×

জাতীয়

নেপথ্যের কুশীলবদের চরিত্র উন্মোচনের সময় এসেছে

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১০ আগস্ট ২০২৩, ০৯:৩৬ এএম

নেপথ্যের কুশীলবদের চরিত্র উন্মোচনের সময় এসেছে

লে. কর্নেল (অব.) ফারুক খান

ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য লে. কর্নেল (অব.) ফারুক খান বলেছেন, বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের বিচার হয়েছে। অনেকের দণ্ড কার্যকর হয়েছে। কেউ কেউ বিচারের দণ্ড নিয়ে বিদেশে পালিয়ে আছে। কিন্তু এদের পেছনে আরো যারা ছিল, তাদের খুঁজে বের করে, আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার পাশাপাশি পরিচয় তুলে ধরে শ্বেতপত্র প্রকাশ করা দরকার। এতদিনে তদন্ত কমিশন করে শ্বেতপত্র প্রকাশ করা উচিত ছিল। আমি মনে করি, বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যের কুশীলবদের চরিত্র উন্মোচনের সময় এসেছে।

ভোরের কাগজের সঙ্গে এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড, এর পেছনে ষড়যন্ত্র, তদন্ত কমিশন গঠন ও শ্বেতপত্র প্রকাশ নিয়ে কথা বলেন তিনি। তদন্ত করে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যের নায়কদের পরিচয় শ্বেতপত্র আকারে প্রকাশ করার

বিষয়ে কর্নেল (অব.) ফারুক খান বলেন, আমি মনে করি, রাজনীতির স্বার্থেই বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যের খলনায়কদের মুখোশ উন্মোচন করা দরকার। পেছনের কুশীলব কারা তাদের সম্পর্কে মানুষকে জানাতেই শ্বেতপত্র প্রকাশ করা জরুরি। কারণ, সামনের কুশীলব বা হত্যাকারী যারা ছিল, তাদের তো আমরা দেখেছি। তাদের অনেকেরই বিচার হয়েছে। কিন্তু নেপথ্যের মূল পরিকল্পনাকারীদের সম্পর্কে দেশবাসী এখনো অন্ধকারে রয়েছে।

তিনি বলেন, ১৫ আগস্ট যে ট্র্যাজেডি খুনিরা ঘটিয়েছিল তা সব বর্বরতাকে হার মানায়। শুধু আমরা না, পুরো জাতি মনে করে, এই ঘটনা গভীরভাবে তদন্ত করে শ্বেতপত্র প্রকাশ করা উচিত। এর পেছনে যারা ছিল, ইতোমধ্যে তাদের অনেকেই হয়তো মারা গেছে। কিন্তু মানুষ অন্তত জানতে পারবে যে, এই বর্বরতার পেছনে তাদের ইন্ধন ছিল। শ্বেতপত্র প্রকাশ হলে ভবিষ্যতে এ ধরনের ষড়যন্ত্র করার আগে খুনিরা অনেকবার ভাববে, এখন পার পেয়ে গেলেও, ভবিষ্যতে তদন্ত হলে তারা ধরা পড়বে। আর পার পাবে না। তাদের পরিচয় প্রকাশ হবে। জাতির কাছে ঘৃণিত হয়ে থাকবে। জাতি আজীবন তাদের ঘৃণা করবে।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর এই সদস্য বলেন, পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট সপরিবারে জাতির পিতাকে হত্যার মতো জঘন্য ঘটনার পরিকল্পনা একদিনে হয়নি। খুনিরা সেই হত্যার পরিকল্পনা নিশ্চয়ই অনেক দিন সময় নিয়েই করেছে। ন্যূনতম এক বছর বা তারও বেশি সময় আগে থেকেই এরা নানাভাবে ষড়যন্ত্র করেছে। এই ষড়যন্ত্রে সামরিক বাহিনীর কিছু লোক ছিল। বিদেশি এজেন্ডা ছিল, তাদের ইন্ধন ছিল। দেশের ভেতরে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র ছিল। এ ব্যাপারে কোনো সন্দেহস নেই।

ফারুক খান বলেন, ১৯৭৪ ও ’৭৫ সালে বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে দারুণ উন্নতি করছিল। একটা যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ মাত্র সাড়ে তিন বছরে ঘুরে দাঁড়িয়েছিল। তা অনেকের ঈর্ষার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সেই সময় আমাদের প্রবৃদ্ধি ছিল ৯ পয়েন্টের ওপরে। যা অবাক করার মতো। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে এই উন্নয়ন দেখে ষড়যন্ত্রকারীরা ভেবেছিল যে, এখনই যদি আমরা বাংলাদেশকে ঠেকাতে না পারি, তাহলে এই দেশ অনেক দূর এগিয়ে যাবে। সুতরাং যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও অগ্রগতির বিরোধী ছিল তারাই ষড়যন্ত্র করেছিল।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু যদি বেঁচে থাকতেন, তাহলে আজকে বাংলাদেশ মাহাথিরের মালয়েশিয়া, নেলসন মেন্ডেলার দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে আরো উন্নত দেশ হতো। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে আমাদের সেই অগ্রগতিকে বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল। এই পদ্মা সেতু এতদিন পর হলো। বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে এই সেতু আরো ২০ বছর আগে হতো।

তিনি বলেন, যুদ্ধাপরাধীসহ পাকিস্তানপন্থিরা এই হত্যাকাণ্ডের মধ্য দিয়ে একটা প্রতিশোধ নিয়েছে। কারণ একাত্তরে তাদের বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আমরা পরাজিত করেছি। সেই পরাজয়ের গ্লানি তারা ভুলতে পারেনি। সেই প্রতিশোধ তারা নিয়েছে। এখন সময় এসেছে নেপথ্যের সব কুশীলবদের চরিত্র উন্মোচিত করার।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App