×

জাতীয়

শিগগিরই টিকা নিয়ে সিদ্ধান্ত

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০১ আগস্ট ২০২৩, ০৯:২০ এএম

শিগগিরই টিকা নিয়ে সিদ্ধান্ত

অধ্যাপক ডা. খান আবুল কালাম আজাদ

ব্যাপকতা বাড়ায় এবার ডেঙ্গু প্রতিরোধে টিকাদানের বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছে সরকার। শিগগিরই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানাবে টিকা বিষয়ক জাতীয় কমিটির (ন্যাশনাল ইমিউনাইজেশন টেকনিক্যাল এডভাইজারি গ্রুপ) নাইট্যাগ।

নাইট্যাগের চেয়ারম্যান প্রখ্যাত মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. খান আবুল কালাম আজাদ ভোরের কাগজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, ডেঙ্গু এখন যে তাণ্ডবলীলা চালাচ্ছে তা কোভিডের কাছাকাছিই বলা যায়। অসংখ্য মানুষকে ভালো রাখার জন্য আমাদের টিকা কার্যক্রমে যেতেই হবে। বিষয়টি আমরা গুরুত্ব দিয়েই ভাবছি। ডা. খান আবুল কালাম আজাদ জানান, গত শুক্রবার অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে সরকারের পক্ষ থেকে নাইট্যাগের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, ডেঙ্গুর টিকা বিষয়ে কী করা যায়। বৈঠকে সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির (ইপিআই) প্রতিনিধিও ছিলেন।

তিনি আরো বলেন, টিকার বিষয়ে কথা বলতে আমরা ৮ আগস্ট বৈঠকে বসবো। কোনো টিকার সুবিধা কতটা সেই বিষয়গুলো নিয়ে কথা হবে। দেশে টিকা প্রয়োগের আগে ছোট্ট ট্রায়াল দিয়ে পাইলট স্টাডি রিপোর্ট নিয়ে টিকার অনুমোদন দেব। এটা হয়তো কিছুটা সময় লাগবে। তবে আমরা সব দিক বিবেচনায় নিয়েই চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে যেতে চাই। কোভিডের সময় নাইট্যাগ যেমন ২০টা সুপারিশ করেছিল সেই গুরুত্ব দিয়েই ডেঙ্গুর ক্ষেত্রেও টিকার বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।

এর আগে রবিবার ডিএনসিসি ডেঙ্গু হাসপাতাল পরিদর্শন শেষে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবির বলেছিলেন, সম্প্রতি একটি জাতীয় কমিটির সভায় ডেঙ্গু টিকার ট্রায়ালের বিষয়টি অনুমোদন করা হয়েছে। টিকার বিষয়ে আমরা কথা বলেছি। নাইট্যাগের মিটিংয়ে এটি এনডোর্স হয়েছে এবং আবার আরেকটি মিটিং আছে। ডেঙ্গু টিকার ট্রায়াল কীভাবে দ্রুত বাংলাদেশে শুরু করা যায় সেটি চিন্তা করছি।

একই দিনে ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ভার্চুয়াল ব্রিফিংয়ে অধিদপ্তরের পরিচালক (ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম) ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, ডেঙ্গু টিকার কার্যকারিতা নিয়ে মানুষের মধ্যে আলোচনা চলছে। যদি সত্যিই এর কার্যকারিতা থাকে, তাহলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এটি ব্যবহারের বিষয়টি বিবেচনা করবে। আমরা এ বিষয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করছি।

এর আগে ২৬ জুলাই সোসাইটি ফর মেডিকেল ভাইরোলজিস্টস্ আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ডেঙ্গুর টিকা প্রয়োগের বিষয়ে গুরুত্বারোপ করে এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে নীতিনির্ধারকদের তাগিদ দিয়েছেন দেশের বিশিষ্ট ভাইরোলজিস্টরা।

জানা যায়, ২০২২ সালে জাপানের টাকেদা ফার্মাসিউটিক্যাল ডেঙ্গুর টিকা ‘কিউডেঙ্গা’ আবিষ্কারের ঘোষণা দেয়। এটি কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে। কিউডেঙ্গা ডেঙ্গুর লক্ষণ প্রতিরোধ করে ৮০ দশমিক ২০ শতাংশ। এবং হাসপাতালে ভর্তি প্রতিরোধ করে ৯০ দশমিক ৪ শতাংশ। ইতোমধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ইউকে, জার্মানি, অস্ট্রিয়া, আইসল্যান্ড, ব্রাজিল, ইন্দোনেশিয়াসহ আরো কিছু দেশ কিউডেঙ্গা ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছে। ৪ বছর বয়স থেকে এই টিকা দেয়া যায়। ৩ মাসের ব্যবধানে দুটি ডোজ শরীরের ত্বকের নিচে দিতে হয়। ইন্দোনেশিয়ায় ২ ডোজ টিকার দাম ৮০ ইউএস ডলার। কিউডেঙ্গা জীবনব্যাপী প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি করে।

এছাড়া ইউএসএর সানোফি-পাস্তুুর ইনকরপোরেশন ‘ডেঙ্গভ্যাক্সিয়া’ নামের একটি টিকা এনেছে। একবার ডেঙ্গু হওয়ার পরই কেবল এই টিকা নেয়া যায়। প্রতিডোজের দাম ১১৩ দশমিক ৭৫ ডলার। সিঙ্গাপুরসহ অনেক দেশে এই টিকা অনুমোদিত। ভারতের প্যানেসিয়া ফার্মাসিউটিক্যাল ও সেরাম ইনস্টিটিউট যৌথভাবে একটি টিকা নিয়ে কাজ করছে। এটি তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়ালের শেষ ধাপে রয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কোনো টিকাকে অনুমোদন দেয়নি। এশিয়ার ডেঙ্গু প্রবণ দেশ ইন্দোনেশিয়ায় কিউডেঙ্গা ভ্যাকসিনের ব্যবহার শুরু হয়েছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App