×

জাতীয়

এবারের লড়াই জীবনপণ লড়াই

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১১ আগস্ট ২০২৩, ০৪:০২ পিএম

এবারের লড়াই জীবনপণ লড়াই

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ফাইল ছবি

এবারের লড়াই জীবনপণ লড়াই
এবারের লড়াই জীবনপণ লড়াই

শুক্রবার বিকেলে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি আয়োজিত গণমিছিলপূর্ব সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: ভোরের কাগজ

এবারের লড়াই জীবনপণ লড়াই
এবারের লড়াই জীবনপণ লড়াই

দেশের ১৮ কোটি মানুষ বিএনপির সঙ্গে রয়েছে দাবি করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, জেল, জুলুম, কারগার দিয়ে আন্দোলন দমিয়ে রাখা যাবে না। এবারের লড়াই জীবনপণ লড়াই। তিনি বলেছেন, ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে কেরিক্যাচাল করে ২০১৪-২০১৮ এর মত আবারো ক্ষমতায় যেতে চাইছে আওয়ামী লীগ। এবার জনগণ তা হতে দিবে না। শেখ হাসিনার পদত্যাগের যে দাবি উঠছে তা গণভবন এবং বঙ্গভবন পর্যন্ত পৌঁছাতে হবে।

শুক্রবার (১১ আগস্ট) বিকেলে ঢাকা মহানগরর উত্তর বিএনপির আয়োজিত গণমিছিলের পূর্বে বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বক্তব্যের শুরুতে গণমিছিলে অংশ নিতে আসা নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আজ আমাদের একটাই দাবি, দাবি কি? তখন নেতাকর্মীরা উত্তর দেন- হাসিনার পদত্যাগ। এ সময় ফখরুল বলেন, এই দাবির পক্ষে জোরে আওয়াজ তুলতে হবে, এ দাবি গণদাবিতে পরিণত করতে হবে।

সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে শুক্রবার ঢাকার দুটি এলাকায় গণমিছিল কর্মসূচি পালন করে বিএনপি। এ কর্মসূচির আয়োজন করে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি। রাজধানীর উত্তর বাড্ডা এলাকায় সুবাস্ত টাওয়ারের সামনে থেকে বিএনপির নেতা-কর্মীরা গণমিছিল শুরু করে বিকেল পৌনে চারটায়। এই মিছিল মালিবাগ এলাকায় গিয়ে শেষ হয়। বিএনপির আরেকটি গণমিছিল শুরু হয় বিকেল পৌনে চারটায় কমলাপুর স্টেডিয়ামের সামনে থেকে। এই মিছিলও মালিবাগে গিয়ে শেষ হয়। গণমিছিলের আগে দুই জায়গাতেই বেলা দেড়টা থেকে বিএনপির নেতা কর্মীরা ব্যানার, ফেস্টুন হাতে নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে স্লোগান দিয়ে খন্ড খন্ড মিছিল নিয়ে জড়ো হতে থাকে। গণমিছিল শুরুর আগে দুটি স্থানেই পিকআপ ভ্যানে অস্থায়ী মঞ্চ নির্মাণ করে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বিএনপির নেতারা।

উত্তরা বাড্ডাতে গণমিছিল শুরুর আগে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এছাড়াও স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, নজরুল ইসলাম খানসহ দলের অঙ্গ ও সংগঠনের নেতারা বক্তব্য রাখেন। এতে সভাপতিত্ব করেন বিএনপি ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান। সঞ্চালনা করেন ঢাকা মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল হক।

অন্যদিকে কমলাপুরে গণমিছিল শুরুর আগে সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন-বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, এছাড়াও অপর স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মঈন খান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়সহ অন্যান্য নেতারা বক্তব্য রাখেন। এতে সভাপতিত্বে করেন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালাম। বিএনপির দুটি মিছিলকে কেন্দ্র করে ঢাকার সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলোতে বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়।

সরকারকে পদত্যাগের আহ্বান জানিয়ে বিএনপির মহাসচিব বলেন, মানে মানে কেটে পড়ুন, পদত্যাগ করুন না হলে ফয়সালা হবে রাজপথে। আমরা নতুন যুদ্ধে নতুন লড়াই শুরু করেছি। অধিকার নিয়ে তবেই ঘরে ফিরবো। এই মিছিলের মাধ্যমে জানিয়ে দিতে চাই সরকারের দিন শেষ।

তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন দইটি দলকে নিবন্ধন দিয়েছে; অথচ এদের কেউ চেনেই না। এই দুটি দল দিয়ে সরকার নির্বাচন-নির্বাচন খেলা খেলতে চায়। এবার এ খেলা খেলতে দেয়া হবে না। শেখ হাসিনার অধীনে কোন নির্বাচন হবে না। হতে দেয়া হবে না। এ সময় আন্দোলন দমাতে বিচার বিভাগকে ব্যবহার করে বিএনপির নেতাকর্মীদের জেল দেয়া হচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি।

এ সময় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদ্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, সরকারের কম্পন শুরু হয়ে গেছে। কারণ, স্বৈরাচারী সরকারকে বিদায় করতে সমস্ত দেশের মানুষ আজ প্রস্তুত। তাই সরকার হটাতে সবাইকে ঐক্যদ্ধভাবে জয়ের পথে এড়িয়ে যেতে হবে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির অপর সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, আজ দেশের মানুষ খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ।

তিনি আরও বলেন, সেদিনই স্বাধীন হবে, দেশের গণতন্ত্র মুক্তি পাবে যেদিন দেশের মানুষ তাদের পছন্দের প্রাথীকে ভোট দিতে পারবে। তাই গণতন্ত্র পূণরুদ্ধারের শেষ লড়াইয়ে সবাইতে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আমন্ত্রণ রইলো।

অন্যদিক মহানগর দক্ষিণ বিএনপির গণমিছিল পূর্বক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস হুঁশিয়ারি দেন- নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচন হলে সেটাকে প্রতিহত করা হবে।

তিনি বলেন, বিএনপির নেতাকর্মীদের হাতুড়ি বাহিনী দিয়ে আঘাত করা হচ্ছে। পুলিশের গুলিতে আমাদের অনেক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন, অনেকের চোখ পর্যন্ত নষ্ট হয়ে গেছে। ক্ষমতায় টিকে থাকাতে শেখ হাসিনা পৈশাচিক কায়দায় নির্যাতন চালাচ্ছে।

মির্জা আব্বাস বলেন, শুনলাম নির্বাচন কমিশন নাকি ১৫ নভেম্বর তফসিল ঘোষণা করবেন। তফসিল ঘোষণা করবে তথাকথিত নির্বাচন কমিশন। যে নির্বাচন কমিশন আমরা মানি না। যে নির্বাচন কমিশন এই নিশিরাতের সরকারের নির্বাচিত কমিশন। নির্বাচন কমিশনকে হুঁশিয়ার করতে চাই, সরকারি আদেশ মেনে আপনারা যে কাজ করছেন, সেটা অন্যায়।

এ সময় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ড. আবদুল মঈন খান বলেন, বর্তমান সরকারকে অবিলম্বে পদত্যাগ করে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। এরপর নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের অধীনে বাংলাদেশে নির্বাচন হবে।

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, এ ফ্যাসিবাদীদের যতদিন ক্ষমতায় রাখা হবে, দেশের ততই ক্ষতি। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এদের বিদায় করতে হবে। এখন আমরা শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করে সরকার পতনের করার চেষ্টা করছি। তবে, কেউ অশান্তি করলে আমরা তার দাঁতভাঙা জবাব দেবো।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App