×

জাতীয়

মুশতাকের জামিন, ছাত্রী সেইফ হোমে

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৭ আগস্ট ২০২৩, ০৬:১৫ পিএম

মুশতাকের জামিন, ছাত্রী সেইফ হোমে

ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর মতিঝিলের আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের গভর্নিং বডির দাতা সদস্য খন্দকার মুশতাক আহমেদের বিরুদ্ধে ওই কলেজের ছাত্রীকে সিনথিয়া ইসলামকে ফাঁদে ফেলে ধর্ষণের অভিযোগে করা মামলায় মুশতাককে ছয় সপ্তাহের আগাম জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট। সেইসঙ্গে বয়স নিয়ে দুই পক্ষের পরস্পর বিরোধী বক্তব্য থাকায় ছাত্রীকে নারী ও সমাজ সেবা অধিদপ্তরের অধীনে সেইফ হোমে (নিরাপদ হেফাজতে) পাঠানোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

বিচারপতি শেখ জাকির হোসেন ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) এ আদেশ দেন। মোশতাকের আগাম জামিন শুনানিতে আদালত বলেন, আইডিয়ালের ছাত্রীর বয়স নিয়ে আসামিপক্ষ ও রাষ্ট্রপক্ষ পরস্পর বিরোধী বক্তব্য আছে। তাই ভিকটিমের বয়স নির্ধারণ করা জরুরি। বয়স নির্ধারণ না হওয়া পর্যন্ত ভিকটিম ছাত্রী নারী ও সমাজ সেবা অধিদপ্তরের অধীনে সেইফ হোমে (নিরাপদ হেফাজতে) থাকবে।

এসময় আসামির পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সাঈদ আহমেদ রাজা। রাষ্ট্রপক্ষে জামিনের বিরোধিতা করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আবুল হাশেম ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মাহফুজুর রহমান লিখন।

এদিকে, গতকাল রাজধানীর মতিঝিলের আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের গভর্নিং বডির দাতা সদস্য খন্দকার মুশতাক আহমেদের বিরুদ্ধে ওই কলেজের এক ছাত্রীকে প্রলোভন ও ধর্ষণের অভিযোগে করা মামলার জামিন শুনানিতে মুশতাকের উদ্দেশ্যে হাইকোর্ট মন্তব্য করেন, আপনি নৈতিকভাবে কাজটি ঠিক করেননি। পরে মুশতাকের জামিন আবেদন শুনতে অপারগতা প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট। বিচারপতি আবু তাহের সাইফুর রহমান ও বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের বেঞ্চ গতকাল বুধবার অপারগতা জানিয়ে জামিন আবেদনটি ফিরিয়ে দিয়েছেন। এসময় আসামিপক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট সোহরাব হোসেন। অপরদিকে, রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান আহম্মদ ভূঁইয়া।

আগাম জামিন আবেদন শুনানিতে মুশতাকের কাছে হাইকোর্ট জানতে চান, আগে আপনি বিবাহিত ছিলেন কি? তখন মুশতাক বলেন, আগের স্ত্রীর সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ হয়ে গেছে। মুশতাকের আইনজীবী বলেন, তাদের (ছাত্রী ও মুশতাক) বিয়ে হয়ে গেছে। ছাত্রী প্রাপ্তবয়স্ক। একপর্যায়ে মুশতাকের উদ্দেশে আদালত মন্তব্য করেন, আপনি নৈতিকভাবে কাজটি ঠিক করেননি। এক পর্যায়ে মুশতাকের আইনজীবী আদালতকে অবহিত করেন, ওই মামলার অপর আসামিকে হাইকোর্টের অপর একটি দ্বৈত বেঞ্চ জামিন দিয়েছেন। এসময় রাষ্ট্রপক্ষ জামিনের বিরোধিতা করলে শুনানির একপর্যায়ে আদালত বলেন, আমরা এই আবেদন শুনতে আগ্রহী নই। পরে মুশতাকের আইনজীবী আবেদন ফেরতের আরজি জানালে আদালত তা ফেরত দেন।

প্রলোভন ও জোরপূর্বক ধর্ষণের অভিযোগে খন্দকার মুশতাক আহমেদকে প্রধান আসামি করে গত ১ আগস্ট মামলা করেন সিনথিয়ার বাবা মো. সাইফুল ইসলাম। এ মামলার দুই নম্বর আসামি হলেন ওই কলেজের অধ্যক্ষ ফাওজিয়া রাশেদী। ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৮ এর বিচারক বেগম মাফরোজা পারভীনের আদালতে এই মামলার আবেদন করা হয়। আদালত বাদীর জবানবন্দি নিয়ে গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) অভিযোগটি এজাহার হিসেবে গণ্য করে নিয়মিত মামলা হিসেবে তালিকাভুক্ত করার আদেশ দেন।

উল্লেখ্য, গত ৩ জুন মোশতাক ও সিনথিয়া ধর্ষণের অভিযোগ অস্বীকার করেন। তারা জানান, গত মার্চ মাসে রেজিস্ট্রি করে বিয়ে করেছেন।

অধ্যক্ষ ফাওজিয়া রাশেদীর জামিন বহাল এই মামলায় অধ্যক্ষ ফাওজিয়া রাশেদীকে হাইকোর্টের দেয়া আগাম জামিন বহাল রেখেছেন সুপ্রিম কোর্টের চেম্বার জজ আদালত। বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহীমের চেম্বার জজ আদালত গতকাল বুধবার এ আদেশ দিয়েছেন।

এই মামলায় গত সোমবার হাইকোর্ট থেকে আগাম জামিন পায় মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ ফাওজিয়া রাশেদী। হাইকোর্টের বিচারপতি শেখ মো. জাকির হোসেন ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ আদেশ দেন। ওইদিন জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন সিনিয়র অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ খুরশীদ আলম খান, সঙ্গে ছিলেন অ্যাডভেকেট মো. মজিবুর রহমান, অ্যাডভোকেট রেদওয়ানুল করিম ও এ কে এম খলিলুল্লাহ কাশেম। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ আবুল হাশেম। এ জামিন আদেশ স্থগিত চেয়ে চেম্বার আদালতে আবেদন করেন রাষ্ট্রপক্ষ। ওই আবেদনের শুনানিতে গতকাল ‘নো অর্ডার’ দিয়েছেন চেম্বার জজ আদালত।

পরে ফাওজিয়া রাশেদীর আইনজীবী অ্যাডভেকেট মো. মজিবুর রহমান বলেন, এক ছাত্রীকে ধর্ষণে সহযোগিতা করার মামলায় অধ্যক্ষর আগাম জামিন মঞ্জুর করেন হাইকোর্ট। ছয় সপ্তাহ পরে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এ জামিন বাতিল চেয়ে চেম্বার আদালতে আবেদন করা হয়। শুনানিতে হাইকোর্টের আদেশ বহাল রাখেন চেম্বার আদালত।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App