×

জাতীয়

স্বর্ণ গায়েব নিয়ে অনেক প্রশ্ন

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:৩৮ পিএম

স্বর্ণ গায়েব নিয়ে অনেক প্রশ্ন

ফাইল ছবি

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসের গুদাম থেকে সোনা গায়েবের ঘটনায় তোলপাড় চলছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সবকটি ইউনিট ও গোয়েন্দারা তদন্তে নেমে রহস্য খুঁজছেন। সামনে এসেছে অনেক প্রশ্ন। থানা পুলিশের পাশপাশি ছায়া তদন্ত করছে ডিবি পুলিশ ও র‌্যাব। নিয়ম ভঙ্গ করে বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে জমা না দিয়ে গুদামে কীভাবে এত স্বর্ণ রাখা হয়েছিল, এনিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। ৫৫ কেজির বেশি স্বর্ণ গায়েবের ঘটনা স্রেফ চুরি না এর পেছনে অন্য কিছু রয়েছে- এ রহস্য উদ্ঘাটন করেছে পুলিশ। এতে কাস্টমস কর্মকর্তা ও সিপাহি জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে।

তদন্ত সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তারা তথ্য পেয়েছেন ধাপে ধাপে স্বর্ণ সরিয়ে সাজানো হয়েছে চুরির নাটক। সোনা রাখার গুদামে সিসিটিভি না থাকা এবং গুদামের গেটে সিসি ক্যামেরা ৪ মাস আগে নষ্ট হলেও নতুন করে না লাগানো বা মেরামত না করায় প্রশ্ন উঠেছে। এর আগে ২০১৯ সালে বেনাপোল কাস্টমস হাউস থেকে একই কায়দায় প্রায় বিশ কেজি স্বর্ণ ও স্বর্ণালংকার গায়েব করা হয়। পরে অডিটের আগ মুহূর্তে চুরির নাটক সাজিয়ে তা প্রচার করা হয়।

এদিকে বিমানবন্দর থানায় দায়ের করা মামলার তদন্তভার গেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলশের (ডিবি) কাছে। এর মধ্যে কাস্টমসের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা (এআরও) সাইফুল ইসলাম শাহেদ, শহিদুল ইসলাম ও সিপাহি নিয়ামত হাওলাদারের সম্পৃক্ততা পেয়েছে পুলিশ। তাদেরকে আটক করা হয়েছে। পুলিশ হেফাজত থেকে তাদের ডিবিতে হস্তান্তর করা হবে। এই তিনজনের যোগসাজশে ধাপে ধাপে স্বর্ণের বার ও অলংকার গুদাম থেকে সরানো হয়েছে।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) হারুন অর রশীদ বলেন, বিমানবন্দর কাস্টমসের গুদাম থেকে স্বর্ণ গায়েবের বিষয়টি গোয়েন্দা পুলিশ গুরুত্বের সঙ্গে ছায়া তদন্ত করছে। একাধিক টিম কাজ করছে। কারা কারা এর সঙ্গে জড়িত, তাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হবে।

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উত্তরা বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মোহাম্মদ মোর্শেদ আলম বলেন, কাস্টমস হাউসের নিজস্ব গুদামে সাধারণ কোনো ব্যক্তির প্রবেশ করার সুযোগ নেই। এখানে কাস্টমসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরাই যেতে পারেন। এই স্বর্ণ চুরির আলামত নেই বললেই চলে। তিনি বলেন, পেশাদার চোর ঢুকলে সব স্বর্ণ নেয়ার কথা। তারা কিছু নিয়ে কিছু রেখে যাবে না। কিন্তু এখানে একেকটি চালান থেকে একটি একটি অংশ চুরি করা হয়েছে।

র‌্যাব সদর দপ্তরের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইং পরিচালক লে. কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, নিরাপত্তাবেষ্টিত এলাকা বিমানবন্দরের কাস্টমসের গুদাম থেকে ৫৫ কেজি স্বর্ণ গায়েব হওয়ার ঘটনা তদন্ত করা হচ্ছে। পুলিশও কাজ করছে। র‌্যাবও গুরুত্বের সঙ্গে ছায়া তদন্ত করছে। এখন পর্যন্ত বেশ কিছু আমলযোগ্য তথ্য মিলেছে।

পুলিশের বিমানবন্দর জোনের অতিরিক্ত উপকমিশনার তৌহিদুল ইসলাম জানান, মামলার তদন্তকাজ তারা অনেকটা গুছিয়ে এনেছেন। তদন্তভার ডিবিতে ন্যস্ত হয়েছে। সন্দেহভাজনদের মধ্য থেকে তিনজন আটক করা হয়েছে। তিনি বলেন, প্রাথমিক তদন্তে মনে হচ্ছে চুরি নয়, পরিকল্পিতভাবে সরানো হয়েছে স্বর্ণ। সেখানে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ কাস্টমস কর্মকর্তাদেরই সম্পৃক্ত থাকার সম্ভাবনা অনেক বেশি। স্বর্ণ একদিনে সরানো হয়নি। যেসব স্বর্ণ সরানো হয়েছে তা কিন্তু এ বছরই জব্দ করা। ঢাকা কাস্টম কমিশনার এ কে এম নুরুল হুদা আজাদ এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি।

জানা গেছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টের স্বর্ণ তামা হওয়া ও ক্যারেট বদল হওয়ার পর কাস্টমসের সঙ্গে ব্যাংক কর্তৃপক্ষের ভুল বোঝাবুঝি হয়। এর পর ২০১৭-২০২০ সাল পর্যন্ত ভল্টে স্বর্ণ জমা দেয়া বন্ধ ছিল। তখন থেকে পরীক্ষা না করে বাংলাদেশ ব্যাংক কাস্টম থেকে সোনা নিচ্ছে না। সোনা জব্দের যেসব ঘটনায় দায়ের করা মামলা নিষ্পত্তি হয় সেসব ঘটনার জব্দকৃত স্বর্ণ ভল্টে জমা দেয়া হয়। আর যেসব মামলা চলমান এবং স্বর্ণ ফেরত দেয়ার সম্ভবনা থাকে সেগুলো দীর্ঘদিন গুদামে রাখা হয় কাস্টম। এবারের ঘটনা পর্যালোচনা করে পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, ২০১৭ সালের জানুয়ারি-এপ্রিল মাসের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তর পরিদর্শন করে। রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যানের কাছে দেয়া প্রতিবেদনে বলা হয় ভল্টে রাখা ৯৬৩ কেজি স্বর্র্ণ পরীক্ষা কর বেশকিছু অনিয়ম ধরা পড়েছে। এতে বলা হয়, জমা রাখা হয়েছিল ৩ কেজি ৩০০ গ্রাম ওজনের সোনার চাকতি ও আংটি, তা হয়ে যায় মিশ্র বা সংকর ধাতু। ২২ ক্যারেটের অনেক স্বর্ণ হয়ে যায় ১৮ ক্যারেট। ভল্টে কীভাবে স্বর্ণ পরিবর্তন হলো তা নিয়ে আলোড়ন সৃষ্টি হয় তখন।

শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের একাধিক কর্মকর্তা জানান, ঢাকা কাস্টম হাউসের কর্মকর্তারা কোনোভাবেই এই চুরির দায় এড়াতে পারেন না। এতে তাদের দায়িত্বে গাফলতির চিত্র ফুটে উঠেছে। কাস্টসের গুদাম অন্যসব গুদামের মতো নয়। এটা বেশ সুরক্ষিত এবং বিমানবন্দরের ভেতরে অবস্থিত। সবকটি গোয়েন্দা সংস্থা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারিতে থাকে এটি। সেখান থেকে ৫৫ কেজি স্বর্ণ সরানো প্রায় অসম্ভব ঘটনা। কাস্টম গুদামের ক্ষেত্রে আলাদা নীতিমালা আছে। ২০১৯ সালে বেনাপোল কাস্টমস হাউজ থেকে প্রায় বিশ কেজি স্বর্ণ ও স্বর্ণালংকার গায়েরের পর এই নীতিমালা করা হয়। নীতিমালা অনুযায়ী, গুদামে কে কীভাবে দায়িত্ব পালন করবে তার সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা রয়েছে। এক্ষেত্রে গুদাম অফিসারসহ যারা দায়িত্ব পালন করবে তাদের প্রবেশ এবং বের হওয়ার সময় খাতায় রেজিস্ট্রেশন করা, কমিশনার কর্তৃক মনোনীত লোক দিয়ে তাদের দেহ তল্লাশি করানো, গুদামের লকারের চাবি দুজনের কাছে থাকবে। সম্প্রতি চুরির ঘটনার পর চাবি নিয়ে যে কথা বলা হচ্ছে তা অবান্তর। প্রতি মাসে একবার গুদাম অডিট করে এর প্রতিবেদন রাজস্ব বোর্ডে পাঠাতে হবে। প্রতি ছয় মাস অন্তর গুদাম ম্যানেজার বদল হওয়ার সময়

নতুন ব্যক্তি মালামাল যাচাই বাছাই করে বুঝে নেবেন। এ সময় তার কোনো সন্দেহ হলে তিনি তা পরীক্ষা করে নিবেন। গত ফেব্রুয়ারি থেকে ধাপে ধাপে এই ৫৫ কেজি স্বর্ণের চালান চুরি হতে পারে। এতে প্রতি মাসে অডিট করা হলে এ ঘটনা এতোদূর গড়াতো না, আগেই ধরা পড়তো। গুদামের মালামাল নয়ছয় হওয়ায় ২০২০ সালের আগস্ট মাসে গোডাউন ম্যানেজমেন্ট সফটওয়্যার তৈরি করা হয়। এতে গুদামের সব তথ্য হালনাগাদ করার বাধ্যবধকতা করে রাজস্ব বোর্ড। কিন্তু এই গুদামে তা অনুসরণ করা হয়নি। ওই কর্মকর্তা জানান, ২০২০ সাল থেকে এ পর্যন্ত তারা ১২শ কেজি স্বর্ণ বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে জমা দিয়েছেন। এর মধ্যে যেগুলো স্থায়ী জমা সেগুলো বাংলাদেশ ব্যাংক ক্যারেট পরীক্ষা করে জমা নিয়েছে। আর যেগুলো অস্থায়ী জমা সেগুলো আমানত হিসেবে ভল্টে লাখা আছে।

এদিকে শুধু স্বর্ণ চুরিই নয় এর আগেও বিমানবন্দরে বড় ধরনের চুরি পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে গিয়ে ধরা পড়েন স্পাইডারম্যান রানা। প্রশ্ন ওঠে, বিমানবন্দরের মতো প্রথম শ্রেণির কেপিআইভুক্ত এলাকার নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে। গত ৩১ জুলাই রাত পৌনে ১টার দিকে বিমানবন্দরের ক্যানপির পূর্ব পাশে টয়লেটসংলগ্ন এলাকার স্টিলের কেবলের ফাঁকা অংশ দিয়ে সিলিংয়ের ভেতরে ঢুকে পড়ে সে। সরু সিলিংয়ের ভেতর দিয়ে ধীরে ধীরে তারা ব্যাগেজ স্টোর ও কাস্টমস এলাকার দিকে এগোতে থাকেন। এ সময় রানার সঙ্গে ছিল তার আরো দুই বন্ধু রুবেল ও জসীম। এক পর্যায়ে আন্তঃবিমানবন্দর এলাকার আগমনী ১ নম্বর টার্মিনালের নিচ তলায় ‘লস্ট অ্যান্ড ফাউন্ড’ ডিভিশনের ১৫ নম্বর কক্ষের ওপরে সিলিংয়ে অবস্থানকালে হঠাৎ ছন্দপতন ঘটে! সিলিং ভেঙে রাত ১টা ১০ মিনিটের দিকে নিচে পড়ে যায় রানা। সে সময় সেখানে কর্মরত বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের স্টাফ আরিফুল ইসলাম কোনো সিনেমার দৃশ্য দেখলেন ভেবে হতভম্ব হয়ে যান। তখন হতচকিত এ কর্মকর্তা রানাকে আটক করে বিমানবন্দরে দায়িত্বরত আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের হাতে তুলে দেন। এরপর তাকে দেয়া হয় বিমানবন্দর থানা পুলিশ হেফাজতে। এমন ঘটনায় পুলিশও হতবাক হয়ে যায়। তবে এ ঘটনা দেখে তার আরো দুই বন্ধু পালিয়ে যায়। জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, বিমানবন্দরের মতো স্পর্শকাতর এলাকা থেকে দামি মালপত্র চুরির বড় ধরনের ছক কষেছিলেন তারা। এর মধ্যে নির্মাণাধীন থার্ড টার্মিনাল এলাকা থেকে ২০ কোটির টাকা মূল্যের স্ক্যাব চুরির কুলকিনার হয়নি এখনো।

পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, গোডাউনের নিরাপত্তার দায়িত্বে কর্মরত ছিলেন এ, বি, সি ও ডি শিফটের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা মাসুম রানা, সাইদুল ইসলাম শাহেদ, শহিদুল ইসলাম ও আকরাম শেখ। তাদের পুলিশ হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। এদের মধ্যে দুজন স্বর্ণ গায়েবে জড়িত। রেজাউল করিম, মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক, আফজাল হোসেন ও নিয়ামত হাওলাদার নামে চার সিপাহিকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তাদের মধ্যে একজনের সংশ্লিষ্টতার তথ্য মিলেছে। মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে, গায়েব হওয়া স্বর্ণ ২০২০ থেকে ২০২৩ সালে আসা। অথচ মামলার এজাহার এবং ডিএম অনুযায়ী গায়েব হওয়া স্বর্ণগুলো গুদামে এসেছিল ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে ১৫ আগস্টের মধ্যে।

কাস্টমস কর্মকর্তাদের তথ্য মতে, সোনা চুরির এই ঘটনা ঢাকা শুল্ক বিভাগের নজরে আসে গত শনিবার। তবে বিষয়টি জানাজানি হয় ৩ সেপ্টেম্বর। বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসের নিজস্ব গুদামে দিনভর ইনভেন্টরি শেষে ৫৫ কেজি স্বর্ণ চুরি বা বেহাত হওয়ার সত্যতা নিশ্চিত হয় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। পুরো ঘটনা তদন্তের জন্য কাস্টমসের যুগ্ম-কমিশনার মিনহাজ উদ্দীনের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি টিম গঠন করে কাস্টম হাউজ। এরপর রবিবার রাতে ঢাকা শুল্ক বিভাগের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা মোহাম্মদ সোহরাব হোসেন বাদী হয়ে বিমানবন্দর থানায় মামলা করেন। তবে, এর মধ্যে বিমান বন্দরে নির্মাণাধীন থার্ড টার্মিনাল থেকে ২০ কোটি টাকা মূল্যের স্ক্রাব চুরিরও কুলকিনারা হয়নি।

কাস্টমসের গুদামের ব্যবস্থাপনার বিষয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের স্থায়ী আদেশে বলা হয়েছে, সংশ্লিষ্ট কাস্টম হাউসের কমিশনার গুদামে একজন নিরীক্ষণ কর্মকর্তা নিয়োগ করবেন। সেই কর্মকর্তা প্রতি মাসের প্রথম সপ্তাহে গুদাম পরিদর্শন করে কমিশনারের কাছে প্রতিবেদন পাঠাবেন। কমিশনার সার্বিক প্রতিবেদন ছয় মাস পরপর এনবিআরের পাঠাবেন। গুদামের চাবি ও লক-এন্ট্রি মনিটরিং করবেন তত্ত্বাবধানকারী কর্মকর্তা। কমিশনার কর্তৃক নিয়োগ করা পোশাকধারী দেহ তল্লাশি কর্মকর্তা গুদামে প্রবেশে প্রত্যেকের দেহ তল্লাশি করবেন। চার শিফটে ২৪ ঘণ্টা দায়িত্ব পালন করবেন তল্লাশি কর্মকর্তারা। তবে বিমানবন্দর কাস্টমসের গুদামে এ ধরনের কোনো নিয়মই মানা হয়নি বলে অভিযোগ রয়েছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App