×

জাতীয়

নারীর ক্ষমতায়নে কর্মক্ষেত্রে নজীরবিহীন ধারা সূচিত হয়েছে

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৫ অক্টোবর ২০২৩, ০৫:৫৫ পিএম

নারীর ক্ষমতায়নে কর্মক্ষেত্রে নজীরবিহীন ধারা সূচিত হয়েছে

আওয়ামী লীগ সরকার জন-বান্ধব ও নারীর ক্ষমতায়নের কাজ করে চলেছে, জাতির পিতার দর্শনানুযায়ী দেশের অর্ধেক জনগোষ্ঠী নারীর অর্থনৈতিক, সামাজিক পারিবারিক ও রাজনৈতিক ক্ষমতায়নে বর্তমান সরকারের বিভিন্ন কর্মকাণ্ড হাতে নেয়ার নজীরবিহীন ধারা সূচিত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বুধবার (২৫ অক্টোবর) জাতীয় সংসদে এমপি খালেদা খানমের এক লিখিত প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন। এসময় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী সংসদ অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'জাতির পিতা ১৯৭২ সালে সংবিধান প্রণয়নের সময়েই নারীদের ক্ষমতা ও মর্যাদা বাড়ানোর জন্য বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছিলেন। বাংলাদেশের সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১৯, ২৭, ২৮, ২৯ ও ৬৫(৩) এ নারীদের বিশেষ অধিকারের কথা বলা হয়েছে। বর্তমান সরকার ২০০৯ সাল থেকে ক্ষমতায় আসার পরপরই নারীদের অনেক গুরুত্বপূর্ণ পদে পদায়ন করেছে। বর্তমান জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রী, স্পিকার, বিরোধী দলীয় নেতাসহ একজন পূর্ণমন্ত্রী, দুইজন প্রতিমন্ত্রী ও একজন উপমন্ত্রী রয়েছেন যারা নারী। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ বিদেশের বিভিন্ন দূতাবাসে নারীদের পদায়ন করা হয়েছে। বিভিন্ন সরকারি চাকরিতে কর্মক্ষেত্রের উপযোগিতা বিবেচনা করে নারীদের জন্য বিশেষ কোটার ব্যবস্থাও রয়েছে।'

শেখ হাসিনা জানান, বর্তমান সরকার ২০০৯ সালে ক্ষমতা গ্রহণের পর মহিলাদের ক্ষমতা ও সম্মান বাড়ানোর জন্য নিম্নলিখিত আইনগুলো প্রণয়ন করেছে। যার মধ্যে রয়েছে: স্থাণীয় সরকার, পৌরসভা, সিটি কর্পোরেশন. ইউনিয়ন পরিষদ আইন ২০০৯ এর ৭, ৩০ ও ১০ ধারা অনুযায়ী নারীদের জন্য সংরক্ষিত আসনের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। সিটিজেনশিপ এক্ট ২০০৯ অনুযায়ী বিভিন্ন ক্ষেত্রে সন্তানের বাবার নামের সঙ্গে সঙ্গে মায়ের নামও জুড়ে দেয়া হয়েছে। নারীদের উত্যক্ত করা রোধে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে শাস্তির ব্যবস্থা করা, পারিবারিক সহিংসতা আইন ২০১০ এর আওতায় নারীদের সুরক্ষার ব্যবস্থা ,করা। সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে (৬৫ এর ৩) ধারা মতে জাতীয় সংসদের নারী এমপিদের সংরক্ষিত আসন ৪৫ থেকে বাড়িয়ে ৫০ করা হয় এবং সপ্তদশ সংশোধনীর মাধ্যমে সংরক্ষিত নারী আসন আরো ২৫ বছর নিশ্চিত করা হয়। আইন করে নারী পাচার বন্ধ করার হয়েছে, হিন্দু নারীদের বিবাহ রেজিস্ট্রেশন বাধ্যতা মূলক করা হয়েছে, পিতা মাতার ভরন পোষণ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে, অন্যথায় ১ লাখ টাকা অর্থদণ্ড ও ৩ মাসের কারাদণ্ডের ব্যবস্থা করা হয়েছে, বাল্যবিবাহ রোধে আইন প্রণয়ন করা হয়ে, যৌতুক নিরোধ আইন, নারী-শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০২০ প্রণয়ন, কর্মরত মহিলাদের শিশুদের জন্য দিবা-যত্ন কেন্দ্র আইন-২০২১ প্রণয়ন, জেলা পরিষদ আইন ২০২২ মাধ্যমে এক তৃতীয়াংশ নারী সদস্য রাখার বিধান রাখা , এভিডেন্স এক্ট-২০২২ সংশোধন করে ধর্ষণ মামলায় ভিকটিমকে জেরাকালে তার চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন তোলার সুযোগ বন্ধ করারা, পারিবারিক আদালত আইন-২০২৩ পাশ করে মহিলাদের বিবাহ বিচ্ছেদ, দাম্পত্য অধিকার ফিরিয়ে দেয়া, দেন মোহর, ভরন পোষণ ইত্যাদি নিশ্চিত করা , বৈদেশিক কর্মসংস্থান ও অভিবাসী আইনের মাধ্যমে নারী অভিবাসীদের মর্যাদা রক্ষা, সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থায় নারীদের সুবিধা দেয়া, নারীদের মাতৃত্বকালীন ছুটি ৪ মাস থেকে বাড়িয়ে ৬ মাস করা, কর্মক্ষেত্রে নারীদের যৌন হয়রানী প্রতিরোধে একটি কমিটি গঠন, নারীদের হয়রানী বন্ধে বিভাগীয় শহরে মহিলা সহায়তা কেন্দ্র স্থাপন, ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টার , কমিউনিটি ক্লিনিক চালু করে নারী-শিশুদের স্বাস্থ্য সহায়তা বৃদ্ধি, সংবিধানে ৩১ অুনচ্ছেদে নারীদের বিরুদ্ধে কোন অপরাধ বিচারে ১০১ টি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল গড়া হয়েছে। এছারা নারীদের উচ্চ বিচারালয়ে বিচারপতি নিয়োগ দেয়া , সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় নারীদের নানা ধরনের সুবিধা- সহায়তা দেয়া , তার মধ্যে ক্ষুদ্র ঋণ, সেলাই মেশিন, স্বেচ্ছাসেবী মহিলা সমিতির মধ্যে অনুদান দেয়া , দুঃস্থ ও মহিলা ও শিশুদের জন্য তহবিল গঠন করা , নানা ধরনের দক্ষতা ভিত্তিক প্রশিক্ষণ ইত্যাদি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নারীর ক্ষমতায়ন ও সম্মান বাড়ানোর জন্য নানাবিধ পদক্ষেপ নেয়ার ফলে নারীদের সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অবস্থানে ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। বর্তমান সরকারের আমলে সরকারে উচ্চ পর্যায় থেকে শুরু করে সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে নারীর ক্ষমতায়ন বাড়ানো হয়েছে।' তিনি আরো বলেন, 'নারী স্বাবলম্বী হচ্ছেন, তারা সুবিচার পাচ্ছেন, নারী পুরুষের বৈষম্য দুর করা হচ্ছে।'

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App