×

জাতীয়

ড. ইউনুসের বিচার প্রক্রিয়া বন্ধের দাবি বেআইনি ও অযৌক্তিক

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ৩০ আগস্ট ২০২৩, ১১:১৯ পিএম

ড. ইউনুসের বিচার প্রক্রিয়া বন্ধের দাবি বেআইনি ও অযৌক্তিক
বাংলাদেশের আদালতে ড. ইউনুসের বিরুদ্ধে চলমান বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ করতে বিশ্বের ১৬০ নাগরিক দাবি জানিয়ে যে খোলা চিঠি দিয়েছেন, তা বেআইনি ও অযৌক্তিক বলে বিবৃতি দিয়েছে কেন্দ্রীয় ১৪ দল। প্রধানমন্ত্রীর কাছে খোলা এ ধরণের চিঠি দেয়া আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে হুমকিস্বরূপ বলেও উল্লেখ করেছেন তারা। বুধবার (৩০ আগস্ট) রাতে গণমাধ্যমে পাঠানো কেন্দ্রীয় ১৪ দলের নেতাদের এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন ১৪ দলের নেতা ও আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস। বিবৃতিতে ১৪ দলের নেতারা বলেন, বাংলাদেশ একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র। এদেশের বিচার বিভাগ সম্পূর্ণ স্বাধীন। বাংলাদেশের প্রচলিত আইনের মাধ্যমে সবধরনের বিচারিক কার্যক্রম পরিচালিত হয়। যে কোনো বিচারিক কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত করার এ ধরনের অপতৎপরতা সংবিধান ও আইন পরিপন্থী। ড. ইউনুস কর্তৃক সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের আইনের আশ্রয় গ্রহণের সাংবিধানিক অধিকার রয়েছে। সেই সাংবিধানিক অধিকারকে বাধাগ্রস্ত করে চলমান বিচারিক কার্যক্রম বন্ধের প্রস্তাব কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এ ধরনের স্বেচ্ছাচারিতাপূর্ণ দাবি আদালত অবমাননার শামিল। বিবৃতিতে বলা হয়, কেন্দ্রীয় ১৪ দল বিশ্বাস করে, আইনের শাসন ও মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল কোনো ব্যক্তি বা সংগঠন ক্ষতিগ্রস্ত বা নির্যাতিত কোনো ব্যক্তির ন্যায়বিচার প্রাপ্তির পথ রুদ্ধ করার দাবি উত্থাপন করতে পারে না। আর কোনো বিদেশি ব্যক্তিবর্গের পক্ষ থেকে বিচারাধীন কোনো মামলার বিচার প্রক্রিয়া বন্ধের দাবি কেবল বিচার বিভাগের উপর হস্তক্ষেপই নয়, একইসঙ্গে একটি স্বাধীন দেশের সার্বভৌমত্বের ওপরও আঘাত বটে। বিবৃতিতে কেন্দ্রীয় ১৪ দল নেতারা বলেন, ড. ইউনুসের দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিরা আইনি প্রতিকার চেয়ে আদালতে মামলা করেছেন। আইনি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে বিচার চলমান রয়েছে। আইনের শাসনের নীতি অনুযায়ী আইনের চোখে সবাই সমান; সেক্ষেত্রে কারো রাজনৈতিক বা সামাজিক পরিচয় বিবেচ্য বিষয় নয়। কেউ কোনো অপরাধ করলে তাকে আইনের মুখোমুখি হতেই হবে। ফৌজদারি আইন দেশের সবার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। নোবেল পুরস্কার পেলেই কেউ আইন-আদালতের ঊর্ধ্বে চলে যায় না। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নোবেল পুরস্কার অর্জনকারী অনেকের বিরুদ্ধে সেসব দেশের আইন অনুযায়ী মামলা হয়েছে এবং বিচার কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছে। দেশের সংবিধান ও আইন অনুযায়ী ড. ইউনুস আত্মপক্ষ সমর্থনের অধিকার ভোগ করছেন, আইনজীবী নিয়োগ করে জামিন নিয়ে স্বাধীনভাবে চলাফেরা করছেন। এই মামলার সঙ্গে রাজনীতির কোনো যোগসূত্র নেই। বিবৃতিতে ১৪ দলের নেতারা বলেন, আইন, বিচারব্যবস্থা ও আদালতের স্বাভাবিক কার্যক্রমে প্রভাব বিস্তার করে সুবোধসম্পন্ন কোনো ব্যক্তির কাছ থেকে এমন ধরনের বিবৃতি কোনোভাবেই কাম্য নয়। এ ধরনের অযাচিত হস্তক্ষেপ ও বেআইনি উদ্যোগ স্বেচ্ছাচারী মানসিকতার বহিঃপ্রকাশ ছাড়া কিছু নয়। ইতোপূর্বে আমরা বিস্ময়ের সঙ্গে দেখেছি ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় মনবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনকারী ঘৃণ্য যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ করতেও দেশি-বিদেশি অপশক্তি বাংলাদেশের উপর চাপ প্রয়োগ করেছিল। ড. ইউনুসের বিরুদ্ধে চলমান বিচার প্রক্রিয়া গোষ্ঠীতন্ত্র ও ভূ-রাজনৈতিক স্বার্থে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বন্ধ করতে বিবৃতি দান বাংলাদেশের গণতন্ত্রকামী, প্রগতিশীল, সচেতন নাগরিক সামজকে গভীরভাবে হতাশ করেছে। প্রতিটি দেশপ্রেমিক নাগরিক বিশ্বাস করে, শুধুমাত্র ড. ইউনুস নয় যে কোনো ব্যক্তির দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের ন্যায় বিচার লাভের অধিকার প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বিবৃতিতে নেতারা আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী এদেশে বিচারহীনতার সংস্কৃতির পরিবর্তে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করেছেন। স্বাধীন বিচার বিভাগ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বর্তমান সরকার জনগণের ন্যায়বিচার লাভের অধিকার প্রতিষ্ঠার প্রতিষ্ঠায় অঙ্গীকারবদ্ধ। বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব, সংবিধান, আইন ও বিচারব্যবস্থাকে বাধাগ্রস্ত বা প্রভাব বিস্তার করে এমন বিবৃতি কিংবা তৎপরতা থেকে বিরত থাকার জন্য সবার প্রতি অনুরোধ জানায় জোট।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App