×

জাতীয়

ফের বাংলাবান্ধা-ফুলবাড়ি চেকপোস্ট দিয়ে ভারতীয় ভিসা বন্ধ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৭ অক্টোবর ২০২৩, ০৬:৫৯ পিএম

ফের বাংলাবান্ধা-ফুলবাড়ি চেকপোস্ট দিয়ে ভারতীয় ভিসা বন্ধ

সম্প্রতি আবারও বাংলাবান্ধা-ফুলবাড়ি ইমিগ্রেশন দিয়ে বাংলাদেশিদের জন্য টুরিস্ট ভিসা বন্ধ করেছে ভারতীয় হাইকমিশন। ফলে বিপাকে পড়েছেন বাংলাবান্ধা ইমিগ্রেশন দিয়ে ভারত, নেপাল, ভুটান মূখী হাজার হাজার পর্যটক সহ নানা শ্রেণি পেশার মানুষ। এ নিয়ে পঞ্চগড় চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি, বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর আমদানি- রপ্তানি গ্রুপ, দিনাজপুর চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি, ঠাকুরগাঁও চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি, নীলফামারী চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি আলাদা আলাদা ভাবে ফুলবাড়ি-বাংলাবান্ধা রুটে ভিসা প্রদানে লিখিত অনুরোধ জানিয়েছেন।

গত ২০ আগস্ট থেকে এ রুটে নতুন করে দেয়া হচ্ছে না ভিসা। পূর্বে যারা টুরিস্ট, ব্যবসা, মেডিকেল ভিসা করছেন মূলত তারাই এই ইমিগ্রেশনটি ব্যবহার করে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে যাচ্ছেন। তবে লিখিতভাবে ভিসা বন্ধের কথা বলা না হলেও গত ২ মাস ধরে এ রুট দিয়ে ভারতীয় হাইকমিশন ভারতীয় ভিসা দেয়া বন্ধ রেখেছে। যার কারণে এ রুট দিয়ে যাত্রী পারাপারও কমে যাচ্ছে দিন দিন। এছাড়াও ইমিগ্রেশন এলাকায় পড়েছে এর প্রভাব।

আবেদন সূত্রে জানা যায়, অপার সম্ভাবনাময় বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর ব্যবহার করে ভারতের ফুলবাড়ি রুট দিয়ে ব্যবসায়ীরা নানা কাজে ভারত যাতায়াত করে থাকেন। ভারতের সঙ্গে বিপুল ব্যবসায়ীক কার্যক্রমের সঙ্গে স্থানীয় কয়েক হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। ভিসা কার্যক্রম বন্ধ থাকায় অনেক মানুষই বেকার হয়ে পড়েছেন। এই এলাকার অসুস্থ রোগীদের অধিকাংশই ভারতীয় চিকিৎসকদের চিকিৎসা সেবা নিতে আগ্রহী। তারাও এই সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। অন্যদিকে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলা, আসাম, মেঘালয় সহ ভারতের বিভিন্ন এলাকায় উত্তর বঙ্গের এই জেলাগুলোর মানুষের নিকটয়াত্নীয়রাও বসবাস করেন। তাদের সাথেও দেখা সাক্ষাত করার জন্য বাংলাদেশীরা এই রুটে গমনাগমন করেন। ভারতের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বাংলাদেশের অসংখ্য শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছে। তারাও এই রুট ব্যাবহার করে যাতায়াতে স্বাচ্ছন্দ বোধ করে। এই রুট ব্যবহার করে ভারত,নেপাল, ভুটান, সিকিম, দার্জিলিং, কালিংপং সহ বিভিন্ন পর্যটন এলাকায় ভ্রমণ পিপাসী ভ্রমণ করেন। এতে ভারত, বাংলাদেশ উভয় দেশেরই রাজস্ব আয় হয়।

২০১৬ সালে বাংলাবান্ধা-ফুলবাড়ি রুটে প্রথম ভিসা কার্যক্রম শুরু হয়। পরে কোভিড-১৯ সমস্যায় তাদের সকল রুটে ভিসা বন্ধ করে দেয়। প্রায় দুই বছর বন্ধ থাকার পর চলতি বছরের এপ্রিল মাসে ফের ভিসা কার্যক্রম চালু হয়। দীর্ঘ দিন পর ভিসা প্রদান কার্যক্রম শুরু হলে স্থলবন্দরে উদ্দীপনা সৃষ্টি হয়। কিন্তু ১৫ থেকে ২০ দিন পর আবারও ভিসা দেয়া বন্ধ হয়ে যায়। ফলে আবার নানান সংকট পরেছে ব্যবসায়ী, জটিল রোগী সহ স্বজনরা, শিক্ষার্থী ও পর্যটকরা। তারা বলছে ভারত সরকার অন্যান্য রুট দিয়ে ভিসা প্রদান করে, কিন্তু বাংলাবান্ধা রুটে ভিসা বন্ধ রেখেছে। অন্য স্থলবন্দর দিয়ে যাতায়াত করলে তাদের সময় লাগে বেশি, অর্থও খরচ হয় বেশি। এ কারণে ফুলবাড়ি-বাংলাবান্ধা রুটে ভিসা প্রদানের অনুরোধ জানান তারা।

পঞ্চগড় প্রেসক্লাবের সভাপতি সাজ্জাদুর রহমান সাজ্জাদ কিডনি রোগে আক্রান্ত। সম্প্রতি চিকিৎসার জন্য চেন্নাই যাবেন তিনি। এজন্য ভারতীয় ভিসার আবেদন করলে তাকে চেংরাবান্ধা-বুড়িমারী রুটে ভিসা দেয়া হয়। তিনি বলেন আমার বাড়ি পঞ্চগড়। বাংলাবান্ধা-ফুলবাড়ি রুটে ভিসা দিলে আমি ৬০ কিলোমিটারের মধ্যে ভারতের বাগডোগরা বিমানবন্দর দিয়ে চেন্নাই যেতে পারতাম। এখন আমাকে প্রায় ৩’শ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে বাগডোগরা যেতে হবে। এ জন্য সময় এবং অর্থ অনেক বেশি খরচ হয়ে যাবে।

বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক ও বাংলাবান্ধা ইউপি চেয়ারম্যান কুদরত-ই খুদা মিলন জানান, বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরে ভিসা প্রদান খুবই জরুরি কারণ দেশের একমাত্র চতুর্দেশীয় স্থলবন্দর। ব্যবসা, চিকিৎসা, ভ্রমণ এবং ভারতের বিভিন্ন স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখার জন্য বাংলাদেশী শিক্ষার্থীরা যাতায়াতের জন্য এই রুট ব্যবহার করে। কারণ খরচ কম। কিন্তু এই রুটে ভারতীয় ভিসা না দেয়ার কারণে আমরা নানা সংকটে পড়েছি । এই রুটে ভিসা প্রদানের জন্য চার জেলার ব্যবসায়ীরা ভারতীয় দূতাবাসে আবেদনের মাধ্যমে অনুরোধ জানিয়েছি। আশাকরি তারা আমাদের সংকটগুলো অনুধাবন করে ব্যবস্থা নিবেন।

বাংলাবান্ধা ইমিগ্রেশনের অফিসার ইনচার্জ নজরুল ইসলাম জানান, এই ইমিগ্রেশন দিয়ে প্রতিদিন ২ থেকে ৩ হাজার যাত্রী যাতায়াতের ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু ভারতীয় দূতাবাস ভিসা না দেয়ায় হাজার হাজার মানুষ অসুবিধায় আছেন। পুনঃরায় ভারতীয় ভিসা দেয়া হলে অনেকেই উপকৃত হবেন। আমরা ইমিগ্রেশনের পক্ষ থেকে যাত্রীদের সব ধরনের সহযোগিতা করতে সব সময় প্রস্তুত আছি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App