×

জাতীয়

বাঁশ-দড়িতে টিকে আছে ছাদ, তৎপরতা নেই প্রশাসনের

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১০ অক্টোবর ২০২৩, ০৭:০৯ পিএম

বাঁশ-দড়িতে টিকে আছে ছাদ, তৎপরতা নেই প্রশাসনের

ছবি: ভোরের কাগজ

বাঁশ-দড়িতে টিকে আছে ছাদ, তৎপরতা নেই প্রশাসনের
বাঁশ-দড়িতে টিকে আছে ছাদ, তৎপরতা নেই প্রশাসনের
বাঁশ-দড়িতে টিকে আছে ছাদ, তৎপরতা নেই প্রশাসনের

একটু বৃষ্টি হলে ভিজে জবজবে হয়ে ফোটাফোটা পানি পড়ছে, মাঝেমধ্যেই পলেস্তারা খসে পড়ছে, বাঁশের সঙ্গে কাঠের তক্তা দিয়ে পলেস্তারা আটকিয়ে রাখা, খুঁটিগুলোকে বাঁশের সঙ্গে দড়িতে বেঁধে কোনমতে ছাদটিকে আটকিয়ে রেখে বড় দুর্ঘটনা থেকে রক্ষার চেষ্টা- এমনই জরাজীর্ণ দৃশ্য চোখে পড়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলে।

হলের প্রধান ভবনের মূল ফটক পেরুলে শিনশেডের দিকে যাওয়ার সময় এই দৃশ্যটি দেখা যায়। ১৪ ফুট প্রস্থ ও ২৭৮ ফুট দৈর্ঘ্যের এই ছাদটির অবস্থা এখন ভগ্নদশা। ভারী বৃষ্টিপাত, ভূমিকম্পসহ যেকোন কারণেই হঠাৎ ভেঙ্গে পড়তে পারে হলের এই অংশের ছাদটি। প্রধান ভবনের মূল ফটক থেকে টিনশেডের দিকে যাওয়ার এটিই প্রধান রাস্তা। তবে বৃষ্টির দিনে এটিই একমাত্র পথ হয়ে দাঁড়ায়।

এটির সংস্কারহীন অবস্থা হলের শিক্ষার্থীসহ সংশ্লিষ্ট সকলের মনে আতঙ্ক সৃষ্টি করছে। এদিকে এটি নিয়ে তৎপরতা নেই প্রশাসনের। হল প্রশাসন থেকে বারবার প্রকৌশলী শাখায় আবেদন করার পরেও প্রশাসনিক দীর্ঘসূত্রিতার কারণে কাজ হচ্ছে না বলে অভিযোগ সংশ্লিষ্টদের।

হল সূত্রে জানা যায়, হল তৈরির সময় নির্মিত এই অংশটুকু সংস্কারের জন্য হল প্রশাসন থেকে গত ২৮ মার্চ প্রকৌশলী শাখায় আবেদন জানানো হয়। তবে এখনো সংস্কারের কোনো আভাস পাননি হল কর্তৃপক্ষ। পলেস্তারা খসে পড়ায় হল প্রশাসনের উদ্যোগে কয়েকবার পলেস্তারা লাগানো হয়। তবে সেটি দীর্ঘদিন স্থায়ী হয়নি। এরপরে বাঁশ ও দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছে। এতে সংকুচিত হয়েছে চলাচলের রাস্তা। হাঁটতে গিয়ে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন হলটির শিক্ষার্থীরা।

এ বিষয়ে হলের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী মো. ইমাম হোসেন রাকিব বলেন, প্রায় আট নয় মাস থেকে ছাদটিতে খুঁটি দিয়ে রাখা হয়েছে। বৃষ্টির দিনে ছাদের নিচে বৃষ্টি পড়ে। পলেস্তারা খসে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন স্থানে লোহার রডও খসে যাচ্ছে৷ অথচ এই রাস্তা ব্যবহার করছি প্রতিদিন। প্রচুর ভয়ে আছি কোন দিন না এটা ভেঙ্গে পড়ে। এটি দ্রুত সংস্কার করা জরুরি।

এটি দ্রুত সংস্কার করা না হলে জগন্নাথ হল ট্রাজেডির মতো জহুরুল হক হলে বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে মন্তব্য করে চতুর্থ বর্ষের আরেক শিক্ষার্থী মিজানুর রহমান বলেন, একটি হলের কয়েকশত শিক্ষার্থী যেটা প্রতিদিন ব্যবহার করছে, এবং সেটি দৃশ্যমান ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে, সেটি নিয়ে প্রশাসন কেন কাজ করছে সেটা অনেকটা অবাক করার মতো। বড় কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে তার দায়ভার কে নেবে? আমরা চাই, এটি ভেঙ্গে নতুন করে করা হোক।

এ বিষয়ে হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আব্দুর রহিম বলেন, প্রকৌশলী শাখায় সাত মাস আগেই লিখিত আবেদন করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার বিষয়টি মাথায় রেখে বারবার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দ্রুত কাজ করার জন্য অনুরোধও জানিয়েছি। তারা বলছে কাজ এগুচ্ছে। কিন্তু, দীর্ঘসময় পরেও সংস্কারের কাজ শুরু হয়নি যা হতাশাজনক। এই ধরনের ঝুঁকিপূর্ণ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের গতানুগতিক বিধি-নিয়ম হালকা করে দ্রুত কাজ সম্পন্ন হওয়া উচিত বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশলী শাখায় যোগাযোগ করা হলে নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মেরাজ উদ্দীন বলেন, অফিসিয়ালি নির্দিষ্ট কিছু প্রক্রিয়া অনুসরণ করে একটি ফাইল পাশ হয়ে কাজ শুরু হতে একটু সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। জহুরুল হক হলের ফাইলটির কাজ চলমান আছে। হয়তো অল্প কিছুদিনের মধ্যে সংস্কারের কাজ শুরু করা যাবে।

সার্বিক বিষয়ে উপাচার্যের রুটিন দায়িত্বে থাকা উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন, শিক্ষার্থীদের স্বার্থ ও নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট কাজগুলো যত দ্রুত করা যায় সেটা তত ভালো। আমি হলের বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে দ্রুত করে দেওয়ার ব্যবস্থা করব।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App