×

জাতীয়

ভারত চায় সংবিধান অনুযায়ীই নির্বাচন হোক

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১০ আগস্ট ২০২৩, ০৫:১৪ পিএম

ভারত চায় সংবিধান অনুযায়ীই নির্বাচন হোক

ছবি: ভোরের কাগজ

ভারত চায় সংবিধান অনুযায়ীই নির্বাচন হোক

ভারত সফর প্রসঙ্গে বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলন করে আওয়ামী লীগ। এতে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিষ্টার বিপ্লব বড়ুয়া, উপ প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল আউয়াল শামীম, উপ দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান, কার্যনির্বাহী সদস্য মেরিনা জাহান কবিতা, দলীয় সংসদ সদস্য আরমা দত্তসহ দলটির অপরাপর নেতারা। ছবি: ভোরের কাগজ

ভারত চায় সংবিধান অনুযায়ীই বাংলাদেশে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু ও সুন্দর হোক। তারা এও আশা করে এ অঞ্চলের শান্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষায় শেখ হাসিনাই প্রধানমন্ত্রী থাকবেন। ভারত একটি আলাদা দেশ। নির্বাচন করবে বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশন। সহযোগীতা করবে প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, সেনাবাহিনী সবাই। এখানে কারোই কিছু করার নেই।

ভারত সফর শেষে বৃহস্পতিবার বিকেলে ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন দলটির সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ও প্রতিনিধি দলের প্রধান কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক। এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন প্রতিনিধি দলের সদস্য আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, কার্যনির্বাহী সদস্য মেরিনা জাহান, সংসদ সদস্য আরমা দত্ত। এছাড়া, উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, উপদপ্তর সম্পাদক সায়েম খান ও উপ-প্রচার সম্পাদক সৈয়দ আবদুল আউয়াল শামীম। সংবাদ সম্মেলনের শুরুতেই ভারত সফর নিয়ে লিখিত বক্তব্য তুলে ধরেন ড. আব্দুর রাজ্জাক। এরপর সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন তিনি ও তথ্যমন্ত্রী।

আগামী নির্বাচনে ভারত আওয়ামী লীগের পাশে থাকবে কী না এমন এক প্রশ্নের জবাবে ড. রাজ্জাক বলেন, ভারত একটি আলাদা দেশ। নির্বাচন করবে বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশন। সহযোগীতা করবে প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, সেনাবাহিনী সবাই মিলে। এখানে কারোই কিছু করার নেই। নির্বাচনের সম্পূর্ণ দায়িত্ব সংবিধানের ১২৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সব নির্বাহী ক্ষমতা ইসির। এ বিষয়ে ভারত কোনো মন্তব্য করেনি। তারা আশা করে সংবিধান অনুযায়ী এদেশে সুষ্ঠু ও সুন্দর নির্বাচন হবে। জননেত্রী শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী থাকবেন। ভারত, জাপান, অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাজ্যসহ বিশ্বের সব দেশ প্রধানমন্ত্রী থেকেই নির্বাচন হয়। ভারতও সেভাবেই বিশ্বাসী।

এক প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে এবং রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা অর্জিত এটি তারা বিশ^াস করে। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা অব্যাহত রাখতে আমরা দুই দল একযোগে কাজ করব। তিনি বলেন, বিএনপি আমলে ১০ ট্রাক অস্ত্র ও কক্সবাজারে যেসব অস্ত্র উদ্ধার হয়েছিল সেগুলো ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের জন্যই ছিল। সেই বিষয়গুলো নিয়ে তারা উদ্বিগ্ন ছিল। শেখ হাসিনার সরকারে আসার পর বাংলাদেশের এক ইঞ্চি মাটিও কাউকে অস্থিতিশীলতা তৈরীর জন্য ব্যবহার করতে দেয়নি। এজন্য যেসব পদক্ষেপ নেয়া হয়েছিল, তাতে ভারত সন্তোষ প্রকাশ করেছে। তারা এও বলেছে এদেশে যখনই সাম্প্রদায়িকতা ফণা তোলার চেষ্টা করেছে, তখনই আওয়ামী লীগ সেটি কঠোর হস্তে দমন করেছে। এটি তারা স্বীকার করে। আমাদরে দেশে প্রতি বছর হিন্দু সম্প্রদায়ের পূজা মন্ডব বাড়ছে। এদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায় আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নিরাপত্তা বোধ করছে- এই বিষয়গুলোতে তারা সন্তুষ্ট। সফরে প্রমাণিত হয়েছে- আমাদের দুই দেশের সম্পর্ক এমন উচ্চতায় উন্নীত হয়েছে, যেটি অন্য কারো সঙ্গে তুলনীয় নয়। তারা আশা প্রকাশ করেছে- এই অঞ্চলের শান্তি, স্থিতি, শৃঙ্খলা, রাজনৈতিক স্থিতি ও সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে দমন করা, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি অব্যাহতভাবে রক্ষায় আওয়ামী লীগ যে কাজ করছে। তা যেন অব্যাহত থাকে।

এক প্রশ্নের জবাবে ড. হাছান বলেন, বিদেশপ্রীতি বিএনপির কমেনি, আছে। ধর্না দেয়াও কমেনি। সেটি করে তাদের যে কোনো লাভ হচ্ছে না। সেটি অনুধাবন করতে পেরেছে। সেজন্যই তারা এখন উল্টো সুরে কথা বলছে। মাার্কিন রাষ্ট্রদূত আওয়ামী লীগের অফিসে যাওয়ার জন্যে নিজেই ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। সেখানে আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। আর বিএনপি ধর্না দিয়ে বিভিন্ন জায়গায় যায়।

ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, বিএনপির আন্দোলনের মূল আকর্ষণ ছিল বিদেশী শক্তি। তারা যখন দেখল যে এখানে নির্ভর করে কিছু নেই। পানিতে ডুবে যাবে। এজন্য এখন তারা নতুন সুর তুলেছে। আমার মনে হয় তারা উপলব্ধি করতে পেরেছে যে বিদেশি শক্তি নয়, দেশের মানুষেই নির্ধারণ করবে। ভবিষ্যতে এদেশের রাজনীতি কার দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হবে।

ড. রাজ্জাক, বিদেশি কূটনৈতিক তৎপরতা নিয়ে ভারত কিছু বলেছে কি না, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ভারত পার্শ্ববর্তী দেশ। তাদের সঙ্গে আমাদের কানেকিভিটি অনেক বেশি। পার্সন টু পার্সন কানেকশনও অনেকি বেশি। কাজেই বাংলাদেশে কি হচ্ছে, তারা সবকিছুই জানেন। তাদের আগ্রহও আছে।

এক প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ভারতের জন্য চীন সবসময় একটা বড় ফ্যাক্টর। তাদের সীমান্তে মাঝেমধ্যে উত্তেজনা তৈরী হয়। সেটিই আলোচনা হয়েছে। আমাদের পররাষ্ট্রনীতি ‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব কারো সঙ্গে বৈরিতা নয়’। সেই নীতি নিয়েই আমরা চলি। ভারতের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক রক্তের অক্ষরে লেখা। এই সম্পর্কের সঙ্গে আর কারো সম্পর্ক তুলনীয় নয়।

নির্বাচনের আগে মৌলবাদসহ বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো কোনো নাশকতা বা নির্বাচন ঠেকানোর চেষ্টা করতে পারে ভারতের কাছে এরকম কোনো তথ্য আছে কী না, জবাবে রাজ্জাক বলেন, এটা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, গোয়েন্দা সংস্থা দেখেন। ভারত তাদের দৃষ্টিকোণ থেকে দেখতে পারে। এ বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। তবে দুই দেশেরই জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস মোকাবিলার জন্য দুই দেশের গোয়েন্দা সংস্থার মধ্যে যোগাযোগ আছে এবং সহযোগীতা রয়েছে। তাই আমরা এ অঞ্চলে ধর্মীয় সাম্প্রদায়িক শক্তিকে আমরা মোকাবিলা করতে পেরেছি। আগামীতেও পারব।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App