×

জাতীয়

অনুবাদ সাহিত্যের বিকাশ ও উন্নয়নে বিটিএফ-পাঞ্জেরীর যৌথ উদ্যোগ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৪ অক্টোবর ২০২৩, ১০:০৩ পিএম

অনুবাদ সাহিত্যের বিকাশ ও উন্নয়নে বিটিএফ-পাঞ্জেরীর যৌথ উদ্যোগ

বাংলা ভাষার অনুবাদ সাহিত্যের বিকাশ ও উন্নয়নে একটি সমঝোতা স্মারক এবং এর আলোকে একটি অনুবাদ কার্যক্রম বাস্তবায়ন নীতিমালা স্বাক্ষর করেছে বাংলা ট্রান্সলেশন ফাউন্ডেশন (বিটিএফ) ও পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স।

বুধবার (৪ অক্টোবর) বিকেলে বাংলা একাডেমির কবি শামসুর রাহমান সেমিনার কক্ষে এই সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর ও কার্যক্রমে ঘোষণা বিষয়ক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন বাংলা ট্রান্সলেশন ফাউন্ডেশনের সভাপতি অধ্যাপক খালিকুজ্জামান ইলিয়াস, ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিষদের সদস্য লেখক-অনুবাদক ফারুক মঈনউদ্দীন, ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা কবি কামাল চৌধুরী, কবি ও প্রাবন্ধিক অধ্যাপক হায়াৎ মামুদ, পাঞ্জেরী পাবলিকেশনস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কামরুল হাসান শায়ক, বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির (বাপুস) সাবেক সভাপতি আলমগীর শিকদার লোটন প্রমুখ। লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন বাংলা ট্রান্সলেশন ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক মোজাফফর হোসেন। সঞ্চালনা করেন ফাউন্ডেশনের সদস্য দিলশাদ চৌধুরী।

খালিকুজ্জামান ইলিয়াস বলেন, আজকের এই উদ্যোগ অনুবাদ সাহিত্যের জন্য মহতী উদ্যোগ। ফাউন্ডেশন এবং পাঞ্জেরীর অভিজ্ঞতা, দক্ষতা ও একাগ্রতা মিলিত হয়ে অনুবাদ সাহিত্যের জন্য সুখবর বয়ে আনবে বলে আমার বিশ্বাস। বর্তমান সরকার অনুবাদ-বান্ধব, আমাদের উচিত হবে সরকারিভাবেও পৃষ্ঠপোষকতা গ্রহণ করা।

কবি কামাল চৌধুরী বলেন, অনুবাদ পড়েই আমাদের বিশ্বসাহিত্যের সাথে পরিচয় ঘটেছে। আমাদের দেশেও বিশ্বমানের সাহিত্য রয়েছে। কিন্তু মানসম্মত অনুবাদের কারণে সেগুলি বিশ্ব দরবারে পৌঁছে দিতে পারছি না। এ ধরনের কার্যক্রমের মাধ্যমে দেশের সাহিত্যকে বিশ্ব পরিমণ্ডলে পৌঁছে দিতে পারলেই আমাদের সার্থকতা।

কামরুল হাসান শায়ক বলেন, অনুবাদের বই প্রকাশের ক্ষেত্রে যতখানি মনোযোগ ও সতর্কতা দাবি রাখে, তা হয়নি বেশিরভাগ বইয়ে। অবশ্য অনুবাদ ও ইংরেজি সাহিত্যে পাঠকদের উচ্ছ্বাস অনেক। তারা ঠিকই নতুন গ্রন্থের খোঁজ করেন। বাংলা সাহিত্য এতো সুন্দর ও সমৃদ্ধ সাহিত্য, শুধু তার প্রচার নেই দেখে তা ছড়িয়ে পড়েনি। আবার ইংরেজি থেকে বাংলা অনুবাদও অনেক অনুন্নত। সেই জায়গাটি থেকে আমরা চেষ্টা করবো অনুবাদের বইগুলো প্রকাশ করা এবং দেশে ও বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দেওয়ার।

সংবাদ সম্মেলনের শুরুতেই এ দুটি প্রতিষ্ঠানের যৌথ কার্যক্রমের ‘ঘোষণাপত্র’ উপস্থাপন করেন মোজাফ্ফর হোসেন। তিনি জানান, দেশের অনুবাদ সাহিত্যের সমৃদ্ধিতে বাংলা ভাষার দেশি-বিদেশি অনুবাদক এবং অনুবাদক-বিষয়ক সংস্থাগুলোকে একটি প্ল্যাটফর্মে এনে সমন্বিতভাবে কাজ করা; অনূদিত বইয়ের ডাটাবেজ, অনুবাদক কোষ ও পরিভাষা অভিধান তৈরি; অনুবাদ বিষয়ক কর্মশালা ও সভা-সেমিনারের আয়োজন করা; অনুবাদ বিষয়ক পত্র-পত্রিকা প্রকাশ; অনুবাদ সাহিত্যে সম্মাননা প্রদানসহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাজ করা হবে এই সমঝোতা চুক্তির আওতায়। তিনি আরো জানান, বাংলা সাহিত্যের অনুবাদে কাজ করা বিদেশি অনুবাদকদের রেসিডেন্সি প্রদান; অনুবাদকদের প্রকাশনা-জনিত সহযোগিতা প্রদান; অনুবাদকদের সম্পাদনায় সহযোগিতা প্রদান; আন্তর্জাতিক ও জাতীয় অনুবাদক সম্মেলনের আয়োজন করা প্রভৃতি কাজও এ দুটি প্রতিষ্ঠান যৌথভাবে সম্পাদন করবে।

মোজাফফর হোসেন বলেন, দুটি প্রতিষ্ঠানের সক্ষমতা, অভিজ্ঞতা ও বৈশ্বিক যোগাযোগ এখন একসঙ্গে কাজ করবে দেশে- বিদেশে বাংলা সাহিত্যের অনুবাদক সৃষ্টি, ইংরেজিসহ পৃথিবীর অন্যান্য ভাষায় বাংলা সাহিত্যের অনুবাদ ও বাজার তৈরি এবং বাংলা ভাষার অনুবাদ সাহিত্যের সমৃদ্ধিতে। আমরা মনে করি, স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছরে এসে বাংলাদেশ সামাজিক- অর্থনৈতিক নানা সূচকে বিশ্বে মাথা তুলে দাঁড়াতে সক্ষম হয়েছে। কিন্তু বিশ্বসাহিত্যের মানচিত্রে বাংলা ভাষার সাহিত্য ও সংস্কৃতি এখনো কাঙ্ক্ষিত পরিচিতি সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়নি। সক্ষমতা সত্ত্বেও বাংলা সাহিত্যের আন্তর্জাতিকতায় পিছিয়ে থাকার অন্যতম প্রধান কারণ ইংরেজিসহ পৃথিবীর অন্যান্য ভাষায় বাংলা সাহিত্যের পর্যাপ্ত মানসম্পন্ন অনুবাদ না হওয়া এবং ইউরোপ- আমেরিকায় বাংলা সাহিত্যের অনুবাদের বাজার সৃষ্টি করতে না পারা।

এক্ষেত্রে, পাঞ্জেরী- বিটিএফ যৌথভাবে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে বাংলা সাহিত্যের আন্তর্জাতিকীকরণে কাজ করবে। এছাড়াও, বাংলাদেশের অনুবাদ সাহিত্যে মেধাস্বত্ব লঙ্ঘন, পাইরেসি, চৌর্যবৃত্তি, অসম্পাদিত গ্রন্থপ্রকাশ- সহ নানা ধরনের নৈরাজ্য দেখা যায়; সেখানেও কাজ করবে এ দুটি প্রতিষ্ঠান।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App