×

জাতীয়

উপকূলীয় জনপদে ৩ যুগের মধ্যে রেকর্ড বৃষ্টিপাত

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৮ আগস্ট ২০২৩, ১০:০০ এএম

উপকূলীয় জনপদে ৩ যুগের মধ্যে রেকর্ড বৃষ্টিপাত

পাহাড়ি এলাকা, উপকূলীয় জনপদে একযোগে এমন প্রবল বর্ষণ খুব কমই দেখা গেছে।

খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, বরগুনা চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, রাঙামাটি, বান্দরবানে সর্বত্র ভারী বর্ষণ হচ্ছে। এত বৃষ্টি! যেন মানুষের চিন্তারও বাইরে।

সর্বশেষ বর্ষার এমন করালগ্রাসী রূপ দেখা যায় ১৯৮৫ সালে। এর আগে এত বৃষ্টি কখনো হয়নি। যেন ৩৮ বছরে বৃষ্টির রেকর্ড।

চারদিকে থৈ থৈ পানি। টানা বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে শহর। বিচ্ছিন্ন হয়ে আছে বিদ্যুৎ। নেই ইন্টারনেট সংযোগ। সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ। যেন ভূঁতুড়ে শহর। পার্বত্য জেলা বান্দরবানের পরিস্থিতি এখন এমনই। টানা বৃষ্টি পাহাড়ি ঢলে ফুলেফেঁপে উঠেছে সাঙ্গু নদী। পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন বান্দরবানের বাসিন্দারা।

রেকর্ড বৃষ্টির ফলে ঢাকাসহ সারাদেশের সঙ্গেকার্যত বিচ্ছিন্নহয়ে পড়েছে বান্দরবান। কোথাও কোথাও পাহাড় ধসে জেলা থেকে উপজেলা দূরপাল্লার সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে নেয়া হচ্ছে। শহরের অনেকেই ঘরবাড়ি ছেড়ে আশ্রয়কেন্দ্র, হোটেল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আশ্রয় নিয়েছেন।

লামা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোস্তফা জাবেদ কায়সার বলেন, রবিবার থেকেই টানা বৃষ্টি হচ্ছে। সোমবার থেকে পরিস্থিতি খারাপ হচ্ছে। এরই মধ্যে লামায় ৬০০-৭০০ মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসা হয়েছে। নীচু এলাকায় পানির স্রোতের কারণে মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে আনা কষ্টকর হচ্ছে।

শহরের নীচু এলাকায় মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। শহর থেকে চট্টগ্রাম, ঢাকা, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ির পথে কোনো যানবাহন চলছে না। ছাড়া রুমা, থানচি রোয়াংছড়ির পথেও যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।

অপরদিকে টানা ভারী বৃষ্টি পাহাড়ধসে কক্সবাজারের উখিয়া এবং চকরিয়ায় রোহিঙ্গা মা-মেয়েসহ পাঁচজনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। সোমবার বিকেলে উখিয়া চকরিয়া এলাকায় ঘটনা ঘটে। সেই সঙ্গে মেরিন ড্রাইভ, কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টসহ উপকূলীয় এলাকায় ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। বৃষ্টি, জোয়ারের পানি পাহাড়ি ঢলে চকরিয়া উপজেলার কমপক্ষে ১২ ইউনিয়ন প্লাবিত হয়ে পানিবন্দি রয়েছে মানুষ।

এদিকে, দীর্ঘ ৩৮ বছর পর ফের রোববার এমন প্রবল বৃষ্টি হলো চট্টগ্রামে। রোববার চট্টগ্রামে ৩২২ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়। আর সোমবার বান্দরবানের বৃষ্টি চট্টগ্রামকেও ছাড়িয়ে গেছে। সোমবার সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় ওই পার্বত্য জেলায় ৩৪২ মিলিমিটার বৃষ্টি ঝরেছে।

বরিশাল খুলনায় একইভাবে বৃষ্টি হচ্ছিল। তবে সোমবার রাজধানীতে সকাল থেকে ঝিরিঝিরি ঝরছে। সারা দিনে ঢাকায় ৩৮ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। দুই-তিনদিন বৃষ্টি কিছুটা কমতে পারে। এরপর শনিবার থেকে ফের প্রবল ধারায় বৃষ্টি হবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

আবহাওয়াবিদেরা বলছেন, গত মে, জুন জুলাইয়ে বাংলাদেশ থেকে শুরু করে ভারত হয়ে দক্ষিণ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াজুড়ে রীতিমতো খরা পরিস্থিতি বিরাজ করছিল। জুলাইতে মৌসুমি বায়ু আসার পরেও বৃষ্টির দেখা পাওয়া যায়নি। বরং জুলাইয়ে অর্ধেক সময় দেশের কোথাও না কোথাও তাপপ্রবাহ ছিল। ফলে সাগর নদীর পানি উত্তপ্ত হয়ে মেঘ বেড়ে যায়। ফলে গত রবিবার থেকে প্রবল বর্ষণ শুরু হয়।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App