×

জাতীয়

হিন্দু আইন সংস্কারে বাধা আসবে, এগিয়ে যেতে হবে

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০২:৩১ পিএম

হিন্দু আইন সংস্কারে বাধা আসবে, এগিয়ে যেতে হবে

বাংলাদেশ হিন্দু আইন সংস্কার পরিষদের প্রথম দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করছেন ভোরের কাগজ সম্পাদক ও জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত। ছবি: ভোরের কাগজ

হিন্দু আইন সংস্কারে বাধা আসবে, এগিয়ে যেতে হবে
হিন্দু আইন সংস্কারে বাধা আসবে, এগিয়ে যেতে হবে
হিন্দু আইন সংস্কারে বাধা আসবে, এগিয়ে যেতে হবে
হিন্দু আইন সংস্কারে বাধা আসবে, এগিয়ে যেতে হবে

পিতার সম্পত্তিতে নারীর অধিকার, বিবাহ বিচ্ছেদের পর নারীকে পুনরায় বিয়ের সুযোগসহ নানা দাবি নিয়ে হিন্দু আইন সংস্কারের উদ্যোগে যে বাধা আসবে, তা অতিক্রম করে এগিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ভোরের কাগজ সম্পাদক ও জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত।

বাংলাদেশ হিন্দু আইন সংস্কার পরিষদের প্রথম দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনের সময় এ আহ্বান জানান তিনি। হিন্দু আইন সংস্কার আন্দোলনের পথিকৃৎ ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের ২০৩তম জন্মজয়ন্তীর যুগপৎ আয়োজন হিসেবে এ সম্মেলনের স্লোগান ছিল ‘বিদ্যাসাগরের পথ ধরে’।

শুক্রবার (২৯ সেপ্টম্বর) রাজধানীর সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সাবেক সভাপতি মিলন কান্তি দত্ত। বাংলাদেশ হিন্দু আইন সংস্কার পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক ড. ময়না তালুকদারের সভাপতিত্বে সম্মেলনে আরো বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক পুলক ঘটক, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুন নূর দুলাল প্রমুখ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক সাংবাদিক সুভাষ সাহা।

বিদ্যাসাগরের উদ্ধৃত উল্লেখ করে শ্যামল দত্ত প্রবন্ধে তুলে ধরেন, শুধু বিধবার জন্য দ্বিতীয় বিশ্বের বিধান নয়, আরো বিভিন্ন কারণে নারীকে দ্বিতীয়বার বিয়ের নির্দেশনা আছে। কোন কোন ক্ষেত্রে স্ত্রী পরিত্যাগ করা যাবে তার নির্দেশনা বিভিন্ন শাস্ত্রে উল্লেখ আছে। বিদ্যাসাগরের দেখানো পথে যখন আমরা প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটিয়ে নারীকে নিজের মতো বাঁচতে দেয়া বা পুনরায় বিয়ের সুযোগ সৃষ্টির জন্য আইন প্রণয়নের পক্ষে কথা বলছি, এখনো একটি মহল শাস্ত্র মানতে রাজি নয়। তাদের সেই পুরাতন কথা, ‘হিন্দু বিয়ে জন্মজন্মান্তরের বন্ধন।’ কিন্তু তাদের যুক্তি মতে বন্ধনটা কিন্তু শুধুই নারীর জন্য। পুরুষের কোনো বন্ধন নেই - তারা চাইলে স্ত্রী থাকা সত্ত্বেও যতগুলো ইচ্ছে বিয়ে করতে পারে, এমন কি রক্ষিতাও রাখতে পারে।

তিনি বলেন, বিধবা বিবাহের পক্ষে বিদ্যাসাগরের আবেদনে সহ-স্বাক্ষর করেছিলেন মোটে ৯৮৭ জন ব্যক্তি। আর এ আবেদনের বিরোধিতাকারী পাল্টা আবেদনপত্রে স্বাক্ষর করেছিলেন প্রায় ৩৬০০০ ব্যক্তি। আইনটি পাস হওয়ার ২০০ বছর পরে আজ আমরা দেখছি, বিধবা বিবাহের অধিকার দেয়া অন্যায় হয়েছিল- এরকম কথা কেউ বলছে না। আর সতীদাহ সম্পর্কে কি বলব? সতীদাহ বলতে অতীতে আদৌ কিছু ছিল, আমাদের দাদারা তা এখন পুরোপুরি অস্বীকার করতে চান।

‘শুধু বিধবা বিবাহ আন্দোলন নয়, বাল্যবিবাহ এবং পুরুষদের বহুবিবাহের বিরুদ্ধেও বিদ্যাসাগর ধারালো কলম চালিয়েছেন, প্রাণপণ লড়েছেন। ভারত স্বাধীন হওয়ার পর ভারতে নতুন করে হিন্দু আইন প্রণয়ন করা হয় এবং বহুবিবাহ নিষিদ্ধ করা হয়। কিন্তু বাংলাদেশের হিন্দু আইন এখনো সেই তিমিরেই রয়ে গেছে।’ তিনি যোগ করেন।

আশাবাদ ব্যক্ত করে শ্যামল দত্ত বলেন, বিশ্বাস করি হিন্দু আইনের আওতাধীন নারীদের সমঅধিকারের জন্য আমরা যেসব সংস্কার দাবি করছি তা শতভাগ বাস্তবায়িত হবে। জনগণ তা গ্রহণ করবে এবং উপকার পাবে। তারপর একদিন আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মও অবাক হয়ে ভাববে, এমনও একটি সময় ছিল যখন নারী হয়ে জন্মানোর কারণে সমাজের অর্ধেক মানুষের পিতার সম্পত্তি লাভের অধিকার ছিল না! তারা ভেবে আরো আশ্চর্য হবে, তাদের পূর্বপুরুষদের অনেকে এ পরিবর্তনের বিরোধিতা করেছিল!

হিন্দু আইন সংস্কার আন্দোলনের কর্মীদের উদ্দেশে মিলন কান্তি দত্ত বলেন, সাহস হারাবেন না। যারা বিরোধিতা করছে, সেটা সময়ের স্বীকার। তাদের অনেকই হিন্দু বিবাহ রেজিষ্ট্রেশনের বিরোধিতা করেছেন। কিন্তু এখন তারাই বিবাহ রেজিষ্ট্রেশনের জন্য মন্দিরের (ঢাকার ঢাকেশ্বরী মন্দির) সামনে ঘুরে। তার দাবি, হিন্দু বিবাহ নিবন্ধন আইন পালনে বাধ্যবাধকতা করা প্রয়োজন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App