×

জাতীয়

সব প্রতিষ্ঠান ও পাবলিক প্লেসে ব্রেস্ট ফিডিং কর্নার আবশ্যক

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৭:৫৩ পিএম

কর্মস্থল, এয়ারপোর্ট, বাসস্ট্যান্ড, রেলওয়ে স্টেশন, শপিং মলের মতো জনসমাগমস্থলে এবং সরকার নিয়ন্ত্রিত, পরিচালিত ও ব্যবস্থাপনায় বিধিবদ্ধ, স্বায়ত্তশাসিত ও সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ব্রেস্ট ফিডিং কর্নার স্থাপনের নির্দেশনা দিয়ে পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট।

বাংলাদেশের বিচারিক ইতিহাসে প্রথম ৯ মাসের কোনো শিশুর রিটে এই রায় দেয়া হয়। বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী ও বিচারপতি কাজী ইবাদত হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ মঙ্গলবার (১৯ সেপ্টেম্বর) ৬ পৃষ্ঠার এ রায় প্রকাশ করেন।

শিশুদের মাতৃদুগ্ধ পানের বিষয়টি অত্যন্ত সংবেদনশীল এবং গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে রায়ের পর্যবেক্ষণে বলা হয় এটা কোনোভাবেই অস্বীকার করার উপায় নেই যে, একটি শিশুর জন্মের পর থেকে ২ বছর পর্যন্ত মাতৃদুগ্ধ প্রয়োজন। অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা যায় মায়েরা সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন সেক্টরে কাজ করে যাচ্ছেন। তাই সব ধরনের প্রতিষ্ঠান কিংবা পাবলিক প্লেসে ব্রেস্ট ফিডিং রুমের ব্যবস্থা থাকা আবশ্যক, যাতে মা তার শিশুদের মাতৃদুগ্ধের ব্যবস্থা করতে পারেন। কোনো মা ও শিশু যেন এই রিটের পিটিশনারদের মতো পীড়াদায়ক পরিস্থিতিতে না পড়ে।

রায়ে আদালত বলেন, ব্রেস্ট ফিডিং রুমগুলো আলোবাতাসের সুব্যবস্থাসহ নিরাপদ ও সুসজ্জিত হতে হবে এবং মায়েরা যাতে স্বাচ্ছন্দ্যে ব্যবহার করতে পারে।

রায়ে ব্রেস্ট ফিডিং কর্নার স্থাপন করায় বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের প্রশংসা করে বলা হয় তারা ইতিবাচক পদক্ষেপ নিয়েছে। যদিও ইতিমধ্যে অনেক জায়গায় ব্রেস্ট ফিডিং রুম করা হয়েছে, তবুও অন্যান্য পাবলিক প্লেসে তা করে যেতে হবে।

আদালত আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, সংশ্লিষ্ট সব কর্তৃপক্ষ দ্রুততম যৌক্তিক সময়ের মধ্যে মায়েদের জন্য ব্রেস্ট ফিডিং রুম স্থাপনের সব পদক্ষেপ নিবেন। আদালতে রায়ের পর্যবেক্ষণে এই জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয় আদালতে উপস্থাপনের জন্য পিটিশনার আইনজীবী ইশরাত হাসানকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান। রায়ের শেষে আদালত উল্লেখ করেন, এর আগে কখনোই ৯ মাস বয়সী শিশু রিট দায়ের করেনি। এই শিশু ইতিহাস সৃষ্টি করল।

রায়ের বিষয়ে আইনজীবী ইশরাত হাসান বলেন, মা ও শিশুদের অধিকার রক্ষায় এটি একটি যুগান্তকারী রায়। আমাদের সংবিধানের ৩২ নম্বর অনুচ্ছেদে স্বীকৃত অন্যতম মৌলিক অধিকারের বিষয়ে এ রায় নিঃসন্দেহে একটি ঐতিহাসিক রায়। উচ্চ আদালতে আমার ও আমার শিশু সন্তানের চার বছরের আইনি লড়াই সার্থক হয়েছে। আদালত রায়ে আমাদের পরিশ্রমের স্বীকৃতি দিলেন। এই আইনজীবী মনে করেন, আদালতের রায় অনুযায়ী সব জায়গায় ব্রেস্ট ফিডিং রুম ও বেবি কেয়ার কর্নার স্থাপন সম্পন্ন হলে বাংলাদেশ সারা বিশ্বের জন্য একটা উদাহরণ সৃষ্টি করবে, যা বিশ্বের অন্যান্য দেশের জন্য অনুসরণীয় হবে।

এর আগে, ২০১৯ সালের ২৪ অক্টোবর সব সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও পাবলিক প্লেসে ব্রেস্ট ফিডিং কর্নার স্থাপনে ৯ মাস বয়সী শিশু উমাইর বিন সাদী ও তার মা ইশরাত হাসানের দায়ের করা হয় এক রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। পরবর্তীতে শুনানি শেষে প্রায় চার বছর পর চলতি বছরের ২ এপ্রিল এ বিষয়ে রায় দেন হাইকোর্ট।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App