×

জাতীয়

ঢাকায় তৎপর ইউরোপ ও মার্কিন প্রতিনিধিদল

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১২ জুলাই ২০২৩, ১২:২০ এএম

ঢাকায় তৎপর ইউরোপ ও মার্কিন প্রতিনিধিদল

নির্বাচনের রোডম্যাপ জানতে চাইল ইইউ

জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাস ছয়েক বাকি। এবারো নির্বাচনকে সামনে রেখে ঢাকায় তৎপর বিদেশিরা। এর মধ্যে মার্কিন ও ইইউয়ের তৎপরতা দৃশ্যমান হয়েছে। কিছুটা তৎপরতা আছে ভারতকে নিয়েও। এরই মধ্যে নির্বাচনকে বাধা দিলে ভিসা বাতিল হবে হুমকি দিয়ে রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র।

এমন পরিস্থিতির মধ্যে গতকাল মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের বেসামরিক নিরাপত্তা, গণতন্ত্র ও মানবাধিকারবিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি উজরা জেয়ার নেতৃত্বে প্রতিনিধি দল চার দিনের সফরে ঢাকায় পৌঁছেছে। ইইউ প্রতিনিধিদল প্রাক-নির্বাচনী পরিবেশ পর্যালোচনায় আগে থেকেই ১৬ দিনের জন্য ঢাকায় অবস্থান করছে। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপের দেশগুলোর সরকার এবং রাজনীতিকদের এসব তৎপরতাকে নব্য ঔপনেবিশকবাদ, আধিপত্যবাদ এবং হস্তক্ষেপমূলক বলছে রাশিয়া ও চীন। যেন বাংলাদেশের আওয়ামী লীগ-বিএনপির মতো পরাশক্তিগুলোও পাল্টাপাল্টি অবস্থান নিচ্ছে।

সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, এসব দেশগুলোর মুখে মানবাধিকার, গণতন্ত্র নিয়ে কথা বললেও আড়ালে ভূ-রাজনীতির কোনো সমীকরণ নিয়ে চলছে দরকষাকষি? আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বাংলাদেশের দুই রাজনৈতিক দলের বিরোধ এবং নির্বাচনী দুর্বলতাকে কাজে লাগিয়ে এসব পরাশক্তির লক্ষ্য হচ্ছে ইন্দো-প্যাসিফিকে নিজেদের শক্তি কায়েম করা। আসন্ন এ জাতীয় নির্বাচনে পর্যবেক্ষক পাঠানোর সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য বাংলাদেশ সফর করছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ছয় সদস্যের অনুসন্ধানী অগ্রগামী দল। গতকাল ইইউএর প্রতিনিধি দলটি, নির্বাচন কমিশন, এটর্নি জেনারেল ও এনবিআরের সঙ্গে বৈঠক করেছে। এর আগে, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও ঢাকার ইইউ মিশন জানিয়েছে, দলটি ঢাকায় আগামী ২৩ জুলাই পর্যন্ত ঢাকায় থাকবে। সফরে নিবার্চন পর্যবেক্ষণ মিশনের কর্মপরিধি, পরিকল্পনা, বাজেট, লজিস্টিক্স ও নিরাপত্তা প্রভৃতি বিষয় মূল্যায়ন করবে এই মিশন।

উজরা জিয়ার নেতৃত্বে মার্কিন প্রতিনিধিদল ঢাকায় : যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের নাগরিক নিরাপত্তা, মানবাধিকার ও গণতন্ত্র বিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি উজরা জিয়ার নেতৃত্বে মার্কিন প্রতিনিধিদল চার দিনের সফরে ঢাকায় এসেছে। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দিল্লি থেকে তারা ঢাকায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছেন। বিমানবন্দরে তাদের স্বাগত জানিয়েছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মাসুদ বিন মোমেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন উজরা জেয়ার সফরসঙ্গী মধ্য ও দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক সহকারী মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু এবং ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস।

বাংলাদেশের জন্য নতুন মার্কিন ভিসানীতি ঘোষণার পর এবারই যুক্তরাষ্ট্র থেকে কোনো জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা ঢাকা সফরে এলেন। প্রতিনিধি দলটি এর আগে দিল্লিতে তিন দিনের সফর সম্পন্ন করে। চার দিনের সফরে সরকারের সঙ্গে মার্কিন প্রতিনিধিদল বৈঠকে জানতে চাইবে- কীভাবে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠান করা হবে। সেইসঙ্গে দুই দেশের আলোচনায় গুরুত্বপাবে বাণিজ্য, রোহিঙ্গা সংকট, শ্রম ও মানবাধিকার। গত ৭ জুলাই মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, উজরা জেয়া বাংলাদেশ সফরের সময়ে রোহিঙ্গা সংকট, শ্রম সংকট, মানবাধিকার, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন এবং মানবপাচার নিয়ে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করবে। আজ বুধবার প্রতিনিধিদলটি রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করবে। সেখানেই সারা দিন থেকে প্রতিনিধি দলটি রাতে ঢাকা ফেরত আসবে। কাল বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ঢাকায় ধারাবাহিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। এদিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এবং পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে বৈঠকের কথা রয়েছে। এ দিন উজরা জেয়া শ্রমিক ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গেও বৈঠক করবেন। আগামী শুক্রবার প্রতিনিধি দলটির বাংলাদেশ ছাড়ার কথা রয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের নেয়া উদ্যোগগুলো বৈঠকে তুলে ধরা হবে। র‌্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার বিষয়ে আলোচনা উঠলে আগামী নির্বাচন সহিংসতামুক্ত রাখতে র‌্যাবের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরা হতে পারে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলেছেন, শ্রম ইস্যুতে বাংলাদেশ তার অগ্রগতি জানাবে। যুক্তরাষ্ট্র এখনো এই অগ্রগতিকে স্বীকৃতি না দেয়ায় বাংলাদেশ তার হতাশার কথাও জানাবে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনায় বিশেষ গুরুত্ব পেতে পারে রোহিঙ্গা শিবিরের নিরাপত্তা এবং নির্বাচনের সময় শান্তি, স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তার বিষয়টি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও আইনমন্ত্রী দুজনের সঙ্গে আলোচনায়ই গুরুত্ব পেতে পারে মানবাধিকার, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও আগামী নির্বাচন প্রসঙ্গ। নির্বাচন কমিশনার নিয়োগে আইন প্রণয়নসহ সরকারের নেয়া উদ্যোগগুলো বৈঠকে তুলে ধরার প্রস্তুতি রয়েছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপব্যবহার রোধ ও আইন সংশোধনের উদ্যোগও তুলে ধরা হতে পারে বৈঠকে। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি খাতবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের সঙ্গে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা হবে। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে চায়। এছাড়া বঙ্গোপসাগরে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে মার্কিন কোম্পানি এক্সন মবিলের জোরালো আগ্রহ রয়েছে। নাম না প্রকাশের শর্তে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থা নিয়ে কোনো কথা বলবে না। তারা শুধু জানতে চাইবে নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু করার বিষয়ে সরকারের পরিকল্পনা কী। এছাড়া মানবাধিকার বিশেষ করে শ্রম অধিকার গুরুত্ব পাবে উজরা জেয়ার বৈঠকে। স¤প্রতি শহিদুল ইসলাম নামে এক শ্রমিকের হত্যার বিষয়ে ইতোমধ্যে নিন্দা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের শ্রম দপ্তর। এছাড়া শ্রমিকদের নিয়ে বৈশ্বিক অধিকার সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান একদম নিচে। ফলে এ বিষয়গুলোতে পরিস্থিতি উন্নয়নে আলোচনা করবে দুই দেশ। বাংলাদেশের শ্রম অধিকার, পরিবেশ ও মান নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ এক যুগের ওপর। সংসদের বাজেট অধিবেশনে শ্রম আইন সংশোধন করার প্রতিশ্রæতি দেয়া হয়েছিল ঢাকার পক্ষ থেকে। সেই সঙ্গে শ্রম নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগগুলো দূর করার প্রতিশ্রæতি দেয়া হয়েছে। তবে বিষয়গুলোতে দৃশ্যমান অগ্রগতি না হওয়ার কিছুটা অসন্তুষ্ট যুক্তরাষ্ট্র। তারপরও ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট ফাইন্যান্স করপোরেশনের অর্থায়ন বা ডিএফসি অর্থায়নে বাংলাদেশকে যুক্ত করা নিয়ে আলোচনা করবে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র। যদিও ডিএফসি অর্থায়ন পাওয়ার পূর্বশর্ত বাংলাদেশ এখনো পূরণ করতে পারেনি। এ বৈঠকে বাংলাদেশের সুযোগ রয়েছে ডিএফসি অর্থায়ন নিশ্চিত করার বিষয়ে। বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের খাতিরে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকেই ডিএফসি অর্থায়ন গ্রহণের প্রস্তাব দেয়া হবে। উজরা জেয়ার সফর নিয়ে গত ৬ জুলাই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেছিলেন, মার্কিন প্রতিনিধিদলের সফর শুধু নির্বাচন কেন্দ্রিক নয়। মার্কিন প্রতিনিধি দলের সঙ্গে মানবাধিকার, শ্রম অধিকার, রোহিঙ্গা, বাণিজ্যসহ সম্পর্কের অন্যান্য বিষয়েও আলোচনা হবে।

নির্বাচন কমিশনের রোডম্যাপ জানতে চাইল ইইউ প্রতিনিধিদল : নির্বাচন কমিশনের কাছে জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি সম্পর্কে জানতে চেয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিদল। সেই সঙ্গে নির্বাচন কমিশন ঘোষিত রোডম্যাপ সম্পর্কেও জানতে আগ্রহী তারা। মঙ্গলবার সকালে নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল এবং আরো দুই নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে বৈঠক করেন সফররত ইইউ প্রতিনিধিদলের সদস্যরা। বৈঠকে বাংলাদেশে ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি এবং প্রতিনিধিদলের প্রধান চ্যালেরি চ্যালেরি রিকার্ডোসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকের পর প্রধান নির্বাচন কমিশনারের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হননি তিনি। পরে নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ বৈঠকের বিভিন্ন দিক নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। অশোক দেবনাথ জানান, নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে দেখা করে আগের ভোটগুলো নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিদলের সদস্যরা সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। নির্বাচনে পর্যবেক্ষক পাঠাতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন তারা। তবে রাজনৈতিক দলগুলোর অংশগ্রহণ নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। যদিও গেল সংসদ নির্বাচনে উল্লেখযোগ্য কোনো সংস্থাই কোনো পর্যবেক্ষক পাঠায়নি। তবে, এবার প্রেক্ষাপট ভিন্ন। নির্বাচনের মাস পাঁচেক আগে থেকেই তোড়জোড় শুরু করে বিদেশি সংস্থাগুলো। সেই ধারাবাহিকতায় নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রাক-নির্বাচনী প্রতিনিধি দল দেখা করে। ঘণ্টাখানেক বৈঠক শেষে অনানুষ্ঠানিক ব্রিফিংয়ে প্রতিনিধিদলের প্রধান চ্যালেরি রিকার্ডো জানান, এখনই কোনো মন্তব্য করতে রাজি নন তারা। তবে আগামী নির্বাচনের প্রস্তুতি সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন তারা। দলটির সঙ্গে কমিশনের আবারো বৈঠক হবে বলে জানান এই সচিব। এর আগে গতকাল সকালে ইলেকশন মনিটরিং ফোরামের সঙ্গে বৈঠক করে ইউরোপীয় ইউনিয়নের এই প্রতিনিধিদল।

পরিস্থিতি মূল্যায়নের পর পর্যবেক্ষক পাঠানোর সিদ্ধান্ত : নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠকের পর বাংলাদেশ সফরে আসা ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রাক-নির্বাচনী অনুসন্ধানী দলের প্রধান বলেছেন, ভোটে তারা পর্যবেক্ষক পাঠাবেন কিনা সে সিদ্ধান্ত হবে পরে। ইসি কর্মকর্তাদের সঙ্গে ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকের পর প্রতিনিধিদলের প্রধান চেলেরি রিকার্ডো বলেন, বাংলাদেশ সরকারের আমন্ত্রণে আমরা এখানে এসেছি প্রাক নির্বাচনী অবস্থা পর্যবেক্ষণে। দুই সপ্তাহ থাকব আমরা। নির্বাচনী পূর্ববর্তী অবস্থা জানার জন্য এসেছি। তিনি জানান, বাংলাদেশে দুই সপ্তাহের সফরের পর ইউরোপীয় জোটের পররাষ্ট্রবিষয়ক হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ জোসেফ বোরেলের কাছে প্রতিবেদন জমা দেবেন তারা। এরপর জোসেফ সিদ্ধান্ত নিবেন, বাংলাদেশে নির্বাচনী পর্যবেক্ষক পাঠাবেন কিনা। গতকাল সকালে নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল এবং আরো দুই নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে বৈঠক করেন ইইউ প্রতিনিধিদলের সদস্যরা।

অ্যাটর্নি জেনারেলের সঙ্গে ইইউ প্রতিনিধি দলের বৈঠক : অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিনের সঙ্গে বৈঠক করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রাক-নির্বাচনী অনুসন্ধানী দল। গতকাল দুপুরে সুপ্রিম কোর্টের অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ে চারজনের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে ঘণ্টাব্যাপী এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ইইউ প্রতিনিধি দলের নেতা চেলেরি রিকার্ডোসহ দলের সদস্যদের সঙ্গে বৈঠকে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এস এম মুনীর, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মোহাম্মদ মোরশেদ ও অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ মেহেদী হাছান চৌধুরী। বৈঠক শেষে ইইউ প্রতিনিধি দল কথা না বললেও অ্যাটর্নি জেনারেল জানান, বাংলাদেশের ফৌজদারি, মানবাধিকারবিষয়ক ও নির্বাচনী আইন নিয়ে কথা হয়েছে। এর আগে, এই প্রতিনিধিদল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সঙ্গে বৈঠকে বসেন। এ সময় নির্বাচনের সময়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পর্যবেক্ষকদের নিরাপত্তা নিয়ে আলোচনা হয়। মানবধিকার কমিশন, নির্বাচন কমিশন, ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে বৈঠকের পর সুপ্রিম কোর্টে অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়ে যান তারা।

ইইউ প্রতিনিধিদলের সামনে বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের বিক্ষোভ : অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিনের সঙ্গে বৈঠক করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রাক নির্বাচন পর্যবেক্ষক প্রতিনিধিদল। তার কার্যালয়ে বৈঠকের সময় বাইরে বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা বিক্ষোভ করেন। এ সময় তারা বিভিন্ন স্লোগানও দেন। ইইউ প্রতিনিধি দল অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয় ছেড়ে যাওয়ার সময়ও তাদের গাড়ির সামনে স্লোগান দেন বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা। এ সময় ‘উই ওয়ান্ট ডেমোক্র্যাসি, ‘উই ওয়ান্ট ভোটিং রাইটস, ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস, ‘উই ওয়ান্ট কেয়ারটেকার’সহ বিভিন্ন স্লোগান দেয়া হয়। বিক্ষোভে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, আইনবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল ও জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সুপ্রিম কোর্ট ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক গাজী কামরুল ইসলামসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।

নির্বাচন ঘিরে মার্কিন দূতাবাসের সতর্কতা জারি : বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ঢাকাসহ দেশের বড় বড় শহরে নিজ দেশের নাগরিকদের সতর্কতার সঙ্গে চলাফেরার পরামর্শ দিয়েছে মার্কিন দূতাবাস। মঙ্গলবার দুপুরের পর ঢাকার মার্কিন দূতাবাসের ওয়েবসাইট থেকে এই সতর্কতা জারি করা হয়েছে। সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, প্রত্যাশা অনুযায়ী বাংলাদেশের সাধারণ নির্বাচন ২০২৪ সালের জানুয়ারি কিংবা এর মধ্যে অনুষ্ঠিত হবে। এজন্য দেশজুড়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সমাবেশ এবং অন্যান্য নির্বাচন-সম্পর্কিত কার্যক্রম ইতোমধ্যে শুরু হয়ে গেছে। নির্বাচন ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে রাজনৈতিক সমাবেশ এবং বিক্ষোভের মাত্রাও তীব্র থেকে তীব্রতর হতে পারে। এই অবস্থায় মার্কিন নাগরিকদের সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত বলে পরামর্শ দেয়া হয়। মার্কিন নাগরিকদের উদ্দেশে সতর্কবার্তায় বলা হয়, মনে রাখা উচিত-শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভগুলো সংঘর্ষ ও সহিংসতায় পরিণত হতে পারে। আপনাকে বিক্ষোভ এড়াতে হবে এবং কোনো বড় সমাবেশের আশপাশে সতর্ক অবস্থানে থাকতে হবে। মার্কিন নাগরিকদের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা পরিকল্পনা পর্যালোচনা করা ছাড়াও স্থানীয় ঘটনাসহ আশপাশের বিষয়ে সচেতন থাকতে বলা হয়েছে বার্তায়। এছাড়া দূতাবাসের পরবর্তী আপডেটগুলোতেও নজর রাখার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App