×

জাতীয়

আজ কবি শামসুর রাহমানের প্রয়াণবার্ষিকী

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৭ আগস্ট ২০২৩, ০২:২১ পিএম

আজ কবি শামসুর রাহমানের প্রয়াণবার্ষিকী

শামসুর রাহমান

প্রেম, দ্রোহ ও বিশ্বজনীনতা নিয়ে অসংখ্য কবিতা লিখেছেন শামসুর রাহমান, যা আজও সব বয়সের মানুষকে উজ্জীবিত করে। সর্বোপরি কবিতা রচনায় স্বাধীনতার কণ্ঠকে ধারণ করেন। তার সৃষ্টিশীলতার বিশালতার কারণে বাংলা কবিতায় তাকে স্বাধীনতার কবি বলা হয়।

আধুনিক বাংলা কবিতার বরপুত্র এই কবি ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতাউত্তর প্রতিটি আন্দোলনের অব্যক্ত আবেগ-অনুভূতিকে ধারণ করে গোটা জাতিকে উদ্বুদ্ধ করেছিলেন তিনি। কবিতায় তার মৃত্যুপরবর্তী অনুরণন তুলে ধরেছিলেন। তিনি লিখেছেন, ‘তখন আমার কবরের ঘাসে, কাঁটাগুল্ম, আগাছায়/কখনো নিঝুম রোদ, কখনো হৈ-হৈ বৃষ্টি, কখনো/জ্যোৎস্নার ঝলক, কখনো অমাবস্যা/কখনো বা হাওয়ার ফোঁপানি’- ‘আমার মৃত্যুর পরে’…। এই গুণী ব্যক্তিত্বের ১৭তম প্রয়াণবার্ষিকী আজ বৃহস্পতিবার।

২০০৬ সালের আজকের এই দিনে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। রাজধানীর বনানী কবরস্থানে মায়ের কবরের পাশে সমাহিত করা হয় তাকে।

১৯২৯ সালের ২৩ অক্টোবর পুরান ঢাকার মাহুতটুলীতে শামসুর রাহমান জন্মগ্রহণ করেন। এই রাজধানীতেই তার বেড়ে ওঠা। তাই নাগরিক দুঃখ-সুখ তার কবিতায় বিশেষভাবে উঠে এসেছে। জীবনের সত্য-সুন্দরকে তুলে ধরার ক্ষেত্রে তিনি ছিলেন অনন্য। পাশাপাশি বাঙালির সব আন্দোলন-সংগ্রামের গৌরবদীপ্ত অধ্যায় ফিরে ফিরে এসেছে তার কবিতায়।

শামসুর রাহমানের প্রথম কবিতার বই ‘প্রথম গান দ্বিতীয় মৃত্যুর আগে’ প্রকাশ পায় ১৯৬০ সালে। এরপর ষাট দশকে প্রকাশিত বইগুলো হচ্ছে ‘রুদ্র করোটিতে’, ‘বিধ্বস্ত নীলিমা’, ‘নিরালোকে বসতি’, ‘নিজ বাসভূমে’, ‘বন্দি শিবির থেকে’, ‘মাতাল ঋতিক’সহ মৃত্যুর আগ পর্যন্ত কবির ৬০টি কবিতার বই প্রকাশ পায়। এছাড়া শিশুতোষ, গল্পগ্রন্থ, উপন্যাস, নাটক ও কবিতা সমগ্র, অনুবাদগ্রন্থ, নির্বাচিত কলামসহ কবির বিভিন্ন বিষয়ে প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা শতাধিক। তবে তার চতুর্থ গ্রন্থ ‘নিরালোকে দিব্যরথ’ প্রকাশের মধ্য দিয়ে তার নিজস্ব স্বর ও শিল্পবোধের স্বাতন্ত্র স্পষ্ট হয়ে ওঠে।

শামসুর রাহমান সাংবাদিক হিসেবে ১৯৫৭ সালে কর্মজীবন শুরু করেন দৈনিক মর্নিং নিউজে। ১৯৭৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তিনি দৈনিক বাংলা ও সাপ্তাহিক বিচিত্রার সম্পাদক নিযুক্ত হন। ১৯৮৭ সালে সামরিক সরকারের শাসনামলে তাকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়। এরপর তিনি অধুনা নামের একটি মাসিক সাহিত্য পত্রিকার সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

শিল্প-সাহিত্যে অবদানস্বরূপ তিনি বাংলা একাডেমি পুরস্কার (১৯৬৯), একুশে পদক (১৯৭৭), স্বাধীনতা পদকসহ (১৯৯১) দেশ-বিদেশের অসংখ্য পুরস্কার অর্জন করেন। রবীন্দ্র ভারতী ও যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তাকে সম্মানসূচক ডি-লিট ডিগ্রি দেয়া হয়। বাংলাদেশের মানুষের জন্য তিনি আমৃত্যু লিখেছেন। মৃত্যুর পর কবির ইচ্ছানুযায়ী ঢাকার বনানী কবরস্থানে মায়ের কবরের পাশে সমাহিত করা হয়।

কর্মসূচি : বাংলা একাডেমি বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় একাডেমির কবি শামসুর রাহমান সেমিনার কক্ষে কবি শামসুর রাহমান স্মরণে একক বক্তৃতানুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে কবি শামসুর রাহমান বিষয়ক একক বক্তৃতা দেন কবি অসীম সাহা। এতে সভাপতিত্ব করেন বাংলা একাডেমির সভাপতি কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন। এছাড়া জাতীয় কবিতা পরিষদ সকালে কবির সমাধীতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App