×

জাতীয়

‘কালের ক্রন্দন ধ্বনি শুনতে কি পাও?’

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ৩০ আগস্ট ২০২৩, ০৫:৩৫ পিএম

‘কালের ক্রন্দন ধ্বনি শুনতে কি পাও?’
‘কালের ক্রন্দন ধ্বনি শুনতে কি পাও?’
‘কালের ক্রন্দন ধ্বনি শুনতে কি পাও?’

বুধবার বিকেলে রাজধানীর নয়াপল্টনে আন্তর্জাতিক গুম দিবসে মুখে কালো কাপড় বেঁধে মানববন্ধন কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান। ছবি: ভোরের কাগজ

সরকারের উদ্দেশ্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান বলেছেন, একটা ছোট্ট নিস্পাপ শিশু অশ্রু জলে ভেসে বলো বললো আমি গুম দিবস চাই না, বাবা দিবস পালন করতে চাই, ফেরত চাই। এর চেয়ে নির্মম আর কি হতে পারে। তিনি বলেন, এই গুম দিবসে সরকারের কাছে প্রশ্ন রাখতে চাই ‘কালের ক্রন্দন ধ্বনি শুনতে কি পাও?’

বুধবার (৩০ আগস্ট) বিকেলে রাজধানীর নয়াপল্টনে আন্তর্জাতিক গুম দিবস উপলক্ষে বিএনপি ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ও উত্তর আয়োজিত মুখে কালো কাপড় বেধে এক মানববন্ধন কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

আদিবা ইসলামের বয়স যখন দুই বছর, তখন থেকেই সে আর তার বাবাকে খুঁজে পাচ্ছে না। বাবার একটি ছবি দেখিয়ে আদিবা বলল, ‘এইটা আমার বাবা। বাবাকে ছাড়া আমার ভালো লাগে না। বাবাকে ফিরিয়ে দেন। গুম দিবস না, বাবা দিবস পালন করতে চাই।’

আদিবা ইসলামের বয়স এখন ১২ বছর। আদিবার বাবা পারভেজ হোসেন বংশাল থানা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে রাজধানীর শাহবাগ থেকে কে বা কারা তুলে নিয়ে যায় পারভেজকে। গত ১০ বছরেও তাঁর আর কোনো খোঁজ নেই। তিনি বেঁচে আছেন না মরে গেছেন, এ নিয়ে সরকার বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কেউ কিছু বলতে পারছে না।

আজ বুধবার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপি কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত মানববন্ধনে অংশ নিয়ে আদিবা তার বাবাকে ফিরে পাওয়ার আকুতি তুলে ধরে। গুমের শিকার ব্যক্তিদের স্মরণে আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষে এই মানববন্ধনের আয়োজন করে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি। মুখে কালো পতাকা বেঁধে বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা মানববন্ধনে অংশ নেন। এতে বিভিন্ন সময়ে গুমের শিকার হওয়া বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতাদের পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

‘এইটা আমার বাবা। বাবাকে ছাড়া আমার ভালো লাগে না। বাবাকে ফিরিয়ে দেন। গুম দিবস না, বাবা দিবস পালন করতে চাই’ - বাবাকে ফিরে পেতে চায় ছোট্ট আদিবা

ড. মঈন খান বলেন, আজকে এই মানববন্ধনে গুম হওয়া পরিবার এখানে উপস্থিত হওয়ায় তাদের ধন্যবাদ জালানেও আজকে তাদের জন্য, আমাদের জন্য বিশাদের দিন। গুম হওয়া পরিবারের কান্না আজ সবার হৃদয়ে স্পন্দন সৃষ্টি করলেও সরকার সে কান্নার শব্দ শুনতে পায় না। এই জন্য একদিন তাদের জনস্মূখে জবাব দিতে হবে। গুম হওয়া পরিবারের সদস্যেদের অশ্রুর জলে ভেসে যাবে এই ক্ষমতাসীন বাকশালি সরকার।

বিএনপির জ্যেষ্ঠ এই নেতা বলেন, বিএনপি আজকে গণ মানুষের অধিকার ফিরিয়ে দেয়ার আন্দোলন করছে। দেশনেত্রী খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের প্রদত্ত শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির অনুসরণ করে দেশের জনগণও রাস্তায় নেমে আসবে। সেদিন বেশি দূরে নয়, চলমান আন্দোলনের মাধ্যমেই সরকারকে বিদায় নিতে হবে। দেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা হবে।

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লা বুলু বলেন, গুম-হত্যার বিচার চাইলে সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরাতে হবে। আওয়ামী লীগকে সরিয়ে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন আদায় করা হবে। আগামীতে ক্ষমতায় যেয়ে জাতীয় সরকার গঠন করতে পারলে আওয়ামী লীগ সরকারের সকল অপকর্মের বিচার করা হবে।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহবায়ক আব্দুস সালাম বলেন, সরকারের বিরুদ্ধে কোনো কিছু বলা যায় না। হারিয়ে যাওয়া মানুষদের ফিরে পেতে হলে সরকারের পতনের বিকল্প নেই। আওয়ামী লীগ মানেই অত্যাচার, আওয়ামী লীগ মানেই নিপীড়ন। সকলকে রাজপথে নেমে সোচ্চার হতে হবে, জানিয়ে দিতে হবে আওয়ামী লীগের অধীনে কোনো নির্বাচন হবে না।

সভাপতির বক্তব্যে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান বলেন, প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের গুম করেছে। রাজপথে আন্দোলনে দাবি আদায়ের প্রস্তুতি নিন, দেশ-বিদেশের সকলে বিএনপির পাশে আছে। ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনে ক্ষমতাসীনদের পরাজিত করা হবে।

ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে এতে আরো উপস্থিত ছিলেন দলটির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত বুলু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, প্রচার সম্পাদক শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম জিলানী, কৃষক দলের সভাপতি কৃষিবিদ হাসান জাফির তুহিন, ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রাশেদ ইকবাল খান, সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল, ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামল, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুস সাত্তার, আনম সাইফুলসহ আরো অনেকে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App