×

জাতীয়

বিশ্ববাজারে চিনির দাম নিম্নমুখী, প্রভাব নেই দেশের বাজারে

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৫ জুলাই ২০২৩, ০৯:১৭ এএম

বিশ্ববাজারে চিনির দাম নিম্নমুখী, প্রভাব নেই দেশের বাজারে

ছবি: সংগৃহীত

গত ৩ মাস ধরে বৈশ্বিক চিনির দাম কমছে। এ সময়ে টনপ্রতি কমেছে প্রায় প্রায় ১০০ ডলার। তবে বিশ্ববাজারে দাম কমলেও বাংলাদেশে এর কোনো প্রভাব নেই; বরং দাম বেড়েছে একাধিকবার। অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে রেকর্ড ১৪০ টাকায় কিনতে হচ্ছে প্রতি কেজি।

আন্তর্জাতিক বাজার বিশ্লেষক প্রতিষ্ঠান বিজনেস ইনসাইডার ও ট্রেডিং ইকোনমিক্সের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত এপ্রিলে বিশ্ববাজারে প্রতি টন চিনি ৬৪৮ ডলারে উঠেছিল। এরপর মে মাসের মাঝামাঝি এসে চিনির দাম কিছুটা কমে ৬২৪ ডলারে নামে। জুনে এসে হয়েছে ৬২০ ডলার। জুন থেকে জুলাইয়ের বর্তমান সময় পর্যন্ত টানা কমে এখন প্রতি টন চিনি ৫৫৯ ডলারে নেমেছে।

তবে উল্টো চিত্র দেশের বাজারে। কমা দূরের কথা, এই সময়ে চিনির দাম আরো বেড়েছে। ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) বাজারদরের তালিকা অনুযায়ী- ঢাকার বাজারে প্রতি কেজি চিনি বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকা পর্যন্ত। যদিও ক্রেতারা বলছেন, কোথাও কোথাও ১৫০ টাকাও রাখা হচ্ছে খোলা চিনির দাম। আর বাজারে প্যাকেটজাত চিনি এখনো উধাও।

গত কুরবানির ঈদের আগে ২২ জুন থেকে চিনির দাম কেজিতে সর্বোচ্চ ২৫ টাকা করে বাড়িয়েছিলেন মিল মালিকরা। ওই সময় প্রতি কেজি খোলা চিনি ১২০ টাকা এবং প্যাকেট চিনি ১২৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৫০ টাকা নির্ধারণ করা হয়।

ভারত থেকে চিনি রপ্তানি বন্ধ থাকায় বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি চিনি আসছে ব্রাজিল থেকে। ট্রেডিং ইকোনমিক্স বলছে, ব্রাজিলে চলতি মৌসুমে চিনি উৎপাদনে ভালো অগ্রগতির সম্ভাবনায় বিশ্ববাজারে সরবরাহ সংকটের উদ্বেগ কমেছে।

এছাড়া বিশ্ববাজারে তেলের দাম কম থাকায় সুইটনার ক্রাশিংয়ের খরচও কমেছে। ভারতীয় উৎপাদকরাও সরবরাহ বাড়িয়েছে বিশ্ববাজারে। একই সময়ে চিনিজাতীয় অন্য পণ্যের মন্থর বৈশ্বিক চাহিদার কারণে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম চিনি আমদানিকারক দেশ চীন তাদের আমদানি কমিয়েছে। সব মিলে চিনির দাম গত তিনমাসব্যাপী নিম্নমুখী।

বাংলাদেশ ট্রেড এন্ড ট্যারিফ কমিশনের তথ্য অনুযায়ী- দেশে প্রতি বছর ২২ থেকে ২৪ লাখ টন অপরিশোধিত চিনি ও ৫০ হাজার টন পরিশোধিত চিনি আমদানি হয়। অপরিশোধিত চিনি পরিশোধনের পর বাজারে আসে। এদিকে দেশের সরকারি চিনিকলগুলোর উৎপাদন রেকর্ড সর্বনিম্নে নেমেছে। এসব মিলে উৎপাদিত চিনির পরিমাণ মাত্র ৩০ হাজার টনের মতো। যা চাহিদার মাত্র ১ শতাংশ। ফলে চিনি একটি আমদানি নির্ভর পণ্য।

এরপরেও স্থানীয় শিল্প সুরক্ষার কথা বলে চিনি আমদানিতে উচ্চ শুল্ক নির্ধারণে দাম বাড়ছে, এমন দাবি করে সংশ্লিষ্টরা জানান- আন্তর্জাতিক বাজারে চিনির কাঁচামালের দাম বেড়েছে। পাশাপাশি বিভিন্ন রকম শুল্ক সুবিধা তুলে নেয়া হয়েছে। এখন বাজার থেকে এক কেজি চিনি কিনতে ভোক্তাকে ৪২ টাকা শুল্ক দিতে হচ্ছে, যা শুধু স্থানীয় শিল্প সুরক্ষার জন্য। সে কারণেও দাম অনেক বাড়ছে। মূলত শুল্ক কমালেই ভোক্তাপর্যায়ে দাম কমবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App