×

জাতীয়

দুদক কর্মকর্তা মাহবুবের সম্পদ অনুসন্ধানে কমিটি

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১০ আগস্ট ২০২৩, ০৮:৩২ পিএম

দুদক কর্মকর্তা মাহবুবের সম্পদ অনুসন্ধানে কমিটি

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপ-পরিচালক মুহা. মাহবুবুল আলম। ফাইল ছবি

অভ্যন্তরীণ তদন্তে যথেষ্ট তথ্য-প্রমাণ পাওয়ার পর জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপ-পরিচালক মুহা. মাহবুবুল আলমের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতিবিরোধী সংস্থাটি। সম্প্রতি কমিশন থেকে এ বিষয়ে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয়ার পর বৃহস্পতিবার দুদক পরিচালক শফিকুল ইসলাম ভূঁইয়ার নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি অনুসন্ধান টিম গঠন করা হয়। তিন সদস্যের একটি অনুসন্ধান টিমকে মাহবুবুল আলমের জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধান করে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে। টিমের অপর সদস্যরা হলেন- দুদকের উপ-পরিচালক হাফিজুল ইসলাম ও সহকারী পরিচালক নেয়ামুল আহসান গাজী। দুদক সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

দুদক সূত্রে জানা গেছেÑ মাহবুবুল আলম দুদকে ২৮ বছর আগে পরিদর্শক পদে যোগ দেন। এরপর পদোন্নতি পেয়ে হয়েছেন উপ-পরিচালক। তিনি বর্তমানে কমিশনের সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-২ এ কর্মরত রয়েছেন। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি-অনিয়মের সঙ্গে যুক্ত দুর্নীতিবাজদের অব্যাহতি দেয়ার বিনিময়ে কোটি কোটি টাকা ঘুষ নেয়ার অভিযোগ রয়েছে। মাহবুবুল আলম দুর্নীতি, ঘুষ নেয়া, অনৈতিকভাবে অর্জিত অর্থে নিজ নামে, স্ত্রী, মেয়ে ছাড়াও নিকটাত্মীয়র নামে রাজধানীর শান্তিনগর ও রামপুরায় বহুতল ভবন, ফ্ল্যাট, দোকান, গাড়ি, বিভিন্ন কোম্পানিতে বিনিয়োগ, বরগুনার আমতলী উপজেলায় তার গ্রামে কয়েক’শ বিঘা জমিসহ অঢেল সম্পত্তি গড়ার অভিযোগ রয়েছে। এসব অভিযোগের বিষয়ে অভ্যন্তরীণ অনুসন্ধান চালায় দুদক।

তিন বছর অনুসন্ধান শেষে বেশকিছু অভিযোগের প্রমাণও মিলেছে। তবে তার বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগ অনুসন্ধান প্রতিবেদনে প্রতিফলিত হয়নি বলে মনে করছে দুদক। তাই একটি বিশেষ সংস্থার মাধ্যমে এসব অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত চলছে। দুদকের উপ-পরিচালক মাহবুবুল আলমের বিরুদ্ধে ঘুষ নেয়া ও দুর্নীতির মাধ্যমে অঢেল সম্পত্তি মালিক হয়েছেন বলে ২০১৯ সালে কমিশনে একটি অভিযোগ জমা পড়ে। একই বছরের ৭ নভেম্বর একই ধরনের আরেকটি অভিযোগ জমা পড়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে। এরপর ওই বছরের ৩০ ডিসেম্বর মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে অভিযোগের সংশ্লিষ্ট নথিপত্র দুদকে পাঠিয়ে এ বিষয়ে তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে এবং গৃহীত ব্যবস্থা সম্পর্কে অবহিতকরণের অনুরোধ জানানো হয়। পরে ওই অভিযোগ অনুসন্ধানে দুদকের পরিচালক মুহাম্মদ ইউসুফকে দায়িত্ব দেয়া হয়। এর মধ্যে ২০২১ সালের ১৩ ডিসেম্বর মাহবুবুল আলমের বিরুদ্ধে একই ধরনের আরেকটি অভিযোগ জমা পড়ে দুদকে। তিন বছর অনুসন্ধান শেষে গত ২৪ জানুয়ারি প্রতিবেদন দাখিল করেন অনুসন্ধান কর্মকর্তা।

দুদকের অভ্যন্তরীণ তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়- মাহবুবুল আলমের নামে দান ও কেনাসূত্রে ১৮টি দলিলে ৪৫৫ শতক জমি এবং ২০ লাখ ১ হাজার ৩০০ টাকা বিনিয়োগসহ ২৯ লাখ ৮৩ হাজার ৫৯১ টাকার অস্থাবর সম্পত্তি রয়েছে। এছাড়া পটুয়াখালীর গলাচিপা আড়তপট্টিতে ছয়টি দোকান কিনেছেন তিনি। গ্রামে এক কোটি ৩ লাখ ৫১ হাজার টাকা মূল্যের কৃষি জমি রয়েছে তার। মাহবুবুল আলমের স্ত্রীর নামে ১৪টি দলিলে ৩৫৪ শতক জমি কেনার প্রমাণ পাওয়া যায়। এছাড়া একটি কোম্পানিতে পাঁচ লাখ টাকা বিনিয়োগ করার কথা বলা হয়। তার মেয়ের নামেও সাতটি দলিলে ১৪৫ দশমিক ৮৮ শতক জমি, ২৬ লাখ টাকার গাড়ি কেনা ছাড়াও পাঁচ লাখ টাকা বিনিয়োগসহ অন্যান্য সম্পত্তি থাকার তথ্য পাওয়া গেছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App