×

জাতীয়

ষড়যন্ত্রের রহস্য উন্মোচন করা প্রয়োজন

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৩ আগস্ট ২০২৩, ১০:৪৩ এএম

ষড়যন্ত্রের রহস্য উন্মোচন করা প্রয়োজন

অধ্যাপক ড. মুনতাসীর মামুন

অধ্যাপক ড. মুনতাসীর মামুন। ইতিহাসবিদ ও গবেষক। মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক বঙ্গবন্ধু চেয়ার অধ্যাপক। গত বছরের ১৫ মার্চ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু চেয়ার পদে যোগ দেন। একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির পক্ষে এক যুগ ধরে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের তদন্ত কমিশন গঠনের দাবি জানিয়ে আসছেন এই ইতিহাসবিদ।

শোকের মাস আগস্ট উপলক্ষে ভোরের কাগজকে দেয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের তদন্ত কমিশন গঠন, শ্বেতপত্র প্রকাশ, রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট ও দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের কথা তুলে ধরেন তিনি।

তদন্ত কমিশন কেন জরুরি? এমন প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক ড. মুনতাসীর মামুন বলেন, হত্যাকারীদের বিচার হয়েছে। কিন্তু হত্যাকাণ্ডের একটি উদ্দেশ্য ছিল। পটভূমি ছিল। খুনি ফারুক-রশিদ-ডালিমদের পেছনে চালিকাশক্তি ছিল। দেশি-বিদেশি শক্তি ছিল। পরিকল্পিত এই হত্যাকাণ্ডে কারা জড়িত ছিল, ইতিহাসের স্বার্থে জাতির এই সত্য জানা প্রয়োজন।

তিনি বলেন, তদন্ত কমিশন হলে ষড়যন্ত্রের অনেক কিছু উন্মোচিত হবে। এখনো তদন্ত কমিশন করে ষড়যন্ত্রের দিক উন্মোচন করা সম্ভব। কারা পরিকল্পনা করেছে, কারা জড়িত, তা বের করা প্রয়োজন। এরপর আর সম্ভব হবে না। কারণ, প্রত্যক্ষদর্শীরা বেঁচে থাকবেন না। ইতোমধ্যেই অনেক তথ্যপ্রমাণ হারিয়ে গেছে। অনেক সাক্ষী মারা গেছেন। তবে কেউ কেউ এখনো বেঁচে আছেন। তাদের মারা যাওয়ার আগেই কাজটা শুরু করতে হবে। বিশ্বের প্রতিটি দেশেই রাষ্ট্রনায়কদের হত্যাকাণ্ডের পর সত্য উদ্ঘাটনের জন্য কমিশন করে প্রতিবেদন জাতির সামনে তুলে ধরা হয়েছে।

তিনি বলেন, ইতিহাসের সূত্র অনুযায়ী বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে, বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড কোনো আকস্মিক কিছু ছিল না। এর পেছনে পরিকল্পিত দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র রয়েছে। যারা পাকিস্তানকে কায়েম করতে চেয়েছিল, তারা মূল ভূমিকায় ছিল। পৃথিবীর অধিকাংশ দেশই একাত্তরে বাংলাদেশের বিপক্ষে ছিল। আমেরিকা, চীন, সৌদি আরব বাংলাদেশকে বাধ্য হয়েই স্বীকার করেছে; কিন্তু মেনে নিতে পারেনি।

বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড মানেই আদর্শের হত্যাকাণ্ড- মন্তব্য করে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের আদর্শের নাম। আকস্মিক হত্যাকাণ্ড হলে শুধু বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করত, তার পরিবার আত্মীয়স্বজনকে হত্যা করত না। এমনকি, বঙ্গবন্ধুর অনুসারী জাতীয় চার নেতাকেও নির্মমভাবে হত্যা করেছে। এর কারণ তার পরিবারের অথবা অনুসারীরা বেঁচে থাকলে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের উদ্দেশ্য সফল হবে না।

বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড নিয়ে ‘বাংলাদেশি জেনারেলদের মন’ নামে একটি গবেষণাগ্রন্থ রয়েছে ড. মুনতাসীর মামুনের। ওই বইয়ে ২৪ জনের সাক্ষাৎকার রয়েছে। বইটির উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, স্পষ্ট বোঝা যায়, কে এম সফিউল্লাহ ছাড়া আগস্টের ষড়যন্ত্রের কথা সব সেনা কর্মকর্তাই জানতেন। কে এম সফিউল্লাহ অন্ধকারে ছিলেন। কারণ, তিনিই একমাত্র বঙ্গবন্ধুর বিশ্বস্ত ছিলেন। এজন্য তাকে কেউ জানাননি।

অনেকেই বলেন, সেনাবাহিনীতে ‘চেন অব কমান্ড’ ছিল না। কিন্তু কেউ প্রতিবাদ করেননি। বরং পরস্পরের মধ্যে কে সেনাপ্রধান হবে এটি নিয়ে তারা ব্যস্ত ছিলেন। বঙ্গবন্ধুর অনেক মন্ত্রীই কেন পরদিন মোশতাকের সভায় যোগ দিলেন? তদন্তে এসব আসতে হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App