বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) যশোর ও রংপুর রিজিয়নের রিজিয়ন কমান্ডার এবং ভারতের বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সে (বিএসএফ) সাউথ বেঙ্গল, নর্থ বেঙ্গল ও গৌহাটি ফ্রন্টিয়ারের ফ্রন্টিয়ার আইজি পর্যায়ে সীমান্ত সমন্বয় সম্মেলনে সীমান্ত হত্যা কমিয়ে আনাসহ ৬টি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

গত শনিবার দুপুর থেকে যশোরে হোটেল জাবের ইন্টারন্যাশনালের কনফারেন্স কক্ষে দুই বাহিনীর মধ্যে সীমান্ত সম্মেলন শুরু হয় এবং যৌথ বিবৃতির মধ্য দিয়ে মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর) ৪ দিনব্যাপী সম্মেলন শেষ হয়।

সূত্রে জানা গেছে, সম্মেলনে উভয় দেশের কর্মকর্তারা সীমান্ত হত্যা কমিয়ে আনা, পেশাদারিত্বের সঙ্গে যৌথভাবে দায়িত্ব পালন, ঝুঁকিপূর্ণ সীমান্তে রাত্রিকালীন যৌথ টহল বাড়ানো, সীমান্তবর্তী এলাকার জনসাধারণের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন, জনসচেতনতা ও জনকল্যাণমূলক কর্মসূচি নেয়া, অতিরিক্ত সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহন এবং তাৎক্ষণিক তথ্য আদান-প্রদান, মাদক পাচার, অবৈধ অনুপ্রবেশ, মানব পাচার, স্বর্ণ পাচার রোধ, আগামী দিনে যৌথ খেলাধুলা, প্রশিক্ষণ কর্মসূচি বিনিময়সহ বিভিন্ন দ্বিপক্ষীয় কর্মকাণ্ড পরিচালনা, উভয়পক্ষ পূর্বানুমতি ছাড়া সীমান্তের ১৫০ গজের মধ্যে কোনো ধরনের উন্নয়নমূলক কাজ না করা এবং সীমান্তের ১৫০ গজের মধ্যে বন্ধ থাকা উন্নয়নমূলক কাজসমূহ জয়েন্ট ভেরিফিকেশনের মাধ্যমে দ্রুত সমাধানের ব্যাপারে সম্মত হন।

সম্মেলন শেষে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে বিজিবির রংপুর রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ মোরশেদ আলম বলেন, সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে সম্মেলন শেষ হয়েছে। সীমান্তে বিএসএফ কর্তৃক নিরস্ত্র বাংলাদেশি নাগরিকদের হত্যা ও আহতের ঘটনা জোরালোভাবে তুলে ধরা হয়। বিজিবি বিএসএফকে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর যৌথ বিবৃতির প্রতি শ্রদ্ধা রেখে সীমান্ত হত্যা শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনতে আহ্বান জানানো হয়। এই আহ্বানে বিএসএফ সম্মত হয়েছে।

অপরদিকে, বিএসএফ সাউথ বেঙ্গল ফ্রন্টিয়ারের আইজি শ্রী আয়ুষ মানি তিওয়ারি বলেন, চারদিনের সম্মেলনে বেশ কিছু বিষয় নিয়ে ঐক্যমতে পৌঁছেছেন তারা। দুই দেশের মধ্যে এবং দুই বাহিনীর মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক সুদৃঢ় করতে বিএসএফ বদ্ধপরিকর।

বিজিবির রংপুর রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ মোরশেদ আলমের নেতৃত্বে ২১ সদস্যের বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল সম্মেলনে অংশ নিয়েছে। বিজিবির যশোর রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম আহমেদ সহ উভয় রিজিয়নের অধীনস্থ সংশ্লিষ্ট সেক্টর কমান্ডারগণ, বিজিবির স্টাফ অফিসারবৃন্দ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর, ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তর এবং যৌথ নদী কমিশনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।

অপরদিকে বিএসএফ সাউথ বেঙ্গল ফ্রন্টিয়ারের আইজি শ্রী আয়্যুষ মনি তিওয়ারির নেতৃত্বে ৭ সদস্যের ভারতীয় প্রতিনিধিদল সম্মেলনে অংশ নেয়। ভারতীয় প্রতিনিধিদলে বিএসএফ নর্থ বেঙ্গল ও গৌহাটি ফ্রন্টিয়ারের আইজিগণ ছাড়াও সংশ্লিষ্ট সেক্টরের ডিআইজিরা, বিএসএফের স্টাফ অফিসারবৃন্দ, ভারতের স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা প্রতিনিধিত্ব করছেন।

গতকাল বিকালেই ভারতীয় প্রতিনিধি দল ভারতে ফিরে গেছে।