×

জাতীয়

বাংলাদেশে বিক্ষোভকারীদের ওপর বলপ্রয়োগ বন্ধের আহ্বান

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৪ আগস্ট ২০২৩, ১১:৪৫ পিএম

বাংলাদেশে বিক্ষোভকারীদের ওপর বলপ্রয়োগ বন্ধের আহ্বান

বাংলাদেশে অবিলম্বে বিক্ষোভকারীদের ওপর অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।

গত ২৮ ও ২৯ জুলাই বাংলাদেশের প্রধান বিরোধী দল আয়োজিত অবস্থান ধর্মঘট চলাকালে বিক্ষোভকারী ও বিরোধী দলের নেতাদের ওপর সহিংস হামলার খবরের সত্যতা যাচাইয়ের পর এ আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংস্থাটি।

শুক্রবার (৪ আগস্ট) অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এসব কথা বলা হয়েছে। এতে বলা হয়, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এ ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলেছে। তাঁরা বলেছেন, পুলিশ হামলা করার আগপর্যন্ত বিক্ষোভকারীরা শান্তিপূর্ণ ছিলেন।

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলনরত বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) ওই দিন রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন প্রবেশপথে অবস্থান নেয়। তাদের এই বিক্ষোভ পুলিশের সঙ্গে সহিংসতার মধ্য দিয়ে শেষ হয়।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের অন্তর্বর্তীকালীন দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক আঞ্চলিক পরিচালক স্মৃতি সিংহ বলেন, ‘যেসব ভিডিও ও ছবি অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল যাচাই করেছে, সেগুলো বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষের মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে আলোকপাত করে। আমরা বাংলাদেশের সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি, যেন আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাগুলো কঠোরভাবে আইন মেনে চলে এবং নাগরিকদের বাক্‌স্বাধীনতা ও শান্তিপূর্ণ সভা-সমাবেশের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকে। মানুষের আরও শারীরিক ক্ষতি এড়াতে এবং সংকট যেন আরও না বাড়ে, সে কারণেই এটা করা দরকার।’

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের গবেষকেরা এবং ক্রাইসিস এভিডেন্স ল্যাব বাংলাদেশের ওই বিক্ষোভের ৫৬টি ছবি ও ১৮টি ভিডিও পর্যালোচনা করেছেন। পাশাপাশি ঘটনার নয়জন প্রত্যক্ষদর্শীর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন তাঁরা। যাচাই করা একটি ভিডিওতে ঢাকার মাতুয়াইলের শিশু ও মাতৃসদন হাসপাতাল এলাকায় পুলিশের কাঁদুনে গ্যাস থেকে নিজেদের রক্ষায় লোকজনকে দৌড়াতে দেখা গেছে। তাঁদের মধ্যে অন্তত পাঁচজন নারী ছিলেন।

অ্যামনেস্টি বলেছে, হাসপাতালের আশপাশে কাঁদুনে গ্যাস ব্যবহার করা যাবে না। কম প্রাণঘাতী অস্ত্রের ব্যবহার নিয়ে জাতিসংঘের নির্দেশনায় বলা আছে, বয়োবৃদ্ধ, শিশু, অন্তঃসত্ত্বা নারী, অসুস্থ ব্যক্তিসহ যাঁদের পক্ষে আক্রান্ত এলাকা থেকে সরে যাওয়া কঠিন, তাঁদের কথা বিবেচনায় নিয়ে পুলিশকে শক্তি প্রয়োগের প্রভাব ন্যূনতম করতে হবে।

স্মৃতি সিংহ বলেছেন, পুলিশের শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের ওপর কাঁদুনে গ্যাস, রাবার বুলেট ব্যবহার করা উচিত নয়। কিন্তু প্রকৃত ঘটনা হচ্ছে, বাংলাদেশের পুলিশ হাসপাতালের ভেতরে কাঁদুনে গ্যাস ব্যবহার করছে, যার মধ্য দিয়ে তাদের আন্তর্জাতিক আইনকে তোয়াক্কা না করার বিষয়টি প্রকাশিত হচ্ছে। এটা উদ্বেগজনক।

টুইটারে পোস্ট করা একটি ভিডিওতে দেখা যায়, পুলিশ কর্মকর্তারা বিক্ষোভকারীদের ওপর লাঠি দিয়ে মারধর করছেন। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, বিক্ষোভকারীরা পুলিশের কাছ থেকে পালাচ্ছে। বিক্ষোভকারীদের কাছে কোনও দৃশ্যমান অস্ত্র নেই এবং তারা পুলিশ কর্মকর্তাদের জন্য কোনও আপাত হুমকি তৈরি করে না। নিরস্ত্র বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে অস্ত্রের ব্যবহার অসামঞ্জস্যপূর্ণ এবং মাত্রাতিরিক্ত।

একই ভিডিওর অন্য একটি অংশে দেখা যায়, বিক্ষোভকারীরা মাটিতে পড়ে আছে ও পুলিশ কর্মকর্তারা তাদের মারধর চালিয়ে যাচ্ছে।

টুইটারে পোস্ট করা আরেকটি ভিডিওতে দেখা যায়, বিএনপির জ্যেষ্ঠ রাজনীতিবিদ গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে অন্তত চার জন পুলিশ কর্মকর্তা লম্বা লাঠি দিয়ে মারধর করছে।

এই ঘটনাগুলো অমানবিক আচরণ বলে জানান অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের অন্তর্বর্তীকালীন দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক আঞ্চলিক পরিচালক স্মৃতি সিংহ।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App