×

জাতীয়

ঢামেকে ছাত্রলীগের দুপক্ষের মারামারিতে সভাপতির কক্ষ ভাঙচুর

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ৩০ আগস্ট ২০২৩, ০১:১৯ এএম

ঢামেকে ছাত্রলীগের দুপক্ষের মারামারিতে সভাপতির কক্ষ ভাঙচুর

ছবি: সংগৃহীত

ঢামেকে ছাত্রলীগের দুপক্ষের মারামারিতে সভাপতির কক্ষ ভাঙচুর
ঢামেকে ছাত্রলীগের দুপক্ষের মারামারিতে সভাপতির কক্ষ ভাঙচুর
ঢামেকে ছাত্রলীগের দুপক্ষের মারামারিতে সভাপতির কক্ষ ভাঙচুর
ঢামেকে ছাত্রলীগের দুপক্ষের মারামারিতে সভাপতির কক্ষ ভাঙচুর
ঢামেকে ছাত্রলীগের দুপক্ষের মারামারিতে সভাপতির কক্ষ ভাঙচুর
ঢামেকে ছাত্রলীগের দুপক্ষের মারামারিতে সভাপতির কক্ষ ভাঙচুর

গ্রুপে কর্মী নেয়াকে কেন্দ্র করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আবু সাঈদ আল মাহমুদের কক্ষ ভাঙচুর করেছে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. ইরতিজা হাসান ফয়সালের অনুসারীরা।

গত রবিবার (২৭ আগস্ট) রাত ১২টার সময়ে এ ঘটনা ঘটে। সাঈদ ঢামেকের ডা. ফজলে রাব্বি হলের ২০৩ নং কক্ষে থাকেন।

এ ঘটনার একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী জানায়, শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আবু সাঈদ আল মাহমুদের অনুসারী ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো.ইরতিজা হাসানের অনুসারী ২০২২-২৩ সেশনের আরিফুল ইসলামকে ডা. ফজলে রাব্বি হলের ইমরানের ক্যান্টিনে চা খেতে বলে। পরবর্তীতে আরিফুল চা খাবে না বলে জানায়। আরিফুলকে চা খাওয়ানোর অফারকে গ্রুপে কর্মী টানার অভিযোগ এনে আব্দুল্লাহর কক্ষে গিয়ে তার ব্যবহারের বিভিন্ন জিনিসপত্র বাহিরে ফেলে দেয়। আব্দুল্লাহকে রুমে না পেয়ে খোঁজাখুজি শুরু করে হলের ছাদে পেয়ে উপর্যুপরি কিল ঘুষি মারে ইরতিজা হাসানের অনুসারীরা। একইসময়ে সভাপতি সাঈদের কক্ষেও ভাঙচুর করে ইরতিজা হাসানের অনুসারীরা।

এ বিষয়ে মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ বলেন, জুনিয়র আরিফুলকে চা খেতে বললে সে অস্বীকৃতি জানায়। পরবর্তী সময়ে তারা (সাধারণ সম্পাদক গ্রুপ) জানতে পেরে আমার কক্ষে গিয়ে আমার ব্যবহৃত জিনিসপত্র ফেলে দেয়। আমাকে কক্ষে না পেয়ে ছাদে যায় তারা। ছাদে তখন আমি আমাদের জুনিয়রদের নিয়ে আড্ডা দিচ্ছিলাম। ছাদে পেয়ে উপর্যুপরি কিল ঘুষি মারেন তারা। আমার বন্ধু আশরাফুল, প্রতীক ভাস্কর ও বিরুপাক্ষ পাল আমাকে বাঁচাতে চাইলে তাদেরকেও মারধর করা হয়।

শুধু তারা মারধর করেছে, আপনারা মারধরে জড়িত ছিলেন কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে আব্দুল্লাহ বলেন, আমার সভাপতির পক্ষ থেকে মারধর করার কোন নির্দেশনা নেই, আমরা আত্মরক্ষা করার চেষ্টা করেছি। এ বিষয়ে প্রাধ্যক্ষ বরাবর লিখিত অভিযোগ দিবো। তবে এ বিষয়ে জানতে আরিফুলকে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।

মারধরের নেতৃত্ব দেওয়া ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের মুহাতাসিম বিন আরফাত অর্ণব ও ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শরীফ হাসান মৃধাকে চিনতে পারেন মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ। এরা দু'জনের নেতৃত্বে ১০-১৫ জন বিভিন্ন দেশী অস্ত্র হাতে নিয়ে উপস্থিত ছিল বলে জানায় প্রত্যক্ষদর্শীরা। অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে অর্ণবের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। শরীফ হাসান মৃধাকে ফোন দেওয়া হলে তিনি সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে কথা বলতে বলে 'কল' কেটে দেন।

এদিকে গ্রুপে কর্মী টানার অভিযোগকে কেন্দ্র করে একইসময়ে শাখা সভাপতি আবু সাঈদ আল মাহমুদের কক্ষ ভাংচুর করার অভিযোগ রয়েছে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. ইরতিজা হাসান ফয়সালের অনুসারীরা। কক্ষ ভাংচুরের সময় সাঈদ ও ফয়সাল ঘটনাস্থলে ছিলেন বলে জানা যায়। কক্ষ ভাংচুরের নেতৃত্বে ছিলেন— শাখা ছাত্রলীগের সাবেক দপ্তর সম্পাদক খান মোহাম্মদ সাদমান সাকিব,সাবেক প্রচার সম্পাদক মো: ওবায়দুর রশিদ, সাবেক উপ- প্রচার সম্পাদক হাসিবুর রহমান তানভীর,আনিসুজ্জামান শিপন, সাবেক উপ অর্থ বিষয়ক সম্পাদ রিফাদুল হাসান রাফি,সাবেক উপ মুক্তিযুদ্ধ গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক মাহারাফ হোসেন ও সাবেক সহসম্পাদক মির্জা সাইফুর রহমান প্রমুখ।

তবে সভাপতি সাঈদ আল মাহমুদের অনুসারীরাও সাধারণ সম্পাদকের অনুসারীদের কক্ষ ভাংচুর করেছে বলে অভিযোগ করেন ইরতিজা হাসান ফয়সালের অনুসারীরা। মাহরাফ হেসেন বলেন,আমাদের কক্ষ ভাংচুর করার বিষয়ে সভাপতির কাছ থেলে জানতে চাচ্ছিলাম। সেসময়ে সভাপতির অনুসারীরা নিজেরা নিজেদের কক্ষ ভাংচুর করেছে। আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। সাদমান সাকিব,ওবায়দুর রশিদ ঘটনাস্থলে ছিলেন না বলে জানান তারা। হাসিবুর রহমান তানভীর গতকাল বাড্ডায় ছিলেন বলে জানায়। রিফাদুল হাসান রাফিকে ফোন দেওয়া হলে তিনি কোন ধরনের মন্তব্য করতে রাজি হননি।

শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আবু সাঈদ আল মাহমুদ কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেনের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। এদিকে মো. ইরতিজা হাসান ফয়সাল শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি শেখ মো. আল আমিন ও কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনানের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।

ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে আবু সাঈদ আল মাহমুদ জানান, আমি কখনো সংঘর্ষ চাই না, কলেজে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ থাকুক সেটা চাই। আমার কক্ষ ভাংচুর করার বিষয়ে আমার সাংগঠনিক অভিভাবক ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে জানিয়েছি। পাশাপাশি কলেজ ও হল প্রশাসনকে বিষয়টি অবগত করেছি। দোষীদের ব্যাপারে সাংগাঠনিক ও একাডেমিক কাউন্সিলের পক্ষ থেকে যৌক্তিক বিচারের অপেক্ষায় রয়েছি।

অভিযোগের বিষয়ে মো. ইরতিজা হাসান ফয়সাল বলেন, আমিও ছিলাম সঙ্গে সাঈদও (সভাপতি) ছিল। এর আগে সাঈদের জুনিয়রর ও আমাদের জুনিয়রদের সঙ্গে কয়েকটি বিষয় নিয়ে ঝামেলা হয়। কোন ধরনের সংঘর্ষ যেন না হয় সেজন্য আমি আর সাঈদ সচেষ্ট ছিলাম। সাঈদের কক্ষে তার জুনিয়ররাই ছিল। কে বা কারা তার কক্ষ ভাঙচুর করছে তা আমি জানি না। কোন একটা বিষয়কে ধামাচাপা দেওয়ার জন্য এটা করা হতে পারে।

সার্বিক বিষয়ে শহীদ ডা. ফজলে রাব্বি হলের প্রাধ্যক্ষ হাসানুর রহমান বলেন, নতুন শিক্ষার্থী আসার পরে সিনিয়রদের দুগ্রুপে একটু উত্তেজনা হয়েছে। কক্ষ ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। বিষয়টি আমি খোঁজ খবর নিয়েছি, সিনিয়রদের সঙ্গেও আলাপ করেছি। এ নিয়ে কলেজের উপাধ্যক্ষকে আহবায়ক করে সাত সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। সাত দিনের মধ্যে তদন্ত করে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App