×

জাতীয়

ট্যাপেন্টাডলে ঝুঁকছে ইয়াবা সেবনকারীরা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৫:৪৮ পিএম

ট্যাপেন্টাডলে ঝুঁকছে ইয়াবা সেবনকারীরা

ট্যাপেন্টাডলে ঝুঁকছে ইয়াবা সেবনকারীরা, সবচেয়ে বড় চালানসহ শাহজালালে গ্রেপ্তার ৫। ছবি: ভোরের কাগজ

* মিরপুরসহ বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি হচ্ছে নিয়মিত * সবচেয়ে বড় চালানসহ শাহজালালে গ্রেপ্তার ৫

দীর্ঘ সময় ধরে দেশে ইয়াবার একক অধিপত্য থাকলেও গত কয়েক বছরে নিত্য নতুন মাদকের আবির্ভাব হতে দেখা গেছে। মূলত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজর ফাঁকি দিতেই নতুন মাদকের দিকে ঝোঁকে সেবনকারীরা। তবে বর্তমানে ট্যাপেন্টাডল নামে ভারতীয় একটি ট্যাবলেটের দিকে ঝুঁকছে মাদকসেবীরা। ‘খ’ শ্রেণির নিষিদ্ধ এই ট্যাবলেট ভারত থেকে অবৈধভাবে এনে ছড়িয়ে দেয়া হচ্ছে সারাদেশে। মাদকসেবীদের মধ্যেও ইয়াবা বিকল্প হিসেবে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে এটি। ব্যাথানাশক ওষুধ হওয়ায় পরিবহনে সুবিধা ও দাম ইয়াবার তুলনায় কিছুটা কম হওয়ায় ক্রমেই বাড়ছে এটির চাহিদা।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি) সূত্র বলছে, ইতিমধ্যে রাজধানীর মিরপুরসহ দেশের বেশ কয়েকটি জায়গায় ট্যাপেন্টাডোল সেবনকারী চক্র গড়ে উঠেছে। তাদেরকে আইনের আওতায় আনতে গোয়েন্দা নজরদারি শুরু করা হয়েছে।

সূত্র জানায়, ট্যাপেন্টাডল ট্যাবলেটের প্রতি পাতার ভারতীয় দাম ২৫০ রুপি। এগুলো অবৈধভাবে দেশে এনে প্রতি পিস ১৫০-২০০ টাকায় বিক্রি করা হয়ে থাকে।

এদিকে, ট্যাপেন্টাডলের সবচেয়ে বড় চালানসহ হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ডিএনসির ঢাকা মেট্রো (উত্তর)।

গ্রেপ্তাররা হলেন- চক্রের মূলহোতা সোলাইমান, হৃদয় ইসলাম রাজু, এ কে এম আবু সাইদ, আশীক সাইফ ও মো. ফারুক। বুধবার দিবাগত রাতে ৪২ হাজার ২০০ পিস ট্যাপেন্টাডল ট্যাবলেটসহ তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

ডিএনসি বলছে, এ চক্রের সদস্যরা সড়কপথে বৈধভাবেই ইমিগ্রেশন পার হয়ে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে যেতো। এরপর সেখান থেকে বিমানে করে বিপুল পরিমাণ ট্যাপেন্টাডল ট্যাবলেট নিয়ে দেশে ফিরতো। বিমানবন্দরে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সদস্যরা যারা তাদের ক্ষেত্রে কিছুটা বিনয়ী থাকে এ জন্য একজনকে রোগী সাজিয়ে আনতো। এভাবে প্রতি মাসে চক্রের সদস্যরা অন্তত চার-পাঁচবার ভারতে যাতায়াত করতো।

বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর তেজগাঁও এলাকায় ডিএনসির ঢাকা মেট্রো (উত্তর) কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির ঢাকা বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক মজিবুর রহমান পাটওয়ারী বলেন, গত আগস্ট মাসে এ চক্রের একজন সদস্যকে ফেনসিডিলসহ বিমানবন্দরে গ্রেপ্তার করা হয়।

পরে তাকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, একটি চক্র দীর্ঘদিন ধরে ভারত থেকে ট্যাপেন্টাডল ট্যাবলেট ও ফেন্সিডিল এনে দেশের বিভিন্ন জায়গায় সরবারহ করছে। পরে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে বিমানবন্দরের গ্রীন চ্যানেল এলাকা থেকে এই চক্রের মূলহোতাসহ ৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

মজিবুর রহমান পাটওয়ারী আরো বলেন, চক্রটি বিভাবে এই ট্যাবলেট বিক্রি করতো, এদের ক্রেতা কারা, কত দামে বিক্রি করা হতো, এসব বিষয়ে পরবর্তীতে রিমান্ডের জিজ্ঞাসাবাদে বেড়িয়ে আসবে।

ডিএনসির ঢাকা মেট্রো (উত্তর) কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. রাশেদুজ্জামান বলেন, চক্রের মূলহোতা সোলাইমান প্রতি মাসে ৪ থেকে ৫ বার কলকাতায় যাতায়াত করতো। এরপর বিভিন্ন পণ্যের আড়ালে ট্যাপেন্টাডলসহ অন্যান্য অবৈধ মাদক দেশে নিয়ে আসত। এ কাজে সে তার একাধিক সহযোগীকে ব্যবহার করতো। কখনো অন্য যাত্রীদের বিমানের টিকিট কেটে দিয়ে ও নগদ কিছু টাকা উপহার হিসেবে দিয়ে এই ট্যাবলেট বিমানবন্দর দিয়ে দেশে প্রবেশ করাতো।

অভিযানের নেতৃত্ব দেয়া ঢাকা মেট্রো (উত্তর) কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. মেহেদী হাসান বলেন, এই চক্রটি শুধু ট্যাপেন্টাডল ট্যাবলেটই নয়, বিভিন্ন নামীদামী টিকাও নিয়ে আসতো বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে। এ ধরনের আর কোনো চক্র নিষিদ্ধ এই ট্যাবলেট ছড়িয়ে দিচ্ছে কিনা কিনা সেটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলেও জানান ডিএনসি কর্মকর্তা।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App