×

জাতীয়

এনআইডি-আঙ্গুল-চোখের ছাপ হাতিয়ে নিচ্ছিল চক্রটি

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২১ আগস্ট ২০২৩, ০৬:৩৪ পিএম

এনআইডি-আঙ্গুল-চোখের ছাপ হাতিয়ে নিচ্ছিল চক্রটি
চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে সাতজনকে গ্রেপ্তার করেছে মিরপুর মডেল থানার পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো- অনিক (২২), রবিউল হোসেন (২৫), সাব্বির করিম আহাম্মেদ (৩৭), জোবায়ের আলম (৩৬), মোক্তার হোসেন (২৫), অন্তু দে (২২) ও ফজলুল করিম নাহিদ (৩৪)। পুলিশ বলছে, গ্রেপ্তারকৃতরা প্রতারক চক্রের সদস্য। তারা জ্বিনের বাদশাহ, বিভিন্ন সরকারি কর্মকর্তা ও বিকাশ-নগদ কর্মকর্তা সেজে ফোন করে প্রতারণার ফাঁদে ফেলতো। এ জন্য তারা যে মোবাইল দিয়ে ফোন করতো তার সিমও প্রতারণার মাধ্যমে সংগ্রহ করা হতো। সেই ক্ষেত্রে স্বল্পমূল্যে চাল ও তেল দেয়ার নাম করে কম শিক্ষিত, সহজ-সরল ও প্রযুক্তি কম বুঝে এমন মানুষদের টার্গেট করে তাদের জাতীয় পরিচয়পত্র, আইরিস (চোখের ছাপ) ও আঙ্গুলের ছাপ হাতিয়ে নিচ্ছিলো চক্রটি। এসব ব্যবহার করে অজান্তেই সিম সংগ্রহ করতো তারা। এ ক্ষেত্রে ৫০ টাকার সিম প্রতারকরা বিক্রি করতো ৫ হাজার টাকায়। এ গ্রুপের নেতৃত্ব দিতো গ্রেপ্তারকৃত অনিক। এ বিষয়ে সোমবার (২১ আগস্ট) মিরপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন ভোরের কাগজকে বলেন, গত বছরের ৭ সেপ্টেম্বর মিরপুর মডেল থানায় বিকাশ প্রতারণার ঘটনায় হওয়া একটি মামলা তদন্ত করতে গিয়ে বেরিয়ে আসে ভয়ঙ্কর এই চক্রের নাম। এ মামলায় তদন্তে নেমে অরুনা নামে এক নারীকে আটক করা হয়। তিনি জানান, কোনো মোবাইলই ব্যবহার করেন না! তাই তার কাছে কোন সিম নেই। কোন বিকাশ কিংবা নগদ একাউন্টও নেই তার। পরে প্রযুক্তির সহায়তায় নিশ্চিত হওয়া যায়, এই ঘটনার সঙ্গে অরুণার যোগসাজশ নেই। কারণ, অরুণা ঢাকায় থাকলেও সেই সিমের অবস্থান রাজশাহীতে! পরে অরুণাকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, সরকার স্বল্পমূল্যে চাল, ডাল, তেল দিবে বলে কিছুদিন আগে তাদের বাসায় কয়েকজন লোক আসে। তারা এজন্য তার জাতীয় পরিচয়পত্র, আইরিস ও আঙ্গুলের ছাপ নিয়ে যায়। কিন্তু এরপর তারা আর আসেননি। তখন আরো অধিকতর তদন্ত নেমে গতকাল রবিবার আমরা ওই ৭জনকে গ্রেপ্তারে সমর্থ হই। মূলত এই প্রতারক চক্র তিন ধাপে প্রতারণার কাজ করে থাকে উল্লেখ করে ওসি আরো বলেন, প্রতিটি ধাপেই আলাদা আলাদা গ্রুপ কাজ করে। প্রথম ধাপে প্রথম গ্রুপ বিভিন্ন মানুষের জাতীয় পরিচয়পত্র, আঙ্গুলের ছাপ সংগ্রহ করে। এই গ্রুপ তাদের এসব তথ্য দ্বিতীয় গ্রুপের কাছে বিক্রি করে দেয়। দ্বিতীয় ধাপে এই গ্রুপ এসব তথ্য দিয়ে এসব নামে সিম কেনে ও বিকাশ এবং নগদ একাউন্ট খুলে। এরপর এসব সিম তারা উচ্চ মূল্যে বিক্রি করে দেয় তৃতীয় গ্রুপের কাছে। তারা এসব সিম ব্যবহার করে কখনও জ্বিনের বাদশাহ, কখনও বিকাশ বা নগদ এজেন্ট, আর কখনও বা বিভিন্ন সরকারি কর্মকর্তা সেজে মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে। মোবাইল ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠানেও চাকরি করে এ চক্রের সদস্যরা। গ্রেপ্তার জোবায়ের, সাব্বির, মোক্তার হোসেন ও অন্তু দে মোবাইল ব্যাংকিং ডিস্ট্রিবিউশনের নিয়োগকৃত কর্মকর্তা। তারা তাদের কাছে থাকা পাসওয়ার্ড এজেন্টের কাছে দিয়ে দেন। এরফলে এজেন্ট সহজেই একাউন্ট খুলে ফেলতে পারে। তাদের দাবি, প্রতিষ্ঠানের বেধে দেয়া মাসিক টার্গেট পূরণের জন্যই তারা এভাবে এই প্রতারক চক্রকে ‘সহযোগিতা’ করেছেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App