×

জাতীয়

আমার স্বামীই হারুন স্যারকে প্রথমে আঘাত করে: এডিসি সানজিদা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৯:০০ পিএম

আমার স্বামীই হারুন স্যারকে প্রথমে আঘাত করে: এডিসি সানজিদা

এডিসি হারুন-অর-রশীদ, এডিসি সানজিদা আফরিন ও এপিএস আজিজুল হক মামুন। ছবি: সংগৃহীত

এপিএস আজিজুল হক মামুনই প্রথমে এডিসি হারুন-অর-রশীদকে আঘাত করেন বলে দাবি করে এডিসি সানজিদা আফরিন বলেছেন, আমার স্বামীই হারুন (হারুন-অর-রশীদ) স্যারকে প্রথমে আঘাত করেছেন। মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) একটি বেসরকারি টেলিভিশনে দেয়া সাক্ষাৎকারে এ দাবি করেন তিনি। সানজিদা আফরিন এপিএস আজিজুল হক মামুনের স্ত্রী। তিনি ৩১তম বিসিএসের কর্মকর্তা। ডিএমপির ক্রাইম বিভাগে অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) হিসেবে দায়িত্বে রয়েছেন তিনি। সানজিদা আফরি বলেন, বেশ কিছুদিন আমার কার্ডিয়াক সমস্যা হচ্ছিল। ২০১৯ সাল থেকে আমি হাইপার টেনশনের মেডিসিন খাচ্ছি। চার-পাঁচ মাস ধরে সমস্যাটা বেড়ে যায়। শনিবার ব্যথা বেড়ে যায়, সেদিন ফ্রি সময় থাকায় ডাক্তার দেখাতে চাই। আমি যে ডাক্তারকে দেখাই, তিনি দেশের বাইরে থাকায় এবং ইব্রাহীম কার্ডিয়াক হাসপাতালে এডিসি হারুন স্যারকে একটি সিরিয়াল ম্যানেজ করে দিতে বলি। তিনি ওসির মাধ্যমে সিরিয়াল ম্যানেজ করে দেন। তিনি আরও বলেন, সন্ধ্যায় ৬টায় আমি সেখানে যাওয়ার পরে দেখলাম, যেই ডাক্তারের অ্যাপয়েন্টমেন্ট নেয়া হয়েছে তিনি একটি কনফারেন্সে আছেন। বিষয়টি হারুন স্যারকে জানালে, তিনি আশপাশে থাকায় হাসপাতালে আসেন। তিনি এসে একজন ডাক্তারকে ম্যানেজ করেন। তাকে দেখানোর পর বেশ কিছু টেস্ট দেন। ঘটনার সময় সানজিদা ইটিটি রুমে ছিলেন বলে দাবি করে বলেন, এ ঘটনার সময় আমি যে রুমে ইটিটি করানো হয় সেই রুমে ছিলাম। ইটিটি করানোর ১৫-২০ মিনিট পর আমি বাইরে একটা হট্টগোলের শব্দ শুনি। প্রথম যে সাউন্ডটা (শব্দটা) কানে আসে যে স্যারই (এডিসি হারুন) চিৎকার করে বলছেন- ভাই আপনি আমার গায়ে হাত তুললেন কেন? আপনি তো আমার গায়ে হাত তুলতে পারেন না’। তবে আমার প্রথমে ধারণা হয়েছিল যে হয়তো অন্য কারো সঙ্গে ঝামেলা। কিন্তু এর কিছুক্ষণ পর আমি দেখতে পাই আমার হাজব্যান্ড (আজিজুল হক মামুন), তিনি আরও বলেন, উনি (আজিজুল হক মামুন) আসলে ওখানে কী করছিলেন, কেন গিয়েছিলেন আমি জানি না। ওনাকে টোটালি আউট অব মাইন্ড লাগছিল (মানসিকভাবে স্থির ছিলেন না) এবং খুবই উত্তেজিত ছিলেন। ওনার সঙ্গে আরো কয়েকজন ছেলে ছিল, আমি আসলে তাদের চিনি না। স্যারকে (এডিসি হারুন) মারতে মারতে ইটিটি রুমে নিয়ে যান। তারা মূলত স্যারকে (এডিসি হারুন) মারতে মারতে, টেনে-হিঁচড়ে এই রুমে নিয়ে আসে। স্যার তাদের হাত থেকে বাঁচতে ইটিটি রুমের এক কোনায় গিয়ে দাঁড়ান। সানজিদা বলেন, এরপর আমার হাজব্যান্ড তার সঙ্গে থাকা লোকজনকে বললেন, ‘এই ভিডিও কর।’ এরপর সবাই ফোন বের করে ভিডিও করা শুরু করে। যখন তারা ভিডিও শুরু করে তখন আমি আমার হাজব্যান্ড এবং তার সঙ্গে থাকা লোকজনের সঙ্গে চিল্লাচিল্লি শুরু করছিলাম। এরপর আমি যারা ভিডিও করছে তাদের মোবাইল কেড়ে নেয়ার চেষ্টা করলে তাদের হাতের সঙ্গে লেগে আমার হাতেও আমি সামান্য ব্যথা পাই। কারণ আমি চাচ্ছিলাম না সেই অবস্থায় কেউ আমার ভিডিও করুক। আর আমার হাজব্যান্ডের সঙ্গে যেসব ছেলে ছিল আমি তাদের কাউকে চিনতামও না। সানজিদা আরও বলেন, ইনটেনশন (উদ্দেশ্য) দেখে মনে হয়েছে, তারা দুজনকে পাশাপাশি দাঁড় করিয়ে একটা ভিডিও করতে চাচ্ছেন। পরবর্তীতে তারা সেটি ইউজ (ব্যবহার) করবেন, একটি অসৎ উদ্দেশ্যের জন্য। সানজিদা আরও বলেন, আমি তখন ইটিটির পোশাকে ছিলাম। আপনারা জানেন যে ইটিটির পোশাক কী রকম থাকে। স্বাভাবিকভাবে পোশাকটি শালীন অবস্থায় ছিল না। আমি হাসব্যান্ডের সঙ্গে শাউট করছিলাম, এই রুমে তো কোনো ছেলে ঢোকার কথা নয়। আপনি ঢুকেছেন, এতগুলো লোক নিয়ে কেন ঢুকেছেন? তো আমি শাউট করছিলাম। তখন তিনি আমাকেও দুই-তিনটি চড় মারেন। পরিস্থিতি এমন দাঁড়ায়, আমার ড্রাইভার (গাড়িচালক) ছুটে আসে। মাঝখানে দাঁড়ায়। ড্রাইভারের ওপর দিয়ে আমার গায়ে হাত তোলা হয়। প্রসঙ্গত, শনিবার (৯ সেপ্টেম্বর) রাতে বারডেম হাসপাতাল ঘটনার সূত্রপাত বারডেম হাসপাতালে। সেখানে এডিসি সানজিদা আফরিনের সঙ্গে ছিলেন এডিসি হারুন-অর-রশীদ। সেখান থেকে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের দুই নেতাকে শাহবাগ থানায় নিয়ে মারধর করেন এডিসি হারুন-অর-রশীদ। এ অভিযোগে প্রথমে গত রোববার একদিনে দুই দফা বদলী করা হয়। পরে সোমবার রাতে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App