×

জাতীয়

আত্মহত্যা প্রবণতার ক্ষেত্রে বিশ্বে বাংলাদেশ দশম

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৭:৫৭ পিএম

আত্মহত্যা প্রবণতার ক্ষেত্রে বিশ্বে বাংলাদেশ দশম

রাজধানীর শ্যামলীস্থ ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন স্বাস্থ্য সেক্টরের অর্কিড সভায় এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। ছবি: ভোরের কাগজ

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যানুযায়ী ৭ লাখেরও বেশি মানুষ প্রতিবছর আত্মহত্যায় মারা যাচ্ছে। ১৫-২৯ বছর বয়সীদের মৃত্যুর চতুর্থ প্রধান কারণ হলো আত্মহত্যা। মূলত আবেগপ্রবণ ও পরিকল্পনা করে মানুষ আত্মহত্যা করে থাকে। বাংলাদেশ ও এশিয়ার দেশগুলোতে বেশি আত্মহত্যা হয় আবেগপ্রবণ কারণে। আত্মহত্যা প্রবণতার ক্ষেত্রে বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান দশম।

বাংলাদেশে প্রতিদিন গড়ে ৩২ জন আত্মহত্যা করে থাকে। অথচ সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন ও সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে আত্মহত্যা প্রতিরোধ করা সম্ভব। বিশ্ব আত্মহত্যা প্রতিরোধ দিবসকে সামনে রেখে ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন স্বাস্থ্য সেক্টর আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা এ কথা বলেন।

শনিবার (৯ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর শ্যামলীস্থ ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন স্বাস্থ্য সেক্টরের অর্কিড সভাকে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। দীর্ঘদিন ধরেই তরুণদের মানসিক স্বাস্থ্য সচেতনতায় কাজ চলমান রাখা সংস্থাটি সংবাদ সম্মেলনে ‘আত্মহত্যা প্রতিরোধে সচেতনতা, মাদকনির্ভরশীল ব্যাক্তি এবং আত্মহত্যার উচ্চ ঝুঁকি’ বিষয় নিয়ে আলোচনা করে।

ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন নারী মাদকাসক্তি চিকিৎসা ও পুনর্বাসন কেন্দ্রের কাউন্সিলর মোছা. জান্নাতুল ফেরদৌস মজুমদার বলেন, আত্মহত্যা প্রতিরোধের উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন ২০২১ সাল থেকে দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে নারী মাদকাসক্তি চিকিৎসা ও পুনর্বাসন কেন্দ্রে আসা সেবাগ্রহণকারী নারীদের তথ্য সংগ্রহের কাজ করেছে। ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৩ সালের আগস্ট পর্যন্ত সেবাগ্রহণকারী নারীদের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ৩২২ জন সেবাগ্রহণকারী নারীদের মধ্যে ১৭৭ জনের আত্মহত্যার ভাবনা ছিল। ৯৮ জন কখনো না কখনোও আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে এবং ৫ জন চিকিৎসা নেয়ার পরও শেষ পর্যন্ত আত্মহত্যার মাধ্যমে তাদের জীবনের পরিসমাপ্তি টেনেছে। ১৭৭ জন আত্মহত্যাপ্রবণ রোগীদের মধ্যে ১২২ জন মাদকাসক্ত ছিলো। তাদের মধ্যে ১৬৩ জনের বয়স ১৫ থেকে ২৯ বছরের মধ্যে এবং ৭৪ জন আত্মহত্যাপ্রবণ ব্যক্তির কমপক্ষে ১ টি মানসিক রোগ ছিলো।

সংবাদ সম্মেলনের মূল আলোচক কেন্দ্রীয় মাদকাসক্তি চিকিৎসা কেন্দ্রের মনোচিকিৎসক বিশেষজ্ঞ ডা. মো. রাহেনুল ইসলাম আত্মহত্যা কারণগুলোর মধ্যে মাদকাসক্তি, ডিসফাংশনাল ফ্যামিলি এবং মোবাইল আসক্তির উপর খুব গুরত্ব দিয়েছেন। তার মতে আত্মহত্যা প্রতিরোধে প্রথম পদক্ষেপ পরিবার থেকে শুরু করতে হবে, পরিবারের সদস্যদের মোট প্রকাশের অধিকার, একে অন্যের প্রতি সম্মান এবং ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি খুব গুরত্বপূর্ণ। শিশুরাও যে আত্মহত্যার ঝুঁকির বাহিরে নয় এই তথ্যটিও তিনি উপস্থাপন করেছেন।

প্রতিষ্ঠানটির সিনিয়র সাইক্লোজিস্ট রাখী গাঙ্গুলী তার বক্তব্যে বলেন, আত্মহত্যা কখনোই ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত নয়, এর জন্য পূর্ব ঘটিত অনেক কারণ জড়িত। সামাজিক মাধ্যমগুলোকে এ বিষয়ে ব্যপক প্রচারণার মাধ্যমে আত্মহত্যা প্রতিরোধে সোচ্চার ভূমিকা রাখতে হবে।

ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন স্বাস্থ্য এবং ওয়শ সেক্টরের পরিচালক ইকবাল মাসুদ বলেন, আত্মহত্যা প্রতিরোধ একটি জনস্বাস্থ্য অগ্রাধিকার এবং আত্মহত্যার মৃত্যুর হার কমানো নিশ্চিত করার জন্য জরুরি পদক্ষেপ প্রয়োজন।

তিনি আরও বলেন, আত্মহত্যা প্রতিরোধ দিবস উপলে সামাজিক সচেতনতা সৃষ্টি করতে আহ্ছানিয়া মিশনের মাদকাসক্তি চিকিৎসা কেন্দ্রগুলোতে বিভিন্ন কর্মসূচি উদযাপন করছে।

উল্লেখ্য, ২০০৩ সাল থেকে ১০ সেপ্টেম্বর বিশ্বব্যাপী আত্মহত্যা প্রতিরোধের দিবস হিসেবে পালন করা হয়। সারাবিশ্বের মতো বাংলাদেশেও এ দিবস পালিত হয়। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘কর্মের মাধ্যমে আশা তৈরি করো’।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App