আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে ছাত্রদলের গ্রেপ্তার ছয় নেতা বড় ধরনের নাশকতার পরিকল্পনা করছিল বলে জানিয়েছেন ডিএমপির যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম ও ডিবি-উত্তর) খোন্দকার নুরুন্নবী।

রবিবার (২০ আগস্ট) দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি নিশ্চিত করে ডিবি। গ্রেপ্তার ছাত্রদলের ছয় নেতা আগ্নেয়াস্ত্র সংগ্রহ করেন বলেও দাবি ডিবির।

ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় এক নেতাকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে-এমন খবরে তাকে খুঁজতে বের হয়ে আরো পাঁচ নেতার হদিস মিলছিল না বলে অভিযোগ করে বিএনপি। পরবর্তীতে তাদের ছয়জনের খোঁজ মিলে। শনিবার (১৯ আগস্ট) রাতে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) তাদের গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- ছাত্রদলের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মমিনুল ইসলাম ওরফে ফজিসান (৩১), বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাবেক সহ-সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আরিফ বিল্লাহ (৩০), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সহ-সভাপতি মো. হাসানুর রহমান হাসান (৩২), ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মো. শাহাদত হোসেন (৩১), জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাবেক সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জহির উদ্দিন মোহাম্মদ বাবর (৩২) ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুল্লাহ আর রিয়াদ (২১)।

গ্রেপ্তার ছাত্রদল নেতাদের সম্পর্কে জানাতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে খোন্দকার নুরুন্নবী বলেন, ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা গুলশান বিভাগের অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও মাদক নিয়ন্ত্রণ টিম বিশেষ অভিযান চালিয়ে লালবাগ থানাধীন বাসা নং- ৩৮/১/এ এর তৃতীয় তলায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে তিনটি অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র ও ৩৬ রাউন্ড গুলিসহ ছয়জন সন্ত্রাসীকে গ্রেপ্তার করেছে।

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ কর্মকর্তা জানান, গ্রেপ্তারের পর মমিনুল ইসলাম ও মোহাম্মদ আরিফ বিল্লাহের দেহ তল্লাশি করা হয়। এসময় তাদের কাছ থেকে এক রাউন্ড গুলিভর্তি পিস্তল, আট রাউন্ড গুলিভর্তি ব্রেক রিভলবার,  ১৯ রাউন্ড গুলি, আট রাউন্ড গুলিভর্তি ব্রেক রিভলবার জব্দ করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃতরা জানান, বিএনপির হাইকমান্ডের নির্দেশে ছাত্রদলের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখাসহ অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় শাখাগুলো রাজপথে শক্তির মহড়া দিতে অস্ত্র বহন করছে। এর মাধ্যমে তারা জনমনে ভীতি এবং আতঙ্ক সৃষ্টি করতে চায়। সরকারকে অস্থিতিশীল করার পরিকল্পনা ছিল তাদের।

খোন্দকার নুরুন্নবী বলেন, গ্রেপ্তারকৃতদের কাছ থেকে আমরা কয়েকটি মোবাইল জব্দ করেছি। তাদের মোবাইলেও বেশ কিছু তথ্য পাওয়া গেছে। এছাড়ার উদ্ধারকৃত অস্ত্রের ছবিও মোবাইলে পাওয়া গেছে। অস্ত্রগুলোর মধ্যে একটি অস্ত্র টেকনাফ থেকে সংগ্রহ করেন তারা। আরেকটি অস্ত্র পাবনা থেকে সংগ্রহ করেছেন বলে জানিয়েছেন। যাদের কাছে থেকে তারা অস্ত্র সংগ্রহ করেছেন তাদের নাম-ঠিকানাও আমরা পেয়েছি। তাদের গ্রেপ্তারের অভিযান অব্যাহত আছে।

পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, তারা আগামী নির্বাচনে সন্ত্রাস ও নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড চালাতে এই অস্ত্র সংগ্রহ করেন। তাদের বিরুদ্ধে দুটি মামলা হয়েছে। আজ আদালতে পাঠিয়ে রিমান্ডের জন্য আবেদন করা হয়েছে। রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে তাদের কাছ থেকে আরও তথ্য পাওয়া যাবে। এতে আরও অস্ত্র উদ্ধার করা সম্ভব হবে।