×

জাতীয়

তারেক-জোবায়দার মামলার রায় বিকালে

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০২ আগস্ট ২০২৩, ০৮:২০ এএম

তারেক-জোবায়দার মামলার রায় বিকালে

তারেক ও ডা. জোবায়দা

জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার স্ত্রী ডা. জোবায়দা খান ওরফে জোবায়দা রহমানের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলার রায় আজ। ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মো. আছাদুজ্জামানের আদালত এদিন বিকাল ৩টায় মামলাটির রায় ঘোষণা করবেন।

এ মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা পৃথক দুই ধারা প্রমাণিত হলে সর্বোচ্চ সাজার বিধান রয়েছে ১৩ বছর। সংবিধান অনুসারে ২ বছরের বেশি সাজা হলে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের মতো নির্বাচনের পথ বন্ধ হবে ডা. জোবায়দা রহমানেরও।

দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মোশাররফ হোসেন কাজল বলেছেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার স্ত্রী ডা. জোবায়দা রহমানের বিরুদ্ধে দুদক আইনের ২৬(২) ও ২৭(১) ধারায় অভিযোগ প্রমাণ করতে আমরা সক্ষম হয়েছি। ২৬(২) ধারায় সর্বোচ্চ শাস্তি তিন বছরের কারাদণ্ড ও ২৭(১) ধারায় সর্বোচ্চ শাস্তি ১০ বছরের সর্বোচ্চ কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে। আমরা যুক্তি উপস্থাপন শেষে তাদের দুই ধারায় সর্বোচ্চ শাস্তি ১৩ বছর কারাদণ্ড প্রত্যাশা করছি।

এদিকে বিভিন্ন মামলায় তারেক রহমান সাজাপ্রাপ্ত হলেও জোবায়দার বিরুদ্ধে এই প্রথম কোনো মামলায় রায় হতে যাচ্ছে। দুদকের এ মামলার রায়ে তারেক রহমানের পাশাপাশি জোবায়দা রহমানেরও দুই বছরের বেশি সাজা হলে সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচনে অংশ নেয়ার পথ বন্ধ হয়ে যাবে। সংবিধানের ৬৬(২)(ঘ) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, কারো দুই বছরের বেশি সাজা বা দণ্ড হলে এর বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল বিচারাধীন থাকা অবস্থায় তিনি নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না, যতক্ষণ না আপিলে ওই দণ্ড বাতিল বা স্থগিত হয়। এরআগে সাজাপ্রাপ্ত হওয়ায় বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে পারেননি। এছাড়া দণ্ডিত আসামি হিসেবে বিদেশে পলাতক তারেক রহমানও নির্বাচনে অংশ নেয়ার সুযোগ হারিয়েছেন।

এরআগে গত ২৪ জুলাই দুদক মামলাটির সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়। মামলাটিতে ৫৬ জন সাক্ষীর মধ্যে ৪২ জনের সাক্ষ্য দেন। এরপর গত ২৭ জুলাই মামলাটির যুক্তিতর্ক শেষে রায়ের জন্য আজকের দিন ধার্য করেন আদালত। তারেক-জোবায়দা পলাতক থাকায় এরআগে এ মামলায় গত বছরের ১ নভেম্বর তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত।

এদিকে মামলা থেকে জানা যায়, ঘোষিত আয়ের বাইরে ৪ কোটি ৮১ লাখ ৫৩ হাজার ৫৬১ টাকার মালিক হওয়া এবং সম্পদের তথ্য গোপন ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০০৭ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর রাজধানীর কাফরুল থানায় এ মামলা করে দুদক। মামলায় জোবায়দা রহমানে মা সৈয়দা ইকবাল মান্দ বানুকে আসামি করা হয়েছিল। পরে তিনি মারা যাওয়ায় তাদের মামলা থেকে বাদ দেয়া হয়।

২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি তত্ত্বাবধায়ক সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর খালেদা জিয়া, তারেক রহমান ও আরাফাত রহমান কোকো গ্রেপ্তার হন। ২০০৮ সালের ৩ সেপ্টেম্বর তারেক রহমান জামিনে মুক্তি পেয়ে চিকিৎসার জন্য ১১ সেপ্টেম্বর লন্ডনে পাড়ি জমান। সেই থেকে তিনি পরিবার নিয়ে লন্ডনে অবস্থান করছেন।

তারেক রহমান যেসব মামলায় সাজাপ্রাপ্ত: তারেক রহমানের বিরুদ্ধে প্রথম রায় হয় ২০১৩ সালে। মুদ্রা পাচারের ওই মামলায় তিনি খালাস পেয়েছিলেন। পরে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল করলে ৭ বছরের কারাদণ্ড দেন হাইকোর্ট।

এরপর ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় খালেদা জিয়ার ৫ বছর ও তারেক রহমানের ১০ বছর কারাদণ্ড দেয়া হয়। এছাড়া একুশে আগস্টের গ্রেনেড হামলার মামলায় ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর তারেক রহমানকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন আদালত।

এছাড়া হত্যা ও বিস্ফোরক আইনের দুই মামলার প্রতিটিতে কয়েকটি ধারায় তাকে তিনবার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও দুই লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। সেইসঙ্গে বিস্ফোরক আইনের আরেকটি ধারায় তার ২০ বছর কারাদণ্ডাদেশ হয়। তবে সব সাজা একসঙ্গে কার্যকরের উল্লেখ থাকায় তারেককে যাবজ্জীবন সাজা খাটার বিষয়টি রায়ে উল্লেখ করা হয়।

সর্বশেষ ২০২১ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্যের অভিযোগে নড়াইলে দায়ের হওয়া মানহানি মামলায় তারেক রহমানকে দুই বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দেন আদালত। পাশাপাশি ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App