×

জাতীয়

বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা ভারতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৬ অক্টোবর ২০২৩, ০৩:৩৭ পিএম

বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা ভারতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ
বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক অন্য কোনো দেশের সঙ্গে সম্পর্কের তুলনা চলে না। আকাশও এ দুদেশের সম্পর্কের সীমারেখা নয়। তবে বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা ভারতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।ভারত বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে সম্মান করে। সোমবার নয়াদিল্লিতে সফররত বাংলাদেশি সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা এসব কথা বলেন। মতবিনিময় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচী, যুগ্ম-সচিব (বাংলাদেশ-মিয়ানমার বিভাগ) স্মিতা পান্ত, পরিচালক (বাংলাদেশ-মিয়ানমার বিভাগ) নবনীতা চক্রবর্তী প্রমুখ। বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় নির্বাচন এবং এ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোর তৎপরতা ও এ প্রেক্ষাপটে ভারতের ভূমিকা প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে মুখপাত্র অরিন্দম বাগচী বলেন, বাংলাদেশের বিষয়ে সেদেশের জনগণই সিদ্ধান্ত নেবে। আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের সম্পর্ক বাংলাদেশের সঙ্গে, সেদেশের জনগণের সঙ্গে। এখানে কোনো দলের প্রশ্ন নয়। আমাদের কাজ বাংলাদেশ-ভারতের সম্পর্কোন্নয়ন করা। দুদেশের সরকারই তা করে চলেছে। বাংলাদেশের তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রসঙ্গে আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ভারতের সংবিধানে এমন কিছু নেই, তাই ভারতে এমন কিছু হয় না। এক্ষেত্রে বাংলাদেশের সংবিধানে যা বলা আছে, হয়তো সেটাই হবে। বাংলাদেশ-চীন সম্পর্কের বিষয়ে অরিন্দম বাগচী বলেন, চীনের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়টি বাংলাদেশের নিজস্ব ব্যাপার। এ নিয়ে আমাদের কোনো মন্তব্য নেই। যদি তারা মনে করে তাদের ভালো, তবে তারা সেটা বেছে নেবে। কিন্তু ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক অন্য কোনো দেশের সঙ্গে তুলনা চলে না। ব্রিকসে বাংলাদেশের সদস্যপদ না পাওয়ার ক্ষেত্রে ভারতের বিরোধিতা ছিল বলে ছড়ানো তথ্যকে নাকচ করে দিয়ে তিনি বলেন, যারা এসব তথ্য ছড়ায় তারা ব্রিকসের সম্প্রসারণ প্রক্রিয়া জানে না। ভারত কেন বাংলাদেশের বিরোধিতা করবে। বরং সুযোগ পেলেই বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে চায়। তারই অংশ হিসেবে নয়াদিল্লিতে জি-২০ সম্মেলনে বাংলাদেশকে বিশেষভাবে আমন্ত্রণ জানিয়েছে ভারত। নিরাপত্তা, যোগাযোগ এবং উন্নয়ন সহায়তার মতো খাতগুলোতে বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্কের অগ্রগতি তুলে ধরে স্মিতা পান্ত বলেন, গত সাত-আট বছর নতুন মাত্রায় এগোচ্ছে। হয়তো কখনো একটু ধীর কখনো দ্রুত গতিতে এগিয়েছে, কিন্তু এগিয়েছে। উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের ৪৬টি প্রকল্প চলমান। এছাড়া ৬৪টি ক্ষুদ্র বিনিয়োগও আছে। দুই দেশের যোগাযোগ খাতে ভারত বেশকিছু প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে এবং করছে উল্লেখ করে তিনি জানান, চিলাহাটি-হলদিবাড়ি রেল যোগাযোগ, ত্রিপুরার সঙ্গে রেল ও নদীপথের যোগাযোগ উল্লেখযোগ্য। সবশেষ দুই বছর উন্নয়ন খাতে ভারত অনেক কাজ করেছে। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে গড়ে ওঠা বাংলাদেশ-ভারতের সম্পর্কের শেখড় অনেক গভীরে প্রোথিত উল্লেখ করে তিনি বলেন, ইভেন দ্য স্কাই ইজ নট দ্য লিমিট ইন দিস রিলেশনশিপ (এমনকি আকাশও এই সম্পর্কের সীমারেখা নয়)। কোভিড-১৯ মহামারিকালেও বাংলাদেশে ভারতের উন্নয়ন সহায়তা কার্যক্রম থেমে থাকেনি বলে জানান তিনি। স্মিতা পান্ত তৃতীয় দেশে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের ভারতের কলকাতা ও দিল্লি বিমানবন্দর ব্যবহার করার সুযোগ দেওয়ার পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করেন। এই কর্মকর্তা বলেন, দুই দেশের জনগণের সম্পর্ক কীভাবে আরও সহজ করা যায় সেটা নিয়েও কাজ করছে ভারত। ভারতে আসার জন্য এখন ডলার আনার দরকার নেই। টাকা-রুপি কার্ড চালু হয়ে গেলে ভ্রমণকারীরা ক্যাশলেস লেনদেন করতে পারবেন। তিনি জানান, ভারত এখন নিত্যনতুন উদ্ভাবন, সবুজ জ্বালানি, প্রযুক্তি প্রভৃতি দিকে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে। এছাড়া বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য ভারত স্কলারশিপ ভবিষ্যতে আরও বাড়াবে বলে জানান স্মিতা পান্ত। তিনি বলেন, বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলোতে এখন উন্নয়ন হচ্ছে এবং বাংলাদেশ সেখানেও বিনিয়োগ করছে। বাংলাদেশিদের জন্য ভারতের ভিসা সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ভারত গত বছর ১৬ লাখ বাংলাদেশির ভিসা ইস্যু করেছে। সম্প্রতি ভিসা নিয়ে যে সমস্যা তৈরি হয়েছে তা সাময়িক। শিগগির এটা স্বাভাবিক হয়ে যাবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App