×

জাতীয়

প্রতি মুহূর্তে মনে হয়েছে ওরা আমাকে মেরে ফেলবে

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৯ আগস্ট ২০২৩, ০৮:০৪ পিএম

প্রতি মুহূর্তে মনে হয়েছে ওরা আমাকে মেরে ফেলবে

অপহৃত জাতিসংঘের কর্মকর্তা বাংলাদেশি লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) সুফিউল আনাম বলেছেন, অপহরণের পর তাকে কখনো পাহাড়ে আবার কখনো মরুভূমিতে নিয়ে রাখা হয়েছে। এই পুরো সময়টাতেই কালো কাপড়ে চোখ বেঁধে রেখেছিলেন অপহরণকারীরা।

বুধবার (৯ আগস্ট) দেশে ফেরার পর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের কাছে এসব কথা বলেন সুফিউল আনাম। এর আগে দুবাই থেকে এমিরেটস এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে সন্ধ্যা পৌনে ছয়টার দিকে ঢাকায় পৌঁছান তিনি। বিমানবন্দরে তাকে গ্রহণ করেন জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার (এনএসআই) শীর্ষ কর্মকর্তারা।

১৮ মাস আগে ইয়েমেনে আল-কায়েদার হাতে অপহৃত হন সুফিউল আনাম। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় এনএসআইয়ের তৎপরতায় তাকে উদ্ধার করা হয় মঙ্গলবার। তার উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মুহাম্মদ ফারুক খান।

‘অপহরণের পর ১৮ মাসে ১৮ বার স্থান পরিবর্তন করা হয়। খাওয়াদাওয়ায় সমস্যা করেনি, শারীরিক নির্যাতন করেনি। তবে ভাবতে পারিনি বেঁচে ফিরবো। প্রতি মুহূর্তে মনে হয়েছে মেরে ফেলবে আমাদের’ - বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে সুফিউল আনাম

সুফিউল আনাম বলেন, আমি জানতাম না, আমাকে উদ্ধারে সরকারের পক্ষ থেকে চেষ্টা করছে। আমাকে দিয়ে একবার ভিডিও বার্তা দেয়া হয়েছে। সেখানে বলতে বলা হয়, আমাকে উদ্ধারের দাবি যেন পূরণ করা হয়। কিন্তু সেটা যে ৩০ লাখ ডলার ছিল এসব আমি জানতাম না।

সুফিউল আনাম ভেবেছিলেন তাকে সবাই ভুলে গেছে। তিনি বলেন, ভেবেছিলাম সবাই আমাকে ভুলে গেছে। অপহরণের এক বছর ছয় মাস পূরণ হবে কাল। পেশাগত দায়িত্ব পালন শেষে ফেরার সময় আমাকে অপহরণ করা হয়। অবর্ণনীয় দিন কেটেছে। প্রতিটি দিন ছিল মৃত্যুর ভয়।

তিনি জানান, তাকে চার সহযোগীসহ উদ্ধার করা হয়। বাকি চারজন ছিলেন ইয়েমেনি।

প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে সুফিউল আনাম বলেন, এনএসআইয়ের দেখা হওয়ার পর মনে হলো আমাকে ভোলেনি তারা। তাদের এই দায়িত্ব পালনের কথা ভুলবো না। ভাষায় বর্ণনা করা যাবে না। সিনেমায় দেখা যায় এসব। ফেরার পথে অস্ত্রের মুখে অপহরণ। ভাগ্য ভালো নির্যাতন করেনি। অপহরণকারীদের টাকা শেষ হলে চাপে ছিলাম। জাতিসংঘে কাজ করি বলে টার্গেট করেছিল মনে হয়। অপহরণকারীরা ভিডিও করেছিলেন, তাদের দাবিদাওয়া নিয়ে। নিরাপত্তার স্বার্থে কিছু বলতে চাইছি না।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সুফিউল আনাম বলেন, পরিবারের সঙ্গে কথা হয়েছে। প্রাক্তন সামরিক কর্মকর্তা আমি। দেশের প্রয়োজনে অবশ্যই চ্যালেঞ্জ নেবো।

এনএসআইয়ের পরিচালক ইমরুল মাবুদ বলেন, দীর্ঘ দিনের চেষ্টায় পর আল-কায়েদার হাত থেকে স্যারকে উদ্ধার করতে পেরেছি। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা ছিল। আমরা ধৈর্য ধরে লেগেছিলাম।

তবে কীভাবে উদ্ধার করা হলো নিরাপত্তার স্বার্থে সে বিষয়ে কিছু বলতে চাননি ইমরুল মাবুদ। তিনি জানান, সুফিউলকে উদ্ধারে মুক্তিপণের কোনো টাকা দিতে হয়নি।

ইমরুল মাবুদ বলেন, এটা চ্যালেঞ্জিং ছিল। প্রধানমন্ত্রী আস্থা রেখেছিলেন। দীর্ঘ প্রক্রিয়া ছিল। দেড় বছরের চেষ্টায় এই সফলতা। ৩০ লাখ মার্কিন ডলার চেয়েছিলেন অপহরণকারীরা। কিন্তু কোনো টাকা-পয়সা দিতে হয়নি তাকে মুক্ত করতে।

এসময় বিমানবন্দরে উপস্থিত ছিলেন এনএসআইয়ের অতিরিক্ত পরিচালক বদরুল হাসান চৌধুরী ও উপপরিচালক বদরুল হাসান বিদ্যুৎসহ আরো অনেকে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App