মীদের লাঠিশোটা হাতে অবস্থান ও বিরোধীদের ওপর হামলা করে পুরো পরিস্থিতিকে আরও উত্তপ্ত করে তোলা হয়েছে। সিপিবি বিএনপির মহাসিচব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ গ্রেফতারকৃত নেতাদের মুক্তির দাবি জানান। দলটির নেতারা বলেন, বিরোধী মত দমনে সরকারের স্বৈরাচারী আচরণ নানা অপশক্তিকে সুযোগ করে দেবে। দেশে অসাংবিধানিক শক্তিকে ক্ষমতা দখলের পথ পরিস্কার করবে, যা দুঃশাসনকে আরও দীর্ঘায়িত করবে। একমাত্র জনগণের শক্তিতে বলীয়ান হয়েই দুঃশাসনের অবসান, ব্যবস্থা বদলের সংগ্রামে অগ্রসর করা এবং জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব।