×

জাতীয়

মোবাইল ব্যাংকিংয়ের টাকা লুটের জন্যই নৃশংস খুনের শিকার হন চাচা ভাতিজা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৪ আগস্ট ২০২৩, ০১:৪৪ পিএম

মোবাইল ব্যাংকিংয়ের টাকা লুটের জন্যই নৃশংস খুনের শিকার হন চাচা ভাতিজা

ছবি: ভোরের কাগজ

রাজধানীর মোহাম্মদপুর ও টাঙ্গাইলের সখিপুর এলাকা থেকে দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। তারা হলো-মো. মোস্তফা মিয়া (২০) ও আলামিন (২৭)।

গতকাল শুক্রবার (৩ আগস্ট) অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।

র‍্যাব জানিয়েছে, গ্রেপ্তারকৃতরা টাঙ্গাইলের সখিপুরে বহুল আলোচিত চাচা-ভাতিজা হত্যাকারী। আটক মোস্তফা হত্যা ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী ও আল-আমিন তার সহযোগী। গ্রেপ্তারকৃত মোস্তফা সমিতি থেকে উচ্চ সুদে বেশকিছু টাকা ধার নেয়। যা পরিশোধের জন্য তাকে সমতি সংশ্লিষ্টরা চাপ দিয়ে আসছিল। এছাড়াও পারিবারিক খরচ বহনের জন্য তার বেশকিছু অর্থের প্রয়োজন ছিল। এমন পরিস্থিতিতে সে অন্যায়ভাবে অর্থ উপার্জনের পরিকল্পনা করে।

এরই ধারাবাহিকতায় গত ১৯ জুলাই টাকা ছিনিয়ে নেয়ার সময় ভাতিজা শাহজালাল ও চাচা মজনু মিয়াকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। চাচা-ভাতিজা খুনের ঘটনায় শুক্রবার (৪ আগস্ট) রাজধানীর কারওয়ান বাজারের র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারের সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে র‍্যাব লিগ্যাল এন্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, চাচা-ভাতিজা খুনের ঘটনায় টাঙ্গাইলের সখিপুর থানায় মামলা হলে র‍্যাব ছায়া তদন্ত শুরু করে। এরই একপর্যায়ে সদরদপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ও র‍্যাব-১৪ অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তারে সমর্থ হয়।

গ্রেপ্তারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, ভিকটিম শাহজালাল টাঙ্গাইলের সখিপুরের হামিদপুর বাজারে দীর্ঘদিন ধরে মনোহারি ও মোবাইল ব্যাংকিংয়ের ব্যবসা করে আসছিলেন। সে হামিদপুর বাজারের একজন জনপ্রিয় ও অতিপরিচিত ব্যবসায়ী। অপর ভিকটিম মজনু মিয়া এলাকায় কৃষি কাজ করতেন ও এর পাশাপাশি মাঝে মধ্যে ভাতিজা শাহজালালকে ব্যবসায়িক কাজে দোকানে সহযোগিতা করতেন। ভিকটিম শাহজালাল কখনো ব্যবসায়িক কার্যক্রম শেষে বাড়ি যেতেন আবার কোন সময় দোকানেই থেকে যেতেন। তবে যেদিন রাতে বাড়িতে যেতেন ওইদিন ব্যবসায়িক লেনদেনের টাকা ও মোবাইল ব্যাংকিংয়ের টাকা সঙ্গে করে বাড়িতে নিয়ে যেতেন। আনুমানিক দেড় থেকে ২ লাখ টাকা পরিবহন করতেন এ সময়।

তিনি আরো বলেন, সুদসহ ঋণের টাকা পরিশোধ ও সংসারে টাকার প্রয়োজন ছিল গ্রেপ্তার মজনু মিয়ার। আর এমন পরিস্থিতিতে টাকা যোগাড়ের জন্য অন্যায় পথ বেছে নেয়ার কথা চিন্তা করেন তিনি। বিষয়টি একই অবস্থায় থাকা আলামিনকেও জানায় সে। এরই ধারাবাহিকতায় তারা ব্যবসায়ী শাহজালালকে টার্গেট করে টাকা লুটের পরিকল্পনা করে। কারন তারা শাহজালালের টাকা বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি জানতো। পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ১৯ জুলাই আনুমানিক রাত ১০টার দিকে মোস্তফা ও আলামিন টাঙ্গাইলের সখিপুরের বাঘের বাড়ি এলাকায় জামালের চালায় নির্জন জঙ্গলে ওৎপেতে থাকে। ভিকটিম শাহজালাল মোটরসাইকেলযোগে তার চাচা মজনু মিয়াকে সাথে নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছালে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী গ্রেপ্তারকৃত মোস্তফা ভিকটিম শাহজালালের মোটরসাইকেলের গতিরোধ করে লোহার রড দিয়ে মাথায় আঘাত করে।

ভিকটিম শাহজালাল মাটিতে লুটিয়ে পড়লে গ্রেপ্তারকৃত মোস্তফা শরীরের বিভিন্ন স্থানে উপর্যুপরি আঘাত করতে থাকে। ভিকটিম মজনু মিয়া চিৎকার করে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে গ্রেপ্তারকৃত আলামিন লোহার রড দিয়ে মজনু মিয়ার মাথা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে উপর্যপুরি আঘাত করে। পরবর্তীতে গ্রেপ্তারকৃত মোস্তফা ও আলামিন মাটিতে লুটিয়ে থাকা ভিকটিম শাহজালাল ও মজনু মিয়াকে লোহার রড দিয়ে পুনরায় এলোপাথাড়ি আঘাত করে তাদের মৃত্যু নিশ্চিত করে। গ্রেপ্তারকৃত আলামিন ভিকটিমদের সাথে থাকা মোটরসাইকেলটি পাশের একটি জমিতে ফেলে দেয় ও গ্রেপ্তারকৃত মোস্তফা ভিকটিম শাহজালাল এর ২টি মোবাইল ফোন নিয়ে ১টি আলামিনকে দেয় ও অপরটি স্থানীয় একটি ডোবায় ফেলে দেয়। পরবর্তীতে তারা টাঙ্গাইল, গাজীপুর ও ঢাকায় আত্মগোপন করে।

এক প্রশ্নের জবাবে র‍্যাব মুখপাত্র কমান্ডার মঈন বলেন, গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে আল আমিনের বিরুদ্ধে একটি মামলা রয়েছে বলে জানা গেছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত তারা দুজনই জড়িত ছিল বলে জানা গেছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App