×

জাতীয়

সংসদীয় বাছাই কমিটিতে সাইবার নিরাপত্তা বিল

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৫:৫৮ পিএম

সংসদীয় বাছাই কমিটিতে সাইবার নিরাপত্তা বিল

জাতীয় সংসদ ভবন। ছবি: সংগৃহীত

সাইবার নিরাপত্তা বিল-২০২৩ সংসদে উত্থাপিত পাশ হবে চলতি অধিবেশনেই ৪টি ধারায় রয়ে গেল অজামিনযোগ্য

বহুল আলোচিত সাইবার নিরাপত্তা বিল-২০২৩ জাতীয় সংসদের ২৪তম অধিবেশনে উত্থাপন হয়েছে এবং তা সদীয় বাছাই কমিটিতে প্রেরণ করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর) বিকাল ৪টা ৪৫ মিনিটে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অধিবেশনে এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সাইবার নিরাপত্তা বিল-২০২৩ সংসদে উত্থাপন করন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। এটির পরীক্ষামূলক প্রতিবেদনের জন্য ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানোর প্রস্তাবও করেন প্রতিমন্ত্রী।

বিলটির ২১ ধারার বলা হয়েছে, মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও জাতির পিতা , জাতীয় সংগীত, পতাকা বিরুদ্ধে কোন প্রকার প্রপাগান্ডা চালালে সর্বোচ্চ ৫ বছরের জেল ও ১ কোটি টাকা অর্থ দণ্ড দিতে হবে। বিলটির বিরোধিতা করে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ফখরুল ইমাম বলেন, এ বিলটি নিয়ে অনেকবার আইনমন্ত্রী আলোচনা, প্রতিশ্রুতি দেন, আমি আশা করেছিলাম আজ বিলটি আইনমন্ত্রী উত্থাপন করবেন। কিন্তু উত্থাপন করেন জুনায়েদ আহমেদ পলক। যা হোক এ আইনটি নিয়ে সাংবাদিকসহ নানা মহলের সমালোচনা রয়েছে। তারা অনেকেই বলেছেন, এ আইনটির শুধু নামের পরিবর্তন হয়েছে, কিছু ধারার পরিবর্তন পরিমার্জন হয়েছে। কিন্তু এটি একটি কালো আইন হচ্ছে। বিভিন্ন মহল বলেছে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে যেসব ধারা রাখা হয়েছিল, যেভাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছিল, প্রস্তাবিত আইনে তা একই রাখা হয়েছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মৌলিক যে দুর্বলতা ছিল সেগুলো এখানে রয়ে গেছে। মানুষের মৌলিক অধিকার, যার মধ্যে বাক স্বাধীনতা, বিবেকের চিন্তার স্বাধীনতা, বিশেষ করে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা হরনের মত অনেক উপাদন সাইবার নিরাপত্তা আইনে রয়ে গেছে। এটি বর্তমান খসড়াতেই নিবর্তনমূলক বলে মন্তব্য করেছে টিআইবি। তারা মনে করে এটিও মানুষের মৌলিক স্বাধীনতা হরণ করবে। এটিও কালো আইনে পরিনত হবে, এটিও মানুষের মৌলিক অধিকার হরণ করবে। হয়রানি হবেন মানুষ, গণমাধ্যম। তাই এ আইনের তিনি বিরোধিতা করে হয়রানি কেন হবে না তার ব্যাখ্যা চান। প্রতি উত্তরে জুনায়েদ আহমেদ পলক বলেন, প্রধানমন্ত্রী যখন ডিজিটাল বাংলাদেশ ঘোষণা করেন, তখন শুরুতে মাত্র ৫৬ লাখ মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করতো। সেখানে ডিজিটালি কোন কিছু লেনদেন হতো না। কিন্তু তথ্য প্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের নেতৃত্বে বাংলাদেশে এখন ১৩ কোটি মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করে। ২০০০ সেবা ইন্টারনেটের আওতায় ডিজিটালি করা হয়েছে, সাড়ে ৪ লাখ মামলাও করোনাকালীন শুনানি করা হয়। তিনি আরও বলেন, ডিজিটাল প্রযুক্তিতে যে সুবিধা হয়েছে একই সাথে সাইবার স্পেসে ঝুঁকি তৈরিও হয়েছে। ২০১২ সালে রামুতে বিএনপি জামায়াত-শিবিরের সদস্যরা একটা মিথ্যা তথ্য ফেসবুকে-সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দিয়ে কিভাবে অনেক সম্পদ ও প্রাণের ক্ষতি করে। ২০১৬ সালে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে সাইবার হামালা চালায়। সাইবার হামলা চালিয়ে হ্যাকাররা ৮১ মিলিয়ন ডলার চুরি করে নিয়ে যায়। এর পরে আমরা কম্পিউটার রেসপন্স টিম তৈরি করি। পদ্মা সেতু নির্মাণের শেষ দিকে সামাজিক মাধ্যমে একটা গুজব ছড়ানো হলো সেতুর পিলার শক্ত করতে নাকি শিশুদের মাথা দরকার। তারই ফলশ্রুতিতে মিরপুরে রেনু নামে একজন মহিলাকে গণপিটুনি দিয়ে হত্যা করা হয়। এই যে সাইবার অপরাধ এতবেশি মারাত্মক জীবনের ঝুঁকি সৃষ্টি করে সে কারণে অমরা ২০১৮ ডিজিটাল সিকিউরিটি এক্ট প্রণয়নের চিন্তা করি। বর্তমানের চাহিদা অনুযায়ী সাংবাদিক, মানবাধিকার সংস্থার সঙ্গে আলাপ আলোচনা করে আইনমন্ত্রী, আমরা সাইবার সিকিউরিটি এক্ট এনেছি। ডিজিটাল সিকিউরিটি এক্টে যেগুলো অজামিনযোগ্য ধারা ছিল তা জামিন যোগ্য করা হয়েছে। মাত্র ৪টি ধারায় জামিন অযোগ্য করা হয়েছে। এটা একটি উদার আইন। পরে তথ্য প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী বিলটি সংসদে উত্থাপণ করেন এবং ৫ কার্যদিবসের জন্য সংসদীয় কমিটিতে পাঠানো হয়। চলতি সংসদেই বিলটি পাশ হবে।

প্রসঙ্গত, সরকার গত ৭ আগস্ট জানায় তারা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনকে ‘রূপান্তর’ এবং আধুনিকায়ন’ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যার নাম হবে সাইবার নিরাপত্তা আইন। যেখানে বিদ্যমান আইনের কিছু ধারা সংশোধন করা হবে। গত ২৮ আগস্ট মন্ত্রিসভা সিএসএর চূড়ান্ত খসড়া অনুমোদন করে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App