×

জাতীয়

বিদেশিদের দেখাতে বিএনপির শোডাউন

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১২ জুলাই ২০২৩, ১২:১০ এএম

বিদেশিদের দেখাতে বিএনপির শোডাউন

বিএনপি। ফাইল ছবি

পর্যায়ক্রমে দেবে কঠিন কর্মসূচি

রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির সমাবেশ আজ বুধবার। দুপুর ২টায় এ সমাবেশ থেকেই সরকার পতনের এক দফার কর্মসূচি আসবে। সমাবেশ সফল করতে গত কয়েকদিন ধরেই টানা মতবিনিময় করেছেন দলটির মহাসচিবসহ শীর্ষ নেতারা। একদিকে দলের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের সংগঠিত করতে হয়েছে যৌথসভা। অন্যদিকে আন্দোলন সহযোগী রাজনৈতিক দলগুলোকে মাঠে নামাতে ম্যারাথন বৈঠক করেছে লিয়াজোঁ কমিটি। এসব বৈঠক থেকেই যুগপৎ আন্দোলনের কর্মসূচি নির্ধারিত হয়েছে। যা আজ ঘোষণা করা হবে। সংশ্লিষ্ট সূত্র এসব তথ্য জানিয়েছে।

সূত্র জানায়, গত ৮ জুলাই দলীয় নেতাদের ভার্চুয়াল বৈঠকে অংশ নিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান হঠাৎ করেই ১২ জুলাই নয়াপল্টনে সমাবেশ করার ঘোষণা দেন। আকস্মিক এমন ঘোষণায় বৈঠকে উপস্থিত অনেক নেতাই একে অপরের দিকে তাকান। বিষয়টি আন্দাজ করতে না পেরে কৌতুহলী জিজ্ঞাসা অনেকের। এতো অল্প সময়ে কী করে বড় সমাবেশ করা যাবে? এমন প্রশ্নের জবাবে রাজধানীসহ আশপাশের জেলা ও মহানগরীগুলোকে টার্গেট করার নির্দেশ দেন তারেক রহমান। একই সঙ্গে স্মরণকালের সর্বোচ্চ লোক সমাগমের টার্গেট নিয়ে আন্দোলন সহযোগী ৩৬ দলকে সম্পৃক্ত করার পরামর্শ দেন তিনি।

হঠাৎ করে কেন এত অল্প সময়ের নোটিসে বড় সমাবেশের সিদ্ধান্ত। দলীয় কর্মীদের এমন প্রশ্নে তাদের জানানো হয়েছে এটাই মোক্ষম সময়। সবচেয়ে নিরাপদ পরিস্থিতি বিরাজ করছে রাজধানী ঢাকায়। একদিকে গত কয়েকদিন ধরেই ঢাকায় অবস্থান করছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধি দল। গতকাল মঙ্গলবার ঢাকায় এসেছে মার্কিন প্রতিনিধিদল। তাদের দেখানো যাবে বিএনপির সাংগঠনিক সামর্থ্য। তাদের উপস্থিতিতে সরকার পতনের একদফা ঘোষণা হলে তারাও বিষয়টি নোটিসে নেবে। তারা বিষয়টি নিয়ে সরকারের বিভিন্ন ফোরামে আলোচনাও করতে পারে। এমন সুযোগ হাতছাড়া করতে চায়নি বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্ব।

ঢাকার সমাবেশ থেকে সরকার পতনের একদফা আন্দোলন ও নতুন কর্মসূচিতে কি থাকছে তা দলীয় নেতারা প্রকাশ করতে চান না। তবে বিভিন্ন সূত্র থেকে প্রাপ্ত তথ্যমতে, চলতি জুলাই থেকে ধারাবাহিক কর্মসূচি থাকবে। এর মধ্যে, আগামী শুক্রবার ঢাকাজুড়ে মানববন্ধন বা মানবপ্রাচীর অথবা বিক্ষোভের মধ্য দিয়ে একদফার আন্দোলনের সূচনা হতে পারে। পর্যায়ক্রমে পদযাত্রা, অবস্থান ধর্মঘট, সমাবেশের মতো কর্মসূচি ঘুরেফিরে আসতে পারে। আন্দোলনের চূড়ান্ত পর্যায়ে আসবে ঘেরাওয়ের কর্মসূচি। এতে গণভবন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, সচিবালয় ও জাতীয় সংসদ ঘেরাওয়ের কর্মসূচি থাকতে পারে। তবে হরতাল জালাও পোড়াওয়ের মতো কঠোর কর্মসূচির পরিকল্পনা আপাতত নেই।

সূত্র জানায়, এতদিন ঢাকার বাইরে কর্মসূচি হলেও একদফা আন্দোলনের মূল কেন্দ্রবিন্দু হবে রাজধানী ঢাকা। সব কর্মসূচি পালন হবে যুগপৎভাবে। শরিকরা যার যার প্ল্যাটফর্ম থেকে একদফার আন্দোলন ও নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করবে। গণতন্ত্র মঞ্চ আজ বিকাল ৪টায় জাতীয় প্রেস ক্লাব, ১২ দলীয় জোট ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট দুপুর ১২টায় প্রেস ক্লাবের সামনের সমাবেশ থেকে, এলডিপি বিকাল ৫টায় দলীয় কার্যালয়ে, গণফোরাম আরামবাগের নটরডেম কলেজের বিপরীতে, গণঅধিকার পরিষদ (নূর) বিকাল ৩টায় পল্টনের দলীয় কার্যালয়ের সামনে, গণঅধিকার পরিষদ (রেজা কিবরিয়া) বিকাল ৪টায় প্রেস ক্লাবে, সমমনা গণতান্ত্রিক পেশাজীবী জোট সকাল সাড়ে ১০টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবে, গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য দুপুর ১২টায় প্রেস ক্লাবে এবং লেবার পার্টি বিকাল ৩টায় নয়াপল্টনের দলীয় কার্যালয় থেকে সরকার পতনের একদফা আন্দোলনের চূড়ান্ত কর্মসূচি ঘোষণা করবে। যুগপৎভাবে বিএনপির সঙ্গে কর্মসূচি পালন করলেও আজ কোনো কর্মসূচি নেই দীর্ঘদিনের মিত্র বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর।

এদিকে আজকের সমাবেশ সফল করতে গতকাল পুরো রাজধানীজুড়ে চলেছে মাইকিং। নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে দীর্ঘ সড়কে বিজয়নগর-কাকরাইল থেকে শুরু করে আরামবাগ পুলিশ বক্স পর্যন্ত ব্যাপক মানুষের সমাগমের প্রস্তুতি নিয়েছে মহানগর বিএনপি। উত্তর-দক্ষিণ মহানগরের নেতারা সব অঙ্গসংগঠনগুলোকে নিয়ে সিরিজ বৈঠক করেছে।

এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান ভোরের কাগজকে বলেন, সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিয়েছি। আশা করছি, সমাবেশ জনসমুদ্রে রূপ নেবে। সমাবেশে থেকে যে কর্মসূচি ঘোষণা হবে তা বাস্তবায়ন হলে জনগণ ভোটাধিকার ফিরে পাবে। সমাবেশ শান্তিপূর্ণ করতে অনেকগুলো স্বেচ্ছাসেবক টিম গঠন করেছি। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কাছে সহযোগিতা চেয়েছি।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, আমরা একটা যৌথ ঘোষণা দেব। সেই যৌথ ঘোষণা দেয়ার জন্য যুগপৎ আন্দোলনের সঙ্গে যারা আছে সবাই যার যার অবস্থান থেকে একই সময় একই ঘোষণা দেবে। আমরা মনে করি, এ রকম একটি ঘোষণার মধ্য দিয়ে জাতি আশান্বিত হবে, উজ্জীবিত হবে। আন্দোলন আরো শক্তিশালী-বেগবান হয়ে এই সরকারের পতন ঘটাতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App