×

জাতীয়

অসাংবিধানিক উপায়ে ক্ষমতা দখলের নিন্দা বাংলাদেশ-ফ্রান্সের

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৮:৫৯ এএম

অসাংবিধানিক উপায়ে ক্ষমতা দখলের নিন্দা বাংলাদেশ-ফ্রান্সের

ছবি: ফোকাস বাংলা

অসাংবিধানিক উপায়ে ক্ষমতা দখলের নিন্দা বাংলাদেশ-ফ্রান্সের

বিশ্বের যেকোনো দেশের সরকার ব্যবস্থায় অসাংবিধানিক পরিবর্তন ও সামরিক শাসকদের ক্ষমতা দখলের বিষয়ে নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ-ফ্রান্স।

সোমবার (১১ সেপ্টেম্বর) ঢাকায় ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দ্বিপক্ষীয় বৈঠক নিয়ে যৌথ বিবৃতি প্রকাশ করে এ নিন্দা জানানো হয়।

বিবৃতিতে সামরিক শাসকদের ক্ষমতা দখলের বিষয়টি উঠে এসেছে। এতে বলা হয়েছে, যে কোনো দেশে অসাংবিধানিকভাবে সরকার পরিবর্তন এবং অবৈধ সামরিক ক্ষমতা দখলের নিন্দা জানায় বাংলাদেশ এবং ফ্রান্স। এছাড়া এসব দ্বন্দ্ব, সহিংসতা এবং নৃসংতার কারণে যেসব মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন তাদের জরুরি এবং নির্বিঘ্নে মানবিক সহায়তা প্রদানের আহ্বান জানায় এ দুই দেশ।

যৌথ বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশ এবং ফ্রান্স পর্যবেক্ষণ করেছে- জলবায়ু পরিবর্তন এবং সরবরাহ শৃঙ্খল বিঘ্নিত হওয়ার কারণে বিশ্বব্যাপী খাদ্য সার্বভৌমত্ব, খাদ্য নিরাপত্তা এবং পুষ্টির উপর বিপর্যয়কর প্রভাব পড়ছে। বাংলাদেশ ও ফ্রান্স নিয়মিত সংলাপের মাধ্যমে খাদ্য নিরাপত্তার সমর্থনে টেকসই ও স্থিতিস্থাপক খাদ্য ও কৃষি ব্যবস্থায় তাদের সহযোগিতা জোরদার করতে সম্মত হয়েছে। এ বিষয়ে ফ্রান্সের নেতৃত্বে ফুড অ্যান্ড এগ্রিকালচার রেজিলিয়েন্স মিশনের (এফএআরএম) উদ্যোগে বাংলাদেশের যোগদানের প্রশংসা করেছে।

বিবৃতিতে ফ্রান্সের উন্নয়ন সহযোগিতা প্রসঙ্গে উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশের ৮৬ টিরও বেশি পৌরসভার নগর উন্নয়নে সহায়তা করার জন্য বাংলাদেশ সরকার এবং এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের পাশাপাশি ফ্রেঞ্চ এজেন্সি ফর ডেভেলপমেন্টের সঙ্গে ২০০ মিলিয়ন ডলার অর্থায়ন চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। বাংলাদেশ এবং ফ্রান্স বন ও জলাভূমি দ্বারা প্রদত্ত গুরুত্বপূর্ণ ইকোসিস্টেম পরিষেবাগুলোর গুরুত্বের উপর জোর দেয়।

২০২৫ সালে ফ্রান্সের নিস শহরে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ফ্রান্স ও কোস্টারিকার যৌথ সভাপতিত্বে জাতিসংঘের মহাসাগর বিষয়ক সম্মেলনের আগে বাংলাদেশ ও ফ্রান্স তাদের যৌথ প্রয়াস বাড়াতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। বাংলাদেশ ফ্রান্সকে বঙ্গোপসাগরে সামুদ্রিক সম্পদের ব্যবহারে যৌথ উদ্যোগ অন্বেষণের আমন্ত্রণ জানিয়েছে।

উভয় দেশ বাণিজ্য সম্প্রসারণে সম্মত হয়েছে। এ বিষয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, উভয়পক্ষ দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সম্প্রসারণ এবং রেলওয়ে সেক্টরসহ বাংলাদেশে মানসম্মত ও স্থিতিস্থাপক অবকাঠামো উন্নয়নে বিনিয়োগের সম্ভাবনা অন্বেষণে তাদের আগ্রহের কথা পুনর্ব্যক্ত করে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী এবং ফরাসি প্রেসিডেন্ট আশা প্রকাশ করেন যে, আগামী ২৩-২৫ অক্টোবর প্যারিস এবং টুলুজে অনুষ্ঠিতব্য বাংলাদেশ-ফ্রান্স বিনিয়োগ শীর্ষ সম্মেলন দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্কের ক্ষেত্রে নতুন গতি সঞ্চার করবে।

যৌথ বিবৃতিতে উঠে এসেছে ইউক্রেন যুদ্ধ প্রসঙ্গও। এ প্রসঙ্গে বলা হয়, কৌশলগত স্বায়ত্তশাসন, শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য অংশীদারিত্ব বাংলাদেশ এবং ফ্রান্স আন্তর্জাতিক আইন এবং জাতিসংঘ সনদের প্রতি তাদের অটল প্রতিশ্রুতি, বিশেষ করে সংঘাতের শান্তিপূর্ণ সমাধানের নীতি এবং বহুপাক্ষিকতাবাদে অবিচল বিশ্বাসকে পুনর্ব্যক্ত করে। সেক্ষেত্রে ফ্রান্স ও বাংলাদেশ সকল জাতির আঞ্চলিক অখণ্ডতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতি তাদের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে।

যৌথ বিবৃতিতে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বিশেষ করে আফ্রিকায় বাংলাদেশের অবদানের কথা উল্লেখ করা হয়। এতে বলা হয়, ফ্রান্স জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা ও শান্তি বিনির্মাণ প্রক্রিয়ায় বিশেষ করে আফ্রিকায় বাংলাদেশের অগ্রণী অবদানের প্রশংসা করে। বাংলাদেশ এবং ফ্রান্স জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের প্রতি তাদের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করে এবং মিশনের আদেশ এবং প্রাসঙ্গিক প্রেক্ষাপটে তাদের বাস্তবায়নের বিষয়ে নিয়মিত পরামর্শ করতে তাদের ইচ্ছা প্রকাশ করে।

সংঘাত, সহিংসতা এবং নৃশংস অপরাধের কারণে বাস্তুচ্যুতদের জন্য জরুরি এবং নিরবচ্ছিন্ন মানবিক সহায়তার আহ্বান জানানো হয় যৌথ বিবৃতিতে।

বিবৃতিতে রোহিঙ্গা প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, কয়েক বছর ধরে মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের আশ্রয় ও মানবিক সহায়তা প্রদানে বাংলাদেশের উদারতার প্রশংসা করেছে ফ্রান্স। উভয় দেশই আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে, যেন মিয়ানমারের অভ্যন্তরে এমন পরিস্থিতি তৈরির মাধ্যমে স্বেচ্ছায়, নিরাপদ, মর্যাদাপূর্ণ এবং টেকসইভাবে তাদের পৈতৃক জন্মভূমিতে দ্রুত প্রত্যাবর্তন করা যায়।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App